বাগানে শামুকের উপদ্রব সামলানোর পথ
১৩ এপ্রিল ২০২৩শামুক তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলে৷ একটিশামুক ঘণ্টায় শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য তিন কিলোমিটার গতিতে এগোতে পারে৷ সেটির ঘাড়ে বোঝাও কম নয়৷ সঙ্গে আস্ত বাড়িঘর রয়েছে, বেশি ঠান্ডা বা গরম লাগলে তার মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে৷ প্রবেশদ্বারের এক ছিদ্র দিয়ে শামুক নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারে৷
প্রাণীটির চোখও কম বিস্ময়কর নয়৷ প্রথমে শুঁড়গুলি টেলিস্কোপের মতো বেরিয়ে আসে, যার উপর চোখ বসানো রয়েছে৷ সেই চোখ শুধু আলো ও অন্ধকারের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারে৷ সে তুলনায় শামুক অনেক দক্ষতার সঙ্গে গন্ধ শুঁকতে পারে এবং কোন বাগানে কোথায় সুস্বাদু কিছু বেড়ে উঠছে, দুই সপ্তাহ ধরে তা মনে রাখতে পারে৷ কারণ ধীর গতি ও এদিক-ওদিক ঘোরাফেরার পাশাপাশি শামুক বিশাল পরিমাণ খোরাক খেতে খুব ভালোবাসে৷ দিনে তাকে প্রায় নিজের ওজনের সমান খোরাক গিলতে হয়৷
এমন রাক্ষুসে খিদের কারণে সহজেই সংঘাত দেখা দিতে পারে৷ প্রত্যেক মালির জন্য শামুক উত্তেজনার কারণ হয়ে ওঠে৷ কিন্তু শামুক শুধু বিরক্তির কারণ নয়৷ এই প্রাণী বাগানের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, কারণ সেটি মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশিষ্ট অংশ খায়৷ শামুক একই সঙ্গে হিউমাস গঠন ও বাগান পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে৷
একমাত্র স্লাগ জাতের শামুক বাগানের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে গণ্য করা হয়৷ জার্মানিতে স্প্যানিশ স্লাগ বেশ সমস্যা সৃষ্টি করে৷
কীভাবে শামুকের মোকাবিলা করা সম্ভব? শামুক মেরে ফেলাই বেশিরভাগ প্রচলিত পদ্ধতির লক্ষ্য৷ কিন্তু তার ফলে এমনকি উপকারী শামুকেরও মৃত্যু হয়৷
লবণও অত্যন্ত ক্ষতি করে৷ লবণের সংস্পর্শে এলে শামুকের শরীর ভীষণভাবে শুকিয়ে যায়৷ তথাকথিত বিয়ারের ফাঁদ শামুককে এতই আকর্ষণ করে, যে তার টানে পাশের বাগানের শামুকও চলে আসে৷ আজকাল বাজারে ফেরিক ফসফেটসহ স্লাগ পেলেটের যে অরগ্যানিক সংস্করণ পাওয়া যায়, সেটি সঁজারু, ইঁদুর ও পাখির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে৷ এই সব প্রাণী কত পরিমাণ শামুক খাচ্ছে, তার উপর বিপদের মাত্রা নির্ভর করে৷
তাহলে উপায় কী? দৈনন্দিন ভিত্তিতে শামুক ধরে স্থানান্তরের বদলে শুকনা উপাদান দিয়ে ফুল বা ফলের বেদির সুরক্ষা অনেক বেশি কার্যকর৷ সডাস্ট, ডিমের খোসা, বালি, ছাই, বা কফি গ্রাউন্ড করার পর অবশিষ্ট অংশ শামুক মোটেই পছন্দ করে না৷ এই প্রাণী আর্দ্রতা চায়৷
শামুক তাড়াতে হাস অত্যন্ত কার্যকর হলেও সেই প্রাকৃতিক সমাধানসূত্রের জন্য বেশ পরিশ্রম করতে হয়৷ সমান পরিমাণ দারচিনি ও মরিচের মিশ্রণও বেশ কার্যকর কৌশল৷ জার্মানির শামুক দারচিনির গন্ধ চেনে না৷ ফলে শামুক লেটুস পাতার গন্ধও পায় না৷ বিশেষজ্ঞ হিসেবে হাইকে বোমখার্ডেন বলেন, ‘‘শামুক একবার কোনো উদ্ভিদে লাগানো মরিচের স্বাদ পেলে আর কখনো সেখানে ফিরবে না৷ সেই বিপদের বার্তা ছড়িয়েও দেবে৷''
সেই মিশ্রণ কিছুটা পাতার উপর, কিছুটা মাটির উপর ছড়িয়ে দিতে হবে৷ সম্পূর্ণ বিষমুক্ত হলেও শামুকের একেবারেই পছন্দের স্বাদ নয় সেটা৷
ইয়ুলে স্টাইনমেৎস/এসবি