জাতীয় ঐকমত্যের দাবি
২১ এপ্রিল ২০১৩অবশেষে জমি অধিগ্রহণের জট খুলেছে বলে মনে করছে ভারত সরকার৷ কারণ প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ও অন্যান্য দলের সংশোধনের বেশির ভাগ দাবি মেনে নেয়া হয়েছে৷ বিরোধীদের মূল দাবিগুলির মধ্যে ছিল কৃষকদের জমি নেয়া হলে তার জন্য গ্রামাঞ্চলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে বাজার দামের চারগুণ এবং শহরাঞ্চলে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে হবে দ্বিগুণ৷
অধিগ্রহণের পরিবর্তে কৃষকদের কাছ থেকে লীজ ভিত্তিতে জমি নেয়া হোক৷ এতে জমির মালিকানা থাকবে কৃষকদের হাতে এবং জমি থেকে তাঁদের নিয়মিত আয়ের পথ খোলা থাকবে৷ যেহেতু লীজের বিষয়টি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত তাই সেটার দায়িত্ব রাজ্যের হাতে৷ বহু-ফসলি জমির কতটা অংশ অধিগ্রহণ করা হবে সেটা স্থির করবে রাজ্য৷
২০১১ সালে প্রথম জমি বিল পেশ করার সময় থেকে বর্ধিত ক্ষতিপূরণের আশায় বহু জমি মাফিয়া জলের দামে অনেক জায়গায় জমি কিনে রেখেছিল৷ সংশোধিত বিলে বলা হয়, জমির ফাটকাবাজি ঠেকাতে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের পর যেসব জমি বেচাকেনা হয়েছে ক্ষতিপূরণের ৫০% পাবে জমির মূল মালিক৷ বিলে বর্গাদারদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিও অন্তর্ভুক্ত৷ এতে পশ্চিমবঙ্গের বর্গাদাররা বেশি উপকৃত হবেন৷
তবে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ১০০% কৃষকদের সম্মতি নেয়া সম্ভব নয় বলে সেটা করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০%৷ সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রকল্পের জন্য ৭০% এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য ৮০%৷ জাতীয় সড়ক, রেল, খনি ইত্যাদির জন্য জমি নেয়া হলে সেক্ষেত্রেও জমি বিলে নির্ধারিত হারেই ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দিতে হবে৷ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এসইজেড-এর জন্য লগ্নি টানতে বিশেষ ছাড় দেবার কথা বলা হয়৷
বিলের সংশোধিত খসড়ায় শিল্পপতি এবং বণিকসঙ্ঘ খুশি নয়৷ তাদের মতে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এত বেশি রাখা হয়েছে যে, প্রকল্পের খরচ বাড়বে অনেক৷ আর্থিক মন্দার সময় সেটা পোষানো কতটা সম্ভব হবে তা বলা কঠিন৷ দ্বিতীয়ত, ৮০% জমির মালিক ও তাঁদের পরিবারবর্গের অনুমতি আদায় করা হবে বেশ সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য৷এতে শিল্প স্থাপন বিলম্বিত হবে৷
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পশ্চিম বঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জমি বিল সম্পর্কে সিপিএম নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান নিলেও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ না দেয়ায় তাদের অবস্থান নিয়ে একটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে, যেটা দলের পক্ষে হবে ক্ষতিকারক৷ কারণ পশ্চিম বঙ্গ সরকার শিল্প-বিরোধী এমন বার্তা যাবে৷