1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভূমিকম্পের ফলে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি৷ আধুনিক যুগে ভূমিকম্প প্রতিরোধক নির্মাণকাজের মাধ্যমে কাঠামোকে সেই ঝুঁকি থেকে অনেকটাই রেহাই দেওয়া যায়৷

https://p.dw.com/p/3YHY5
ছবি: Reuters/Stringer

ভারতের রুরকি শহরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ভূমিকম্প প্রকৌশল বিভাগে বালুর আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়৷ যে কোনো নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভিত্তি অত্যন্ত জরুরি৷ সেটি নিশ্চিত করতে নির্মাণের আগে ভালো করে সেখানকার মাটি পরীক্ষা করতে হয়৷

মূলত দুই ধরনের মাটি রয়েছে – কাদামাটি ও বালু৷ মাটিতে বালু বেশি থাকলে ভূমিকম্পের সময় নীচের পানি উপরে উঠে আসে৷ এই প্রক্রিয়াকে লিকুয়িফ্যাকশন বা দ্রবণ বলা হয়৷ প্রোফেসর বি কে মাহেশ্বরী তাঁর ছাত্রদের বিষয়টি হাতেনাতে দেখাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘বিভিন্ন স্তরে মাটির আচরণ ভিন্ন হয়৷ তাছাড়া মাটির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ ঘটনা দেখা যায়৷ যেমন, দ্রবণ৷ এই প্রক্রিয়ার সময় মাটি তরলের মতো আচরণ করে৷ মাটির বৈশিষ্ট্য অক্ষত না থাকলে ভীতও টিকবে না৷ তখন মাটির উপর তৈরি কাঠামো ভেঙে পড়বে৷ তাই সবার আগে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভীতের ডিজাইন করতে হবে৷ তারপর ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো তৈরি করা যাবে৷’’

ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ বা প্রতিরোধ – কোনোটাই করা যায় না৷ আমরা বড়জোর ক্ষয়ক্ষতি যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করতে পারি৷ তাই আমাদের ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো তৈরি করতে হবে৷ গত দুই দশকে ভারতে বেশ কয়েকটি মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে৷ কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷

ভূমিকম্প প্রতিরোধে সক্ষম ভবন বানাচ্ছে ভারত

ভারতের উত্তরাংশের একটা বড় অংশ জুড়ে ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে৷ এটিকে ‘সিসমিক জোন ফোর’ বলা হয়৷ অর্থাৎ, সেখানে ক্ষয়ক্ষতির বিশাল ঝুঁকি রয়েছে৷ প্রোফেসর ওয়াই সিং সেই এলাকার ঝুঁকির বিস্তারিত মূল্যায়ন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে চারটি জোন রয়েছে৷ হিমালয় থেকে দিল্লি পর্যন্ত এলাকাকে ‘জোন ফোর' বলা হয়৷ ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকির নিরিখে যার স্থান দ্বিতীয়৷ গুজরাটে রয়েছে জোন ফোর ও ফাইভ৷ বিশাল এলাকা জুড়ে মারাত্মক ভূমিকম্প হতে পারে৷ আমার মতে, দেশের কোনো প্রান্তই ভূমিকম্পের ঝুঁকিমুক্ত নয়৷ তাই সব জায়গায়ই ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো নির্মাণ করা উচিত৷’’

এমন ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো কম্পনের সময় ঝাঁকুনি সত্ত্বেও ভেঙে পড়ে না৷ যে কোনো ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো শক্তি ও নমনীয়তা৷ উচ্চ মানের কংক্রিট ব্যবহার করে কাঠামোকে শক্তিশালী করা যায়৷ কাঠামো আরো মজবুত করতে যেসব অংশ প্রস্তুত করা হয়, সেগুলি সঠিক জায়গায় রাখলে নমনীয়তাও নিশ্চিত করা যায়৷ নির্মাণ বিশেষজ্ঞ অমিত শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সাধারণত নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি ইস্পাত এখানে ব্যবহার করা হয়৷ তাই সেটি যথেষ্ট ওজন নেবার ক্ষমতা রাখে৷ কিন্তু কখনো কখনো ভালো কংক্রিট তৈরির কাজ সহজ হয় না৷ তাই কংক্রিট তৈরির ক্ষেত্রে মানের উপর নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি৷ ভূমিকম্পের সময়ে সেটির বাড়তি চাপ সামলানোর ক্ষমতা থাকতে হবে৷ অর্থাৎ, ভালো কংক্রিট কাঠামো নিরাপদ রাখবে৷’’

দিল্লির কাছে নয়ডা শহরে ‘ক্লিও কাউন্টি' নামের আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা সব রকম আধুনিক পরিষেবা ভোগ করতে পারেন৷ সেইসঙ্গে উঁচু ভবনগুলি ভূমিকম্প প্রতিরোধ ডিজাইন অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে৷

নিরাপদ বাসার চাহিদা আমাদের সবারই রয়েছে৷ তাই ভূমিকম্প প্রতিরোধক নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি৷

অশোক কুমার/এসবি