বিরোধীদের জেলের ভয় দেখাচ্ছেন এর্দোয়ান
১৮ জানুয়ারি ২০২১২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ানের দলের প্রার্থী হেরে গিয়েছিলেন৷ জিতেছিলেন রিপাবলিকান পিপলস পার্টির একরেম ইমামঅলু৷ তবে মূল ভূমিকায় ছিলেন সিএইচপির আঞ্চলিক প্রধান জানান কাফতানজঅলু৷
৪৮ বছর বয়সি কাফতানজঅলু একজন চিকিৎসক৷ ২০১৮ সালে তিনি সিএইচপি দলের ইস্তাম্বুলের প্রধানের দায়িত্ব পান৷ জনপ্রিয়তার রেটিং বিচারে তুরস্কের রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনি অন্যতম জনপ্রিয়৷
ইস্তাম্বুলের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের মেয়র পদে দলের প্রার্থীর হার এখন পর্যন্ত এর্দোয়ানের সবচেয়ে বড় নির্বাচনি হার৷ আর কাফতানজঅলুর জন্য সেটা সবচেয়ে বড় নির্বাচনি জয়৷
মেয়র নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে কাফতানজঅলুকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ তাকে মানহানি, জনগণের মধ্যে ঘৃণা ও সহিংসতা উসকে দেয়া, ‘সন্ত্রাসী প্রোপাগাণ্ডা' ছড়িয়ে দেয়া এবং প্রেসিডেন্টও তুর্কি রাষ্ট্রকে অপমান করার মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে৷
কাফতানজঅলুর সমর্থকরা বলছেন, ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে করা কাফতানজঅলুর বিভিন্ন টুইটকে মামলায় প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ সিএইচপির নেতারা বলছেন, ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচনে হারের প্রতিশোধ নিতে কাফতানজঅলুকে শাস্তি দেয়া হয়েছে৷ কাফতানজঅলু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং আপিল করেছেন৷ আপলি প্রক্রিয়া চলায় এখন তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না৷
এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কমিউনিকেশন্স ডাইরেক্টর ফারেতিন আলতুনের বাড়ির ছবি তোলায় সিএইচপির আরেক রাজনীতিক সুয়াত ওজাগদাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে আনাতোলিয়ার পাবলিক প্রোসিকিউটরের কার্যালয়৷ ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের' দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তার পাঁচ বছরের জেল হতে পারে৷ সরকারি জমিতে অননুমোদিত নির্মাণকাজের তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে এই ছবি তুলেছিলেন ওজাগদাস৷ তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছেন কাফতানজঅলু৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ওজাগদাস শুধু তার দায়িত্ব পালন করছিলেন৷ তিনি দলের নির্দেশ পালন করছিলেন, কারণ, ঐ স্থাপনাটি অবৈধ ছিল৷ তিনি আবারও এই কাজ করবেন৷ যাদের লুকানোর কিছু আছে তারা আতঙ্ক তৈরি করছেন৷''
এই টুইটে ক্ষিপ্ত হয়ে আনাতোলিয়ার পাবলিক প্রোসিকিউটরের কার্যালয় কাফতানজঅলুর বিরুদ্ধে ‘অপরাধ করতে প্ররোচনা দেয়া' ও ‘অপরাধকে মহিমান্বিত' করার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ বছরের জেল হতে পারে৷
বিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার রীতি এর্দোয়ানেরসরকারের জন্য নতুন নয়৷ এর আগে ‘তথাকথিত প্রেসিডেন্ট' বলায় সিএইচপি নেতা কেমাল কিলিচদারলুর বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ' আনার অভিযোগে এক কোটি ১১ লাখ টাকার মামলা করেছিলেন এর্দোয়ান৷
পালটা ব্যবস্থা
কাফতানজঅলুও বসে নেই৷ তাকে ‘সন্ত্রাসী' বলায় সম্প্রতি এর্দোয়ান ও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন কাফতানজঅলু৷ ইস্তাম্বুলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন রেক্টর নিয়োগের বিরুদ্ধে চলা প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়েছিলেন নিয়োগ দেয়া কাফতানজঅলু৷ সেজন্য তাকে সন্ত্রাসী বলেছিলেন এর্দোয়ান৷ কাফতানজঅলু একে ‘হাস্যকর অভিযোগ' বলে এর্দোয়ানকে প্রমাণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এর্দোয়ান হয়ত এখনো ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচনে হার মেনে নিতে পারেননি৷
ডানিয়েল বেলুত/জেডএইচ