বার্লিন নগর গ্রন্থাগারের ৩৫০ বছর পূর্তি
১৯ মে ২০১১জার্মান রাজধানীর বিখ্যাত সড়ক উন্টার ডেন লিন্ডেন৷এই সড়ক সংলগ্ন বেবেল প্লাৎস, তথা চত্বর৷ বেবেল প্লাৎসের উল্টো দিকে হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়৷ জার্মান ঐতিহাসিক যাদুঘর৷ ভাস্কর কেটে কোলভিৎসের মিউজিয়ম৷ মাক্সিম গোর্কি থিয়েটার৷ বেবেল প্লাৎসের ডাইনে-বাঁয়ে বার্লিন-নগর অপেরা হাউজ৷ বিশাল গ্রন্থাগার৷
মানুষ কেন বই পড়ে জ্ঞানী হবে, বলীয়ান হবে বোধবুদ্ধিতে? অসহ্য মনে হয়েছিল নাৎসিদের কাছে৷ তো কী করণীয়?
১০ মে ১৯৩৩ সাল৷ গোটা বেবেল প্লাৎস-জুড়ে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের সমাবেশ৷ হিটলারের প্রচারণামন্ত্রী ইয়োজেফ গোয়েবেলস-এর নির্দেশ, বই পোড়াও৷ বই পোড়ানোর উৎসবে মেতে উঠলো নাৎসিরা৷ এক লহমায় পুড়ে ছাই হলো ২৫ হাজারের বেশি বই৷
গোয়েবেলস, নাৎসিরা কি ভেবেছিল জার্মানিতে বই পোড়ালেই পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ অশিক্ষিত, বোধবুদ্ধিহীন হবে ? হিটলারের হত্যা-ধ্বংসলীলা দর্শনে গরীয়ান হবে ? --- না, হবে না যে, প্রমাণ, বার্লিন-নগর গ্রন্থাগারের ৩৫০ বছর পূর্তি৷ এই গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠা ১৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে৷তখন থেকেই হাজার-হাজার বই সংরক্ষিত৷ পুড়িয়েও ধ্বংস করা যায়নি সব৷
গ্রন্থাগারের ৩৫০ বছর উপলক্ষ্যে বার্লিনের ঐতিহাসিক যাদুঘরে গুটেনবার্গ প্রেসে ছাপা প্রথম বই, চিত্রিত বাইবেলসহ ১৯ শতকের বইও প্রদর্শিত৷ আছে বহুদেশের প্রাচীন বর্ণমালা৷ যা, বাঁশপাতায় লেখা৷ কাঠের উপরে লেখা৷ মোটা কাপড়ের উপরে লেখা৷
পঞ্চম শতকে ভাগবত গীতা নিয়ে কে ছবি এঁকেছিলেন, গীতার বাণী সংস্কৃত ভাষায় লিখেছিলেন, নাম নেই তাঁর৷ তবে প্রদর্শনীতে শোভিত৷ আরো আছে ১৬ শতকের একটি বাংলা চিঠি (ব্রিটিশ রয়াল একাডেমি থেকে সংগ্রহ )৷ সংগীতকার মোৎসার্টের অটোগ্রাফসহ লে নোজে ডি ফিগারো-র স্বরলিপি৷ কাটাকুটি লাল-কালো কালিতে৷
এই প্রদর্শনী দেখে ইউরোপের বিভিন্ন মানুষ আপ্লুত৷ কেউ বলেন, চমৎকার৷ কেউ অভিযোগ করেন, সবকিছুই জার্মান ভাষায় টাইটেল৷ সে লেখা যারা পড়তে পারছেননা তারাও প্রদর্শনী দেখে সুখী৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক