1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বকাপ ক্রিকেট: ভারতের চক্রপূরণে বাধা অতীতের শিরোপাজয়ীরা

সামীউর রহমান ঢাকা
৪ অক্টোবর ২০২৩

ক্রিকেটানুরাগীদের মাসদেড়েক নাওয়া-খাওয়া ভুলিয়ে দিতে বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। উদ্বোধনী দিনে লড়বে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপ; ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড।

https://p.dw.com/p/4X6t2
সংবাদ সম্মেলনে ১০ দলের অধিনায়ক
বিশ্বকাপের আগে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিলেন ১০ দলের অধিনায়কছবি: Andrew Boyers/REUTERS

এ আসরে একটা চক্রপূরণ কামনা করছে ভারতবাসী৷ ২০১১-তে ওয়াংখেড়েতে শিরোপা জিতে যে চক্রের শুরুটা করেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল, নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মার ভারত সেই চক্রই পূরণ করবে, ফুরাবে এক যুগের অপেক্ষা- এটাই চাওয়া ভারতবাসীর।

স্বাগতিক ভারত অবশ্য মাঠে নামবে রবিবার আর বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলবে শনিবার।

আয়োজক হয়ে নিজের দেশে, নিজেদের দর্শকদের সামনে বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবে কিভাবে মেতে উঠতে হয় সেটা ভারতই করে দেখিয়েছিল ২০১১ সালে। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা ছিল তিন সহ-আয়োজকের এক, তবে ফাইনালটা হয়েছিল পাকিস্তানে, তাই নিজেদের মাটিতে ফাইনাল খেলার আনন্দটা জোটেনি অর্জুনা রানাতুঙ্গার দলের। ২০১১-তে ফাইনালে দুই সহ-স্বাগতিক, ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সেবার থেকেই বিশ্বকাপ জিতে আসছে আয়োজক দেশ, কিংবা আরো ঠিকভাবে বললে ফাইনাল যে দেশে আয়োজন করা হচ্ছে, সেই স্বাগতিকরা। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া, সেবারও আরেক ফাইনালিস্ট সহ-স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। এরপর ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতলো পঞ্চম বারের মতো স্বাগতিক হয়ে। বলা যায় একদম প্রথম দুই আসরের পর, এবারই প্রথম একক কোন দেশ বিশ্বকাপের আয়োজক। সেই সূত্র মেনে আহমেদাবাদের ফাইনালে ভারত কোনো দলকে হারাবে, বিশ্বকাপটা আসলে তারই আনুষ্ঠানিকতা এমন আত্মবিশ্বাসের তুবড়ি নানান মাধ্যমেই ছোটাচ্ছেন ভারতের অনেক সাবেক ক্রিকেটার। অবশ্য সদ্যই এশিয়া কাপজয়ী দলটাকে দেখলে তেমনটা মনেও হয়।

রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারতের দলটাও দারুণ সাফল্য পাচ্ছে দেশে এবং দেশের বাইরে। কিছুদিন আগেই শ্রীলঙ্কায় তারা জিতেছে এশিয়া কাপ। দেশে বিশ্বকাপের আগে দলের মূল তারকাদের বিশ্রামে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছে ওয়ানডে সিরিজ। চলতি বছরে ভারত ঘরের মাটিতে এখন পর্যন্ত ১২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে জিতেছে ৯ ম্যাচে আর হেরেছে ৩ ম্যাচে। ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে এই বছর ভারত ২১ ম্যাচ খেলে জিতেছে ১৫ ম্যাচে, হেরেছে ৫ ম্যাচে আর পরিত্যক্ত হয়েছে একটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য ভারতের রয়েছে পূর্ণ প্রস্তুতি, দলের শীর্ষ ক্রিকেটাররাও আছেন দারুণ ছন্দে। বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মারা তো আছেনই, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তুঙ্গ ফর্মে তরুণ ব্যাটসম্যান শুভমান গিল। এই বছরের ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান শুভমান গিলের, ২০ ম্যাচে ৫টা করে সেঞ্চুরি আর হাফসেঞ্চুরিতে ১২৩০ রান। বিশ্বকাপে ভারত ফাইনালে উঠলে এই বছর দুই হাজার রানের কাছাকাছি চলে যেতে পারেন উদীয়মান এই তারকা। লোকেশ রাহুল, শ্রেয়শ আইয়ার, ঈষান কিষাণ প্রত্যেকেই দারুণ ছন্দে, একাদশে জায়গা পেতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি। দুই অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া আর রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে পেসার জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ আর মোহাম্মদ সামিকে নিয়ে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল ভারত, যারা নিজেদের মাঠে প্রচণ্ডভাবে সফল তাই এবার তারাই শিরোপার প্রধান দাবিদার। কাল ১০ অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনে রোহিত শর্মাকে রবি শাস্ত্রী প্রশ্ন করেছিলেন, টানা তিন বিশ্বকাপে স্বাগতিকরাই জিতেছে। এবারও প্রত্যাশার চাপ আছে কিনা? উত্তরে রোহিত বলেছেন, ' আমি ভাগ্যবান যে, এই দলটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমি খেয়াল করেছি যে, সবশেষ তিন আসরে স্বাগতিকরাই শিরোপা জিতেছে। তবে এই আসরটা অনেক লম্বা। একটা একটা করে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। আর চাপ তো আমাদের নিত্যসঙ্গী। দেশে আর দেশের বাইরে যেখানেই খেলি, চাপ থাকবেই। এতটুকুই এখানে বলতে পারি, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবো।’’

অধিনায়কদের অনুষ্ঠানে কথা বলছেন সাকিব আল হাসান
অধিনায়কদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাকিবই ছিলেন সবচেয়ে অভিজ্ঞছবি: Andrew Boyers/REUTERS

ভারতকে রুখে দেবার সামর্থ্য আছে হয়ত একটু বেশি আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। অধিনায়ক জস বাটলারের নেতৃত্বে গত বছর এই দলটাই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে। সাদা বলের ক্রিকেটে এখন ইংরেজরা দুটো সংস্করণেরই বিশ্বজয়ী। ২০১৯ এবং ২০২২, দুটো বিশ্বজয়ী

দলেই থাকা বেশ ক'জন আসছেন ভারতেও। ডাউইড মালান,জনি বেয়ারস্টোকে নিয়ে গড়া আগ্রাসী উদ্বোধনী জুটির পর জো রুট খানিকটা ধ্রুপদী। কিন্তু এরপর হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার, বেন স্টোকস, লিয়াম লিভিংস্টোন, মইন আলীদের নিয়ে গড়া দীর্ঘ ব্যাটিং লাইন আপ অনায়াসে চারশ রান তুলে ফেলতে পারে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। স্যাম কারান, মার্ক উড, ক্রিস ওকসদের নিয়ে গড়া পেস বোলিং লাইন-আপে লেগস্পিনার আদিল রশিদও আছেন। মইন আর রুটের অফস্পিনও কার্যকর। দারুণ ভারসাম্য ইংল্যান্ড দলে, সেই সঙ্গে আছে বৈচিত্র্যও। শুধু ঘাটতি জোফ্রা আর্চারের। গত বিশ্বকাপে এই পেসার শুধু ২০টা উইকেটই নেননি, প্রতিপক্ষের মনে ভয়ও ধরিয়েছিলেন। এবার তার অভাবটা খুব করে টের পাচ্ছে ইংল্যান্ড, চোটগ্রস্থ আর্চারকে তারা রেখেছে দলের সঙ্গেই। যদি সেরে ওঠেন, তাহলে মাস দেড়েকের এই আসরের শেষভাগে কারো বদলি হিসেবে দেখা যেতেও পারে এই পেসারকে।২০১৯ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক এউইন মরগ্যান তার এক সময়ের সতীর্থ ও ইংল্যান্ডের বর্তমান অধিনায়ককে প্রশ্ন করেছিলেন, শিরোপা ধরে রাখার চাপ কতখানি? উত্তরে বাটলার বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেয়াটা খুবই সম্মানের। ভারত ক্রিকেট খেলার জন্য দারুণ একটা জায়গা। আমরাও খুবই রোমাঞ্চিত। চেষ্টা থাকবে ভালো করার।’’

এই দুই দলের চেয়ে একটু পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তান। দুই দলেই খানিকটা চোট-সমস্যা আর ইনিংসের সূচনায় দূর্বলতা। অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার আইপিএল খেলে খেলে ভারতকে প্রায় 'দ্বিতীয় ঘর' বানিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু তার সঙ্গে সূচনায় বিশ্বকাপের গোড়ার দিকের ম্যাচগুলোতে থাকবেন না ট্র্যাভিস হেড। তার জায়গায় মিচেল মার্শকে শুরুতেই আসতে হচ্ছে। মিডল অর্ডারে স্টিভেন স্মিথ ও মারনাস লাবুশেন রানের চাকা সচল রাখতে পারলেও ঠিক মারকুটে তাদের বলা যাবে না। অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোয়নিস,ক্যামেরন গ্রিন আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের উপরই শেষদিকে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলার দায়িত্ব। আশার কথা এই যে, আইপিএলে এই কাজটা তারা নিয়মিতই করেন। উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স ক্যারি বা জস ইংলেস যতটা ভালো, ব্যাট হাতে ততটা না। অস্ট্রেলিয়ার এই দলটার শক্তির জায়গা বোলিং। মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড আর অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের পেস বোলিংয়ের সামনে বিশ্বের যে কোনো ব্যাটিং লাইন আপ মাথা নোয়াতে বাধ্য। সঙ্গে অ্যাডাম জাম্পার লেগস্পিন ও অলরাউন্ডারদের মিলিয়ে বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী বোলিং অস্ট্রেলিয়ার।

পাকিস্তান এই বিশ্বকাপে কী করবে তার অনেকটাই নির্ভর করবে বাবর আজম এবং শাহীন শাহ আফ্রিদি কী করেন তার উপর। আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান বাবর আর সাদা বলে বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি। প্রথম ওভারে উইকেট তুলে নেয়া তার অভ্যাস। পাকিস্তান নাসিম শাহকে না পাওয়াতে বোলিং আক্রমণ কিছুটা ধার হারিয়েছে, হারিস রউফ গতির নেশায় রান দিচ্ছেন আর স্পিন বোলিংটা মোটেও যুৎসই নয় পাকিস্তানের। ব্যাটিংয়ে বাবরই নিউক্লিয়াস, সঙ্গে ফখর জামান,ইমাম-উল-হক, মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ইফতিখার আহমেদরা এই গরম তো এই ঠান্ডা। সব মিলিয়ে পাকিস্তান বরাবরের মতোই আনপ্রেডিক্টেবল।

এবার অনেক নাটকীয়তার পর শেষ সময়ে ভারতের ভিসা পেয়েছে পাকিস্তান দল, তার আগে তাদের বিশ্বকাপ খেলতে আসা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। এশিয়া কাপে ভারত খেলতে যায়নি পাকিস্তানে। সে আসরে দুই দফার দেখায় এক ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে আর আরেক ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ-ডে'তে৷ সেটায় ভারত পাকিস্তানকে হারায় ২২৮ রানে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সেই ১৯৯২'র সিডনি থেকে ২০১৯'র ম্যানচেস্টার, ৭ বারের দেখায় ৭ বারই ভারত হারিয়েছে পাকিস্তানকে। ৮ম দেখা হবে ১৪ অক্টোবর আহমেদাবাদে। সেখানেও যে পাকিস্তানের ভাগ্য বদলাবে সেই সম্ভাবনা কম।

সংবাদ সম্মেলনে সাকিব, দাসুন শানাকা, বাভুমা, উইলিয়ামসন
সবশেষ তিন আসরে স্বাগতিকরাই শিরোপা জিতেছে৷ এবারও কি সেই ধারাবাহিকতা থাকবে?ছবি: Amit Dave/REUTERS

গত দুইবারের ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড এবারও বেশ ভালো দল। সুপার ওভারে কারা বেশি বাউন্ডারি মেরেছে, এই নিয়মের ফাঁদে পড়ে  'বেয়ারেস্ট অব মার্জিন'-এ বিশ্বকাপ জেতা হয়নি ব্ল্যাকক্যাপদের। এবারও তাদের দলটা ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপসদের নিয়ে বেশ শক্তিশালী, বরাবরের মতো ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসনদের মতো দারুণ পেসাররা আছেন কিউইদের দলে। তবে প্রশ্নটা হচ্ছে, ভারতের মাটিতে তারা কতটা কার্যকর হবেন? নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন প্রথম এক কি দুই ম্যাচে খেলতে পারবেন না, টিম সাউদিকেও পাবে না তারা চোটের জন্য। আইসিসি'র আসরগুলোতে নিউজিল্যান্ড সবসময়ই বেশ প্রতিদ্বন্দিতামূলক দল। টানা দুই বিশ্বকাপ আসরের ফাইনালে হেরেছে ব্ল্যাকক্যাপরা, হেরেছে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালেও। মন্দভাগ্য বা বড় উপলক্ষ্যে জ্বলে উঠতে না পারার সক্ষমতা, কারণ যা-ই হোক না কেন নিউজিল্যান্ডকে ভারতের মাটিতে কাপ জিততে দেখছেন না বেশিরভাগ বিশ্লেষকই, তবে দেখছেন সেমিফাইনালে।

একই বিশ্লেষণ দক্ষিণ আফ্রিকার বেলাতেও। ব্যাটিং লাইন-আপে গভীরতা আছে। রসি ফন ডার ডুসেন, হেনরিক ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, এইডেন মার্করাম আর কুইন্টন ডি ককরা আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট মিলিয়ে বেশ অভিজ্ঞ। বোলিংয়ে লুঙ্গি এনগিদি, কাগিসো রাবাদার পেস প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলবে। তবে ভারতের মাটিতে কেশব মহারাজের বাঁ-হাতি স্পিন আর তাবরেজ শামসির চায়নাম্যান বোলিং কতটা কার্যকর হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এবি ডি ভিলিয়ার্স, ফাফ দু প্লেসিদের সোনালি সময়েও বিশ্বকাপটা অধরা থেকে গেছে প্রোটিয়াদের, এবারও তাদেরকে খুব সম্ভবত ভালো খেলেই বিদায় নিতে হবে ফাইনালের আগে, এমনটাই মত দিচ্ছেন সাবেক ক্রিকেটাররা।

বিশ্বকাপের গত এক ডজন আসরে ২০টি দল একবার হলেও অংশ নিয়েছে, তাদের ভেতর ৭টা দল এখন পর্যন্ত সব আসরেই খেলেছে আর শিরোপা জিতেছে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ৬টি দল। ১২টি বিশ্বকাপ আসরে অস্ট্রেলিয়াই জিতেছে ৫ বার। দুই বার করে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত, একবার জিতেছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। প্রথম দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি, ১৯৯৬'র চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার অবস্থা সঙ্গীন। খেলোয়াড়দের চোট-আঘাতে দল সাজাতেই তারা খেয়েছে হিমশিম, এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে ৫০ রান করে ১০ উইকেটে হারার পর প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের কাছেও হার। ভারতের মাটিতে ভারতের সাম্রাজ্যে ভাগ বসাবার ধার লঙ্কান সিংহের দাঁতে প্রায় নেই বললেই চলে। আফগানিস্তান চমক জাগাতে পারে। ব্যাটিংয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজ, বোলিংয়ে রশিদ খান আর মুজিব-উর-রহমানদের নিয়ে কাবুলিওয়ালারা প্রতিপক্ষকে সহজে জিততে দেবে না, তবে এটাও সত্যি যে, ৯ ম্যাচের গ্রুপপর্ব শেষে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টা ম্যাচ জিতে তাদের শেষ চারে যাওয়াটা কঠিন।

দশের মাঝে রইলো বাকি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপকে ঘিরে বাংলাদেশের মানুষের দলের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। তবে সম্প্রতি এশিয়া কাপ এবং দেশে নিউজিল্যান্ডের প্রায় অচেনা দলের কাছে ওয়ানডে সিরিজে হার প্রত্যাশার বেলুনকে চুপসে দিয়েছে।বিশ্বকাপ শুরুর আগে দলের ভেতর অন্তঃকলহ, তামিম ইকবালকে বাদ দেয়া, বর্তমান ও সাবেক দুই অধিনায়ক সাক্ষাৎকারে কিংবা ভিডিও বার্তায় একে অন্যকে দোষারোপ করে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করেছেন। দলের সঙ্গে বিশ্বকাপে যোগ দিয়েছেন নতুন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরণ শ্রীরাম। মাত্র অল্প কিছু ম্যাচ খেলেই অনেকে পেয়ে গেছেন বিশ্বকাপের টিকিট, এখনো আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১০টা ওয়ানডে ম্যাচেও খেলেননি এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার যেমন দলে আছেন, তেমনি পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া সাকিব আর মুশফিকুর রহিমও আছেন। বাংলাদেশের অধিনায়ক শুনিয়েছেন ভালো খেলার গান, কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহে বলেছেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখলে ঘুম থেকে জাগতে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিশ্বকাপে সেরা সাফল্য তিনটা ম্যাচ জেতা। এইবার নিজেদেরসেরা সাফল্যকে ছাড়িয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ, এই ভরসা দিয়েই বিমানে চড়েছেন ক্রিকেটাররা। নিজের পছন্দের দল পেয়েছেন কোচ ও অধিনায়ক, এবার মাঠে নিজেদের প্রমাণ করার পালা। অধিনায়কদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাকিবই ছিলেন সবচেয়ে অভিজ্ঞ, পঞ্চম বিশ্বকাপে খেলছেন। তার কাছে মরগ্যানের প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়ে। সাকিব জানিয়েছেন, ‘‘২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ বেশ ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে আসছে। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশ তৃতীয় হয়েছে। আমাদের দলটা খুব ভালো। প্রস্তুতিও ভালো। দেশবাসীরও অনেক প্রত্যাশা। দেখা যাক বিশ্বকাপে আমরা তাদের আশা কতটা পূরণ করতে পারি।’’

দেখুন সেপ্টেম্বর মাসের ছবিঘরটি...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য