বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের বিদায়
২ জুলাই ২০১০গবেষণা চলতেই থাকবে, তবে ব্রাজিলের বিদায় বিশ্বকাপের রং অনেকটাই ফিকে করে দিল বলেও মনে করছেন অনেকে৷
ফলাফল ২-১৷ এই প্রথম বিশ্বকাপের আসরে ব্রাজিলকে হারাল নেদারল্যান্ডস৷ আনন্দের জোয়ার ডাচদের মধ্যে৷ আনন্দ কমলা রঙেরও৷ কোয়ার্টার ফাইনালে কী করবে রবেনদের ডাচ দল সেকথা পরে৷ আগের কথা হল, অভাবনীয় ঘটনা, নতুন ইতিহাস আর ব্রাজিলের বিদায়ের কান্ডারী এই যে দলটা, বিরক্তিকর ফুটবল খেলার দোষে তাদের দায়ী করা হচ্ছিল এই বিশ্বকাপের গোড়া থেকে৷ হতে পারে বিরক্তিকর কিন্তু ‘টোটাল ফুটবল'-এর জাদুই শেষ অবধি সেমিফাইনালে যাওয়া থেকে সরিয়ে দিল ব্রাজিলকে৷ আপাতত এই খবরটাই সবচেয়ে বড় খবর৷
মাত্র সাড়ে নয় মিনিটেই প্রথম গোল পেয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল৷ শুরুর দিকের খেলার কোথাও কোন ঘাটতি ছিল না৷ মাঠে রবিনহো, কাকা থেকে শুরু করে গোটা দলটার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে দিচ্ছিল, ৯৪ বিশ্বকাপে এই কোয়ার্টার ফাইনালেই ডাচদের বিদায় দিয়েছিলাম আমরা৷ চার বছর পর ৯৮, আবার বিশ্বকাপ, সেবার সেমিফাইনাল, সেবারেও ব্রাজিল এবং ডাচদের কমলা জার্সির চোখের জলে বিদায়৷ তারপর এই ২০১০, এবার কোয়ার্টার ফাইনাল, এবারেও ইতিহাস লেখা হল অন্য রঙে৷ রঙটা আর সবুজ হলুদ নয়, রঙটার নাম এবার কমলা৷
প্রথমার্দ্ধের শেষ পর্যন্ত ফলাফল ছিল ১-০৷ রবিনহোর গোলে এগিয়ে ছিল দুঙ্গার ব্রাজিল৷ মোড় ঘুরে গেল দ্বিতীয়ার্ধের ৫৩ মিনিটে৷ ডাচ তারকা স্ট্রাইকার স্নাইডারের গোলমুখী ফ্রি কিক ব্রাজিলের খেলোয়াড় ফেলিপে মেলোর মাথা ছুঁয়ে ঢুকে যায় ব্রাজিলেরই গোলে৷ স্কোরবোর্ডে ১-১৷ এরপর ব্রাজিল ভালো করে খেলাটা ধরার আগেই ৬৮ মিনিটে আরিয়েন রবেনের একটা পাস থেকে অসামান্য গোল করেন স্নাইডার৷ তারপর থেকে আর মাথা ঠান্ডা করে খেলতে পারেনি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বিতর্কিত কোচ দুঙ্গার ছেলেরা৷ একের পর এক ফাউল হতে থাকে মাঠে৷ ৭৩ মিনিটে রবেনকে বাজে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন ফেলিপে মোলো৷ তারপর থেকে বাকি খেলায় ডাচদের দুর্ভেদ্য ডিফেন্স আর ভাঙতে পারেনি দশজনের ব্রাজিল৷ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান ম্যাচ ছিল, কিন্তু শেষ হল ডাচদের কমলা জার্সির ইতিহাসে৷
দোসরা জুলাই ২০১০, পোর্ট এলিজাবেথের মাঠে যা ঘটে গেল, সেটাই আরেকটা কমলা বিপ্লব বোধহয়৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক