বার্লিনে নৃশংস হামলা সত্ত্বেও অপরাধী মুক্ত
২৬ এপ্রিল ২০১১দুটি গাড়ির সামান্য ধাক্কা লাগলো৷ দুই চালক নেমে এসে করমর্দন করে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করলেন৷ পুলিশ এসে সব দেখেশুনে দুই চালকের বিমা সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য নথিভুক্ত করলো৷ সবাই একে অপরের করমর্দন করে যে যার কাজে ফিরে গেল৷ জার্মানিতে এই দৃশ্য একেবারেই বিরল নয়৷ মনোমালিন্য হলেও উচ্চস্বরে ঝগড়া, হাতাহাতি বা মারপিটের দৃশ্য অতি বিরল৷ অথচ বিচ্ছিন্ন হলেও হিংসার প্রবণতা বেড়ে চলছে বলে অনেকেই মনে করছেন৷
যেমন গত সপ্তাহান্তে বার্লিনের এক মেট্রো স্টেশনে ১৮ বছরের এক তরুণ ২৯ বছরের এক সহযাত্রীর উপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে৷ প্রথমে মাথায় বোতলের বাড়ি, তারপর তাঁর অচৈতন্য শরীরে, বিশেষ করে মাথার উপর ক্রমাগত লাথি মারে সে৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী সাহায্য করতে এগিয়ে এলে হামলাকারীর এক সঙ্গী তাকেও মারধোর করছে৷ ভিডিও ক্যামেরায় সেই দৃশ্য ধরা পড়ায় হামলাকারী অবশ্য পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে৷ মনের মধ্যে জমে থাকা প্রবল ক্ষোভের কারণেই সম্পূর্ণ অচেনা এক সহযাত্রীকে মারাত্মক ভাবে আঘাত করেছে বলে সে দাবি করে৷ প্রথমে পরোয়ানা জারি করেও মদ্যপ অবস্থায় অপরাধ করায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়৷ তাকে শুধু সপ্তাহে তিন বার পুলিশ থানায় হাজিরা দিতে হবে৷ এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে বার্লিনের রাজপথে আরও একটি নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে৷
এমন হামলা সত্ত্বেও দোষীদের যথেষ্ট শাস্তি হয় না বলে অনেকের অভিযোগ৷ গুরু পাপে লঘু দণ্ড তাদের পছন্দ নয়৷ বিশেষ করে তরুণ অপরাধীরা যেভাবে সহজে ছাড়া পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে আবার হিংসার পথে ফিরে যাবার সুযোগ পায়, তা বন্ধ করা উচিত বলে অনেকেই মনে করে৷ ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সীদের জন্য আইনের কড়াকড়ি এমনিতেই কম৷ আইনের চোখে তারা পুরোপুরি প্রাপ্তবয়স্ক নয়৷ এবার খোদ শাসক জোটের বড় শরিক খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী শিবিরের মধ্যেই হিংসাপরায়ণ তরুণদের সতর্ক করতে বিশেষ আইন প্রনয়ণের দাবি উঠছে৷ তাদের মতে, শুরুতেই জেলে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে এবং ভবিষ্যতে আবার অপরাধ করলে কড়া শাস্তির হুমকি পেলে তরুণরা সহজে আর বিপথে যাবে না৷ তবে যারা প্রথম বারের মতো অপরাধ করছে, তাদের ক্ষেত্রে এই আইন সরাসরি কাজে লাগবে না৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক