1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বুথ ফেরত সমীক্ষার রায় কেজরিওয়ালের দিকে

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পড়ল প্রায় ৫৭ শতাংশ৷ ২০১৫র তুলনায় অনেকটাই কম৷ তবে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, তাতেও কেজরিওয়ালই জিতবেন৷

https://p.dw.com/p/3XT7I
ছবি: DW/S. Kumar

দিল্লির ভোট শান্তিতে হল। ছোটখাট কয়েকটি ঘটনা ছাড়া ভোটপর্ব উত্তেজনা ছিল না। গত দশদিন ধরে দিল্লিতে প্রচারযেরকম উচ্চগ্রামে উঠেছিল, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেই উত্তেজনার ছোঁয়া ভোটদানেও পড়তে পারে৷ কিন্তু রাজধানী তার সুনাম বজায় রেখেছে৷ অতীতের মতোই উৎসবের মেজাজ ভোট হয়েছে৷ তবে এ বার ভোটদানের হার গতবারের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কমে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, ভোটের হার হল ৫৭ শতাংশ৷ পরে হয়ত তা সামান্য বাড়তে পারে৷

ভোটপর্ব শেষ হতেই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বুথ ফেরত ভোট সমীক্ষার ফল আসতে থাকে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি  সমীক্ষাই বলছে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালজিতবেন। রিপাবলিক টিভির সমীক্ষা জানাচ্ছে, কেজরিওয়ালের আপ পেতে পারে ৪৮ থেকে ৬১ আসন৷ বিজেপি ৯ থেকে ২১ এবং কংগ্রেস শূণ্য থেকে একটা আসন পেতে পারে৷ টাইমস নাও এর সমীক্ষা অনুযায়ী, আপ পেতে পারে ৫৪ আসন, বিজেপি ২৬ এবং কংগ্রেস একটা আসন৷ সুদর্শন টিভি পোল অনুয়াযী, আপ পেতে পারে ৪০ থেকে ৪৫ আসন, বিজেপি ২৪ থেকে ২৮ এবং কংগ্রেস ২ থেকে ৩ আসন৷ এবিপির সমীক্ষার ফল হল, আপ-এর ৪৯ থেকে ৬৩ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা, বিজেপির ৫ থেকে ১৯ এবং কংগ্রেসের খুব বেশি হলে চারটি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ টিভি ৯ বলছে, আপ পেতে পারে ৫৪ টি আসন, বিজেপি ১৫ ও কংগ্রেস মাত্র একটি আসন৷ নিউজ এক্স সমীক্ষা বলছে, আপ ৫০ থেকে ৫৬টা আসন পেতে পারে, বিজেপি পেতে পারে ১০ থকে ১৪ আসন৷ সব বুথ ফেরত সমীক্ষার গড় করলে কেজরিওয়াল পঞ্চাশের ওপর আসন পাবেন৷  আর আপ সবমিলিয়ে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পাবে৷

বুথ ফেরত ভোট সমীক্ষার এই ফল দেখে অন্তত বিশেষজ্ঞরা অবাক হচ্ছেন না। নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''সবকটি সমীক্ষা আপকে বিজয়ী হিসাবে দেখাচ্ছে৷ ফলে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে, বিজেপি দিল্লিতে হারতে চলেছে। এই হারের বিশাল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দিল্লির  ভোটযুদ্ধ দুটো দিক ছিল৷ একদিকে সফল্যের প্রচার, অন্যদিকে জাতীয়তাবাদ বা উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রচার৷ বিজেপি হারলে প্রশ্ন উঠবে বাকি রাজ্যে বিজেপির প্রচারের কৌশল কী হবে? তারা কি স্থানীয় বিষয়ে গুরুত্ব দেবে নাকি জাতীয় বিষয় নিয়েই কথা বলবে? মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঠিক করে কি তারা ভোটে যাবে?   

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক অবন্তিকা ঘোষের মাথায় ঢুকছে না, কেন বিজেপি প্রচারটা এইরকম জায়গায় নিয়ে গেল? ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''দিল্লিতে মোদী-শাহ যদি এভাবে না ঝাঁপাতেন, তা হলে কিছু বলার থাকত না। সমীক্ষা সত্যি হলে বিজেপি এরকমভাবে নিজের ক্ষতি করতে গেল কেন?''  আবার অমর উজালার প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা মনে করেন, ''আম আদমি পার্টি যদি সত্যি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পায়, তা হলে তারা ৬০ বা তার কছাকাছি আসন পাবে। সব বুথ ফেরত ভোট সমীক্ষা কেজরিওয়ালকে জয়ী হিসাবে দেখাচ্ছে৷ আর একটা দল নিজের কাজের সাফল্য নিয়ে যদি এভাবে জেতে তা হলে বিরল ঘটনা হবে৷ হিন্দু-মুসলিম, মন্দির-মসজিদ, হিন্দুস্তান-পাকিস্তান না করেও এভাবে জেতা যায় সেটা প্রমাণ করে দেবেন কেজরিওয়াল৷''

বুথ ফেরত ভোট সমীক্ষার রায় সত্যি হলে বোঝা যাবে, বিজেপির শাহিনবাগ-কেন্দ্রিক ভেট প্রচার ব্যর্থ হয়েছে৷ মেরুকরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে৷ কেজরিওয়ালের কাজে খুশি হয়ে লোকে তাঁকেই ভোট দিয়েছে৷ ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন ধারা শুরু হবে৷