1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষককে পালাতে সহায়তার অভিযোগ

২ মার্চ ২০২৩

বান্দরবানের লামায় এক মারমা বিধবা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বাঙালি যুবকের বিরুদ্ধে৷ ধর্ষকের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হলেও তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি৷

https://p.dw.com/p/4O9JU
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/E. McGregor

গত শুক্রবার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হারগাজাপাড়ায় এ ঘটনায় একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়; পাঁচ দিনেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি৷  

এর প্রতিবাদে এবং দোষী যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার সকালে শহরে মধ্যমপাড়া রাজারমাঠে ‘বান্দরবান জেলা সচেতন ছাত্র সমাজ ও উইমেনস অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম' বিক্ষোভ করেছে৷

একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয় পরে সেখানে তারা মানবন্ধন করেন৷

মানববন্ধনে মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের জেলা কমিটির সভাপতি উহ্লাচিং মারমা, বান্দরবান সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি থোয়াই অং মারমা, খিয়াং ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি হিরো খিয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়শেসেন প্রতিনিধি বিটন তঞ্চঙ্গ্যা ও ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি তনয়া ম্রো বক্তব্য রাখেন৷

বক্তারা অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরার পরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাকে পালাতে সুযোগ করে দিয়েছিলেন৷ ঘটনার চারদিন পরও অপরাধাীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷

তারা স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধিকেও তদন্তের আওতায় আনাসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানান৷

মানববন্ধনে সংহতি বক্তব্যে আইনজীবী উবাথোয়াই মারমা বলেন, মামলার এজাহার এবং ভুক্তভোগী নারী ও এলাকাবাসীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় ঘটনার পরপরই ধর্ষককে নিজের হেফাজতে নিয়ে বিচারের নামে আসামিকে পালানোর সুযোগ করে দেয় কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি৷

 ‘‘এ কারণে সংরক্ষিত আসনে এক মহিলা মেম্বার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না৷ এর আগেও পার্বত্য এলাকায় যত ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয়েছে অপরাধীরা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যায়; যার ফলে পাহাড়ে দিন দিন ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷”

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন উইমেন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম-এর জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাধবী মারমা৷

গত শুক্রবার লামা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হারগাজাপাড়ার বাসিন্দা মো. কায়সারের (৩৫) বিরুদ্ধে এক বিধবা মারমা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে৷

এ ঘটনায় শনিবার বিকালে ওই নারী বাদী হয়ে লামা থানায় মো. কায়সারকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন৷

মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার দুপরের দিকে পাড়ার একটা চরে শাক তুলতে গেলে মো. কায়সার পেছন থেকে আক্রমণ করে মুখে গামছা চেপে ধরে৷ টেনে নিয়ে পাশে একাশি গাছের বাগানে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে৷ বাধা দিলে মুখে চর থাপ্পড় দিয়ে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়৷ চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে কায়সার পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক ও মারধর করে জনতা৷

পরে খবর পেয়ে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য মো. কায়সারকে সঙ্গে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পরে চেয়ারম্যান কায়সার সুস্থ হলে ‘স্থানীয়ভাবে' বিচারের আশ্বাস দেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়৷

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকালে ভুক্তভোগীরা যখন আমার কাছে আসে তখন ধর্ষণের  অভিযোগ দেওয়া হয়নি৷ ধর্ষণের অভিযোগ আসলে সাথে সাথে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে থানায় দিয়ে দিতাম৷” 

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী বলেছিল, তাকে গামছা দিয়ে মুখে চেপে ধরেছে, চর থাপ্পড় দিয়েছে৷ তখন অভিযুক্ত ব্যক্তিকেও পাড়াবাসীরা মারধর করার পর তিনিও মুর্মূষু অবস্থায় ছিল৷ এ কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সুস্থ হওয়ার পর বিচার করার কথা বলা হয়েছিল৷

 ‘‘সুস্থ হওয়ার দুদিনের মধ্যে বিচারের মুখোমুখি করার শর্তে কায়সারকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল৷ পরে চকরিয়ার একটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা শুনে পালিয়ে গেছে বলে শুনেছি৷”

ধর্ষক কায়সারকে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান লামা থানা ওসি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী৷

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য