1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিন শহরেই চাষাবাদের নানা সুযোগ

১৫ মার্চ ২০২৩

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে সবুজের অভাব নেই৷ শহরের মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য চাষবাস, প্রকৃতি ও সংরক্ষণ সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিচ্ছে অসংখ্য কমিউনিটি গার্ডেন৷

https://p.dw.com/p/4OgY3
Ein urbaner Garten namens Prinzessinnengärten in Berlin.
ছবি: DW/M.Clausen

গত রাতে তুষারপাতের পর স্কুলের সবজির খেতের কী অবস্থা? কোরা, হিরা, মাক্স ও ইয়োহানেস সেটা জানতে চায়৷ কয়েক সপ্তাহ আগে তাদের ক্লাস রাইয়ের ছোট খেত প্রস্তুত করেছে৷ হিরা বলে, ‘‘এখন কয়েকটি চারা গজিয়েছে৷ গত বার আমরা কিছুই দেখতে পাই নি৷ আমরা সবে বীজ বপন করেছিলাম৷''

বার্লিন শহরের মধ্যে হাইওয়ের ধারেই এই গার্ডেনিং স্কুল অবস্থিত৷ প্রায় ১০,০০০ বর্গ মিটার জুড়ে অনেক গাছ, ছোট আঙুরের খেত, পুকুর ইত্যাদি রয়েছে৷ স্কুল পড়ুয়ারা সেখানে হাতেনাতে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পায়৷ গার্ডেনিং স্কুলের শিক্ষিকা সুসানে ম্যুলার-কাল বলেন, ‘‘বার্লিনের গার্ডেনিং স্কুলগুলি শহরের সবুজ ও শিক্ষামূলক জমিতে অবস্থিত৷ কয়েকটি এমনকি একশো বছরেরও বেশি পুরানো৷ শিশুরা এখেনে প্রকৃতি আবিষ্কার করতে পারে, পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা নিতে পারে৷ তবে শুধু শিশু নয়, এখন বড়রাও এখানে আসতে পারেন৷ সংরক্ষণ ও পরিবেশের মতো বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে, বা নিছক প্রকৃতির অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে যে কেউ এখানে আসতে পারেন৷''

আজ কনিফার জাতীয় গাছ সম্পর্কে শিক্ষার পালা৷ কাছেই শিশুদের স্কুল৷ প্রতি মাসে তারা এখানে এসে নানা বিষয়ে জানতে পারে৷ পৌর কর্তৃপক্ষই এই গার্ডেনিং স্কুলের অর্থায়ন করে৷ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত না হলেও যে কেউ শিক্ষামূলক ইভেন্টে অংশ নিতে পারে৷

শহরের পূর্বাংশে একেবারে ভিন্ন ধরনের এক প্রকল্প চলছে৷ সেটিকে ‘ইন্টারকালচারাল কমিউনিটি গার্ডেন' বলা হয়৷ কমিউনিস্ট জমানার পুরানো ভবনগুলির মাঝে কয়েক মাস আগে ফসল তোলা হয়েছে৷ সেখানে যে কেউ সর্বসাধারণের জন্ম উন্মুক্ত খেত ব্যবহার করতে পারে৷ নিজস্ব ৪০ বর্গ মিটার খেতের জন্য মাসে ১৫ ইউরো মাসুল দিতে হয়৷ তবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ম নেই৷

টিম কেগেলার সেই বাগানের দায়িত্বে রয়েছেন৷ তিনি নিজে অবশ্য মালি নন, সমাজকর্মী৷ তিনি বলেন, ‘‘ইন্টারকালচারাল গার্ডেনের ভিন্ন এক কনসেপ্ট রয়েছে৷ এগুলি সবার জন্য উন্মুক্ত৷ পাড়ার মধ্যেই সেগুলি অবস্থিত৷ এগুলি বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে আদানপ্রদানও বাড়ায়৷ আমরা এলাকার বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ করি, যেমন শরণার্থীদের আবাস, পাশের কিন্ডারগার্টেন বা রাস্তার অন্য দিকের প্রাইমারি স্কুল৷''

বার্লিনে চাষাবাদ

শহরে বেশ কয়েক ডজন কমিউনিটি গার্ডেন রয়েছে৷ তার মধ্যে অনেকগুলি বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে মেলবন্ধন ঘটায়৷

দীপ্তি আকোরথ ও তার স্বামী বিপিন মাধবানুনি আরও বাস্তবধর্মী বাগানের কনসেপ্ট বেছে নিয়েছেন৷ ভারত থেকে আসা এই দুই সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শহরের উপকণ্ঠে একটি বাগান ভাড়া নিয়েছেন৷

বাসা থেকে সাইকেলে চেপে কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে পৌঁছানো যায়৷ এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত তাঁরা সেখানে শাকসবজির চাষ করেন৷ দীপ্তি বলেন, ‘‘কোভিডের সময়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম৷ কারণ সে সময়ে অন্য কিছুই করার ছিল না৷ বাসা থেকেই কাজ করছিলাম৷ ফলে এভাবে বাসার বাইরে গিয়ে ভালো কিছু করার সুযোগ পেলাম৷ অন্য কিছু করার উপায় ছিল না৷ আমারা ভ্রমণ করতে পারছিলাম না৷ এ বছরও একই কাজ চালিয়ে গেছি৷''

ফসল তোলার মৌসুমের জন্য গার্ডেনিং স্কুলের শিশুদের আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে৷ তবে শীতকালে ‘কনিফার' বিষয়ের কল্যাণে তারা এখন চিরসবুজ গাছ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে৷

নিয়মিত বাগানে যাবার কারণে প্রকৃতি সম্পর্কে তাদের জ্ঞান ও কদর বাড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর বহুকার পরেও সেই জ্ঞান তাদের কাজে লাগবে৷

টাবেয়া ম্যার্গেনটালার/এসবি