1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে দাবানল থেকে মুক্তির চেষ্টা

২ নভেম্বর ২০২২

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বিভিন্ন বনে প্রতিবছর আগুন লাগে৷ নেভাতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়৷ আগুন লাগার পরিমাণ কমাতে বনে চ্যাপ্টা পাতার গাছ লাগানো হচ্ছে৷ এতে দাবানল ছাড়াও বন্যপ্রাণীর হাত থেকে স্থানীয়দের ফসল রক্ষা পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4Iyl8
DW Eco India
ছবি: DW

উত্তর ভারতে উত্তরাখণ্ডে সবচেয়ে বেশি বন রয়েছে৷ এসব বনে পাইন গাছের সংখ্যা বেশি৷ আর পাইন গাছে খুব সহজে আগুন ধরে৷

স্থানীয় মানুষ আর বনের নিরাপত্তা কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন৷ কিন্তু তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় ও অন্য ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নেভাতে গিয়ে প্রতিবছর অনেকে প্রাণ হারান৷

বনবিভাগের নিরাপত্তা কর্মী মোহন সিং বিশত বলেন, ‘‘বনে আগুন নেভানোর কাজ খুব ঝুঁকিপূর্ণ৷ কেউ যদি পিছলে যায় বা পড়ে যায় তাহলে অনেক বড় বিপদ হতে পারে৷ কারণ জায়গাটা পাহাড়ি, সমতল নয়৷''

ভারতে বনে যত আগুন লাগে তার ৯৫ শতাংশের বেশির কারণ মানুষ৷ অসতর্কতা, যেমন সিগারেট কিংবা ম্যাচের কাঠি ছুড়ে ফেলার কারণে আগুন ধরতে পারে৷ এছাড়া তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাওয়াও একটি কারণ৷

গত দুই দশকে উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আগুন লাগার পরিমাণ ও তীব্রতা বেড়েছে৷ সাধারণত মধ্য ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়ে জুন পর্যন্ত সময়ে আগুন লাগে৷

দাবানলের কারণে প্রতিবছর পরিবেশে দুই লাখ টনের বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে, যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে৷

চন্দন সিং নায়াল একজন পরিবেশকর্মী৷ তিনি বনে গাছের বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছেন৷ এক্ষেত্রে স্থানীয় জাতের চ্যাপ্টা পাতার গাছ বেছে নিচ্ছেন তিনি৷

২৭ বছর বয়সি নায়াল মনে করছেন, এর মাধ্যমে দাবানল সমস্যার একটা প্রাকৃতিক সমাধান মিলতে পারে৷ এছাড়া বনে বিভিন্ন জাতের গাছ থাকলে বন্যপ্রাণী ও মানুষের মধ্যে সংঘাতও কমতে পারে৷

দাবানলের বিরুদ্ধে ভারত

নায়াল বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণী ও পাখিরা যদি বনেই পর্যাপ্ত খাবার পায় তাহলে তারা আমাদের খেতখামারে এসে ফসল নষ্ট করবে না৷ আমাদের মূল লক্ষ্য ফসল বাঁচানো, যার উপর আমরা নির্ভর করি৷''

গত পাঁচ বছরে নায়াল ও তার দল ৫২ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়েছে৷ এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ গাছ আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে৷ তাদের তালিকায় পাইন গাছ নেই৷ আছে আখরোট, পীচ, নাশপাতি, চেস্টনাটসহ স্থানীয় জাতের গাছ৷ স্থানীয়রা তাদের বাপ-দাদার জ্ঞান কাজে লাগান৷

চামা গ্রামের বাসিন্দা গোপাল সিং নায়াল বলেন, ‘‘বনে চ্যাপ্টা পাতার গাছ থাকলে আগুন লাগার সম্ভাবনা কম থাকে৷ কারণ চ্যাপ্টা পাতার গাছ পাইন গাছের চেয়ে বেশি জলকণা ধরে রাখে৷ এই জলকণার কারণে আগুন কম লাগে৷ আর লাগলেও তা সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়৷ কিন্তু পাইন বনের ক্ষেত্রে সেটা প্রায় অসম্ভব৷ বনবিভাগও পাইন বনের আগুন নেভাতে হিমশিম খায়৷''

ভবিষ্যতের জন্য বন তৈরি করতে সবসময় যত্ন ও দেখাশোনার প্রয়োজন হয়৷ গরমকালে একবার আগুন লাগলেই তাদের সব পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যায়৷

ওংকার সিং জানোটি/জেডএইচ