1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বকাপের পর বিতর্ক আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সে

২৫ ডিসেম্বর ২০২২

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর উদযাপনের সময় ফ্রান্সের স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পের উদ্দেশে ‘বর্ণবাদী' গান ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৷ এ নিয়ে যথারীতি ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্সে৷

https://p.dw.com/p/4LPP7
মেসি এবং এমবাপ্পে
মেসি এবং এমবাপ্পেছবি: Robert Michael/dpa/picture alliance

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আর্জেন্টিনার একদল সমর্থক দেশটির রাজধানী বুয়েনোস আইরেসে  কফিন আকৃতির একটি কাপবোর্ড নিয়ে উল্লাস করছে যেখানে কিলিয়ান এমবাপ্পের ছবি রয়েছে৷ আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, আর্জেন্টিনার এক সমর্থক কালো কাপড়ের একটি পুতুল নিয়ে নাচছেন। সেই পুতুলের গায়ে লেখা এমবাপ্পের নাম। 

মূলত এই ভিডিও দুইটি ছাড়া বুয়েনোস আইরেসে প্রায় ৫০ লাখ সমর্থকের উদযাপনে আর কোন ধরনের বর্ণবাদী আচরণ দেখা যায়নি৷

বিচারের আশ্বাস ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশনের 

ভিডিওগুলোতে করা মন্তব্যে অনেকেই এই ধরনের উল্লাসকে ‘বর্ণবাদী' বলে উল্লেখ করেছেন৷ এদিকে ফরাসি দলের দুই কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় কিংসলে কোমান এবং আউরেলিয়েন শোয়ামেনি টাইব্রেকারে পেলান্টি শট মিস করার পর তাদের উদ্দেশেও বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন কয়েকজন৷

এই ঘটনার পর ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন বিষয়টির নিন্দা জানাতে ভুল করেনি৷ ঘটনাটিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদী এবং ঘৃণাসূচক আচরণ উল্লেখ করে এমন মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা৷

দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী ঘটনাটিকে লজ্জাজনক মন্তব্য করে বলেন, ‘‘ফুটবলসহ কোনো ক্ষেত্রেই এমন আচরণের সুযোগ নেই৷''

বিতর্কে আর্জেন্টিনার গোলকিপার মার্টিনেজ

এদিকে ফরাসি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা ফরাসি খেলোয়াড় বিশেষ করে এমবাপ্পেকে আক্রমণ করে গান গাইছে৷

আর ফ্রান্সের সংবাদমাদ্যম লা ফিহারোর জানায়, ‘‘বিশ্বকাপ শেষে আর্জেন্টিনা দল দেশে ফেরার পর এমবাপ্পের বিরুদ্ধে এমন আচরণ বাড়তে থাকে৷'' পত্রিকাটি এজন্য আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিও মার্টিনেজের সমালোচনা করেছে৷ আর্জেন্টাইন এই গোলকিপার গানের মাধ্যমে ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের এমবাপ্পের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালনের আহ্বান জানান৷ 

পত্রিকাটি আরো জানায়, আর্জেন্টিনার রাজধানীতে বিজয়প্যারেডের সময় ডায়পারে একটি পুতুল দেখায় মার্টিনেজ৷ পুতুলটিতে এমবাপ্পের ছবি আঁকা ছিল৷ তার পাশে বসে ছিলেন লিওনেল মেসি৷       

তবে পত্রিকাটি মার্টিনেজের এমন আচরণের জন্য এমবাপ্পেকেও কিছুটা দায়ী করেছে৷ লিখেছে,‘‘সম্ভবত দক্ষিণ অ্যামেরিকার ফুটবল নিয়ে করা এমবাপ্পের সমালোচনা এখন তার দিকে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে৷''

গত মে মাসে এক সাক্ষাৎকারে ‘‘দক্ষিণ অ্যামেরিকার ফুটবল ইউরোপের মতো উন্নত নয়'', এমন মন্তব্য করেছিলেন এমবাপ্পে৷ কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে তার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন মার্টিনেজ৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘ ফুটবল নিয়ে তার (এমবাপ্পে) জ্ঞান সামান্য৷ সে কখনো দক্ষিণ অ্যামেরিকায় ফুটবল খেলেনি৷ আপনার যদি জ্ঞান না থাকে তাহলে কথা না বলাই ভালো৷''

তবে বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকারের জয়ের পর মার্টিনেজই প্রথম এমবাপ্পেকে সান্ত্বনা জানিয়েছিলেন৷

মেসির জার্সি দিয়ে দরজার পাপোশ

এদিকে দক্ষিণ আ্যামেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও আর্জেন্টিনার রাজধানীতে বিজয় উদযাপনের সময় ‘বর্ণবাদী' আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেছে৷ সেইসাথে ফ্রান্সে ঘটা এমন কিছু আচরণের বিষয়টিও নজর এড়ায়নি তাদের৷

আর্জেন্টিনার ইন্টারনেট পোর্টাল ইনফোবাতে প্রকাশিত এক খবরে দেখানো হয়, ফ্রান্সের সমর্থকরা দেশটির রাজধানী প্যারিসে আর্জেন্টিনার পতাকা পোড়াছে৷

তাছাড়া পোর্টালটির আরেক খবরে বলা হয়, প্যারিসে একটি পাবের দরজার মেঝেতে মেসির একটি জার্সি রাখা৷ আর এর পাশে লেখা, ‘‘প্রবেশের সময় আপনার পা মুছতে ভুলবেন না৷''

স্টেফান নেসলার/আরআর