বিচ্ছেদের পরও কর কমানোর প্রস্তাব
২৪ মার্চ ২০১৯আলাদা বসবাস কিংবা বিচ্ছেদের পরও সহ-অংশীদারেরভিত্তিতে সন্তান লালনপালনের প্রবণতা জার্মানিতে বাড়ছে৷ তবে এ সংক্রান্ত আইনটি পুরনো হওয়ায় তা এ সমস্ত অভিভাবকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না বলে সপ্তাহান্তে মত দিয়েছেন জার্মানির বিচারমন্ত্রী কাটারিনা বার্লে৷
‘‘বিচ্ছিন্ন অভিভাবকদের উপর থেকে আর্থিক চাপ কমাতে হবে আমাদের,'' জার্মানির একটি সংবাদপত্রকে শনিবার দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন বার্লে৷
আর্থিক চাপ কমানোর একটি উপায় হতে পারে বিবাহবিচ্ছেদের পর আলাদাভাবে বসবাসকারী অভিভাবকদের উপর থেকে কর কমানো৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করে তাঁদের দু'টি বাড়ির খরচ জোগান দিতে হয় কিংবা বিচ্ছেদের ফলে তাঁদের ভ্রমণের খরচ বেড়ে যায়৷ সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে এই চাপ জটিলতা আরো বাড়ায়৷''
বার্লের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জার্মানিতে প্রতিবছর দুই লাখের মতো শিশুর উপর বিচ্ছেদের প্রভাব পড়ছে৷
প্রচলিত আইন একজন অভিভাবককে সুবিধা দেয়
যখন দু'জন অভিভাবক আলাদা হয়ে যান কিংবা বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান, তখন অধিকাংশক্ষেত্রে তাঁদের করসীমা আলাদা হয়ে যায়৷ সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজন অভিভাবক বাড়তি সুবিধা পান৷
গতশতকের পঞ্চাশের দশকে করা আইনে মূলত একক পিতা বা একক মাতা, যার সঙ্গে সন্তান মূলত থাকবে, তাঁর ক্ষেত্রে কর কমানোর বিষয়টি রয়েছে৷
বিচ্ছেদের পর সাধারণত বিচ্ছিন্ন দম্পতির সন্তান যে কোনো একজন অভিভাবকের বাড়িতে নথিভুক্ত থাকে৷ সেই অভিভাবক সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কাটান এবং সন্তানের মূলরক্ষক হিসেবে বিবেচিত হন৷ অন্য অভিভাবকের তখন সন্তান যাঁর সঙ্গে থাকে, তাঁকে সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ খরচ দিতে হয়৷ এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অভিভাবক সন্তানকে মাসে কতদিন নিজের কাছে নিয়ে রাখছেন কিংবা সন্তানের সঙ্গে কতটা সময় কাটাচ্ছেন, তা বিবেচনা করা হয় না৷
ফলে যেসব অভিভাবক সহ-অংশীদারের ভিত্তিতে সন্তান লালনপালনের সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়৷
জার্মানির পরিবারমন্ত্রী ফ্রান্সিসকা গিফে রবিবার বিচ্ছেদের পর বাবাদের আরো সুরক্ষা দেয়ার কথা বলেছেন৷ তিনি শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত আইনে পরিবর্তন আনার আশা করছেন, কেননা যেসময় এই আইন তৈরি হয়েছিল তা সন্তানের দেখাশোনার বর্তমানের চর্চার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷
তিনি বলেন, ‘‘এখন বাবাদের মধ্যে সন্তানের দায়িত্ব নেয়ার চর্চা ক্রমশ বাড়ছে৷ তাঁরা পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে চাচ্ছেন এবং (সন্তান লালনপালনে) অংশীদার হতে চাচ্ছেন৷ বিচ্ছেদের মাধ্যমে এই আগ্রহ সাধারণত শেষ হয়ে যায় না৷''
সমকামী যুগলের আরো অধিকার
সন্তান জন্মদানের পর বিপরীতকামী যুগল যে আইনি মর্যাদা পান, সমকামী যুগলকেও সেই একই মর্যাদা দিতে চান বার্লে৷ তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর প্রস্তাবিত অভিভাবকত্ব অধিকার আইন শুধুমাত্র সমকামী যুগলই নয়, বিচ্ছেদের শিকার অভিভাবক, এমনকি যেসব নারী নানা জটিলতার কারণে স্পার্ম ডোনারের মাধ্যমে গর্ভধারণ করেছেন, তাঁদের অধিকারও নিশ্চিত করবে৷
বর্তমান অভিভাবকত্ব অধিকার আইন অনুযায়ী, জার্মানিতে জন্ম নেয়া শিশুদের জন্ম-সনদ প্রদানের সময় তাঁদের ‘‘বাবা'' এবং ‘‘মা'' আছে বলে বিবেচনা করা হয়৷ এক্ষেত্রে ‘‘বাবা'' হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সন্তান জন্ম দেয়া মায়ের স্বামী৷ এমনকি পিতৃত্ব পরীক্ষার ফলাফল ভিন্ন হলেও কিংবা সন্তান জন্ম দেয়া নারীর স্বামী একজন নারী হলেও এটা প্রযোজ্য৷
এআই/ডিজি (এএফপি, কেএনএ, ইপিডি)