ভালোবাসার সম্পর্কে ‘বিশ্বাস’ কি হারিয়ে যাচ্ছে?
পরকীয়া প্রেম নতুন বিষয় নয়৷ কিন্তু দাম্পত্য জীবনে যদি মিথ্যা আর প্রতারণা ঢুকে সংসার বা সমাজে সমস্যা তৈরি করে, তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই ভাবা উচিত৷ এ কথা মনে করেন জার্মানির পরিবার ও জীবনসঙ্গী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ৷
পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার কারণ
বিবাহিত নারী বা পুরুষের কাউকে ভালো লাগতে পারে বা তাঁরা কারও প্রেমেও পড়তে পারেন৷ বিয়ের পর প্রেমে পড়া এবং ভালোলাগার মানুষটির সাথে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করাই পরকীয়া৷ সাধারণত ধরে নেয়া হয়, তাঁরাই এই সম্পর্ক তৈরি করে যাঁরা দাম্পত্য জীবনে পুরোপুরি সুখি নয় বা যাঁদের সম্পর্কে সমস্যা রয়েছে৷ তবে এর ব্যতিক্রমও হয়ে থাকে!
কে দায়ী?
দাম্পত্য জীবনে অশান্তির একটি বড় কারণ হচ্ছে পরকীয়া প্রেম৷ এ কারণে বহু সংসার ভেঙে যায়৷ তবে এ ব্যাপারে নারী বা পুরুষ, কে দায়ী তা বলা মুসকিল৷ একজন পার্টনার পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে গেলে, অন্যজন তাঁর প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যও অনেক সময় নিজেকে অন্য আরেকজনের সাথে জড়িয়ে ফেলেন৷
সহকর্মীর সাথে পরকীয়া প্রেম
দিনের বেশিরভাগ সময়ই মানুষ কর্মস্থলে কাটায়৷ সে কারণে নিজের নানা সমস্যার কথা অনেকেই সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করে থাকেন৷ এ সবের মধ্য দিয়ে প্রথমে সহানুভূতি এবং পরে পরকীয়া প্রেমের জন্ম হতে পারে৷ জার্মানিতে এ রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে৷
অফিসিয়াল ট্যুর
কোনো কোনো সহকর্মীর মধ্যেই হালকা সম্পর্ক থাকলে অফিসিয়াল ট্যুরে গিয়ে সে সম্পর্ক গাঢ় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ এ ধরনের ঘটনা কিন্তু আপাত সুখি দম্পতিদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে৷ অনেকের ক্ষেত্রে পরে চাইলেও সে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়৷
ক্ষমা করা কি সম্ভব?
১০-১৫ বছর সংসার করার পর যখন কেউ পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে যান, তখন স্ত্রী বা স্বামী তা জেনে গেলে তাঁরা ক্ষমা চান এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবকিছু ভুলে গিয়ে আবারো আগের মতো হতে চান৷ অনেকে মুখে ক্ষমা করে দিলেও, দু’জনের ভেতরে সন্দেহটা কিন্তু থেকেই যায়৷
ক্ষণিকের আনন্দ
বিবাহিত নারী বা পুরুষ হঠাৎ কোনো দূর্বল মুহূর্তে অন্য কারও সাথে রাত কাটানোর সুযোগ নিয়ে থাকেন৷ এ রকম ঘটনা পুরুষদের ক্ষেত্রেই নাকি বেশি ঘটে, বিশেষ করে স্ত্রীর প্রিয় বান্ধবীর সাথে৷ শুধুমাত্র এক রাতের ব্যাপার হলে অনেক স্ত্রীই কিন্তু স্বামীকে ক্ষমা করে দেন৷ জানান পরিবার ও জীবনসঙ্গী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এরিক হেগমান৷
যাঁদের ভোগান্তি
মা-বাবার পরকীয়া প্রেমে কষ্ট পায় আসলে সন্তানরা, বিশেষ করে তাদের বয়স যদি কম হয়৷ হঠাৎ করে মা-বাবার মধ্যকার সম্পর্ক বা অন্যরকম আচরণ শিশুদের আতঙ্কিত করে৷ শিশুমনে পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব, যা হয়ত সারাজীবন থেকে যায়৷
স্যোশাল মিডিয়া
আধুনিক বিশ্বে স্যোশাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও যে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার একটা কারণ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে জার্মানিতে কিন্তু পরকীয়া প্রেমে স্যোশাল মিডিয়ার ভূমিকা তেমন বড় নয়৷
কথা বলুন, কথা বলুন আর কথা বলুন
ভালোবাসার সম্পর্কে যখন চিড় ধরতে বা দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে, তখনই নিজের অসন্তোষ বা ভালো ‘না’ লাগার বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলুন৷ প্রয়োজনে শতবার৷ কারণ পরকীয়া প্রেমে যে শুধু একটি পরিবারই ভেঙে যায়, তা নয়৷ এতে সামাজিকভাবেও নানা জটিলতা দেখা দেয়৷ তাই খোলাখুলি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ জার্মান বিশেষজ্ঞ এরিক হেগমানের৷