বাইডেনের শেষ সময়ে দুই মার্কিনিকে মুক্তি দিলো তালেবান
২১ জানুয়ারি ২০২৫কাবুল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক তালেবান যোদ্ধার মুক্তির বিনিময়ে আফগানিস্তানে আটক দুই অ্যামেরিকানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, "অ্যামেরিকায় বন্দি এক আফগান যোদ্ধা খান মোহাম্মদের বিনিময়ে মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।"
প্রায় দুই দশক আগে মাদক পাচারের অভিযোগে মোহাম্মদকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালত তাকে কারাদণ্ড দেয়।
মার্কিন বিচার বিভাগ সেই সময় মোহাম্মদকে "একজন হিংস্র জিহাদি এবং মাদক পাচারকারী" বলে অভিহিত করেছিল, যিনি "আফগানিস্তানে রকেট ব্যবহার করে মার্কিন সৈন্যদের হত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন।"
মার্কিন গণমাধ্যমে দেশটির মুক্তি পাওয়া নাগরিকদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের নাম রায়ান করবেট এবং উইলিয়াম ম্যাকেন্টি।
পরিবারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
২০২২ সালে ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে আফগানিস্তান গেলে তালেবান করবেটকে অপহরণ করে আটক করে।
করবেটের পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "আমাদের জীবনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং অনিশ্চিত ৮৯৪ দিনের পর রায়ানকে জীবিত রাখা এবং তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের হৃদয় ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসায় ভরে উঠেছে।"
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে তাদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে করবেটের পরিবার। মুক্তির আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য কাতারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।
অন্য বন্দিদের কী হবে?
এখনও দুই মার্কিন নাগরিক - জর্জ গ্লেজম্যান এবং মাহমুদ হাবিবি - তালেবানের হেফাজতে রয়েছেন।
গুয়ানতানামো বেতে আটক অবশিষ্ট বন্দিদের মধ্যে একজন মুহাম্মদ রহিমের বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য বাইডেন প্রশাসন একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছিল।
বাইডেন প্রশাসনের শেষ সময়ে চূড়ান্ত হওয়া বন্দি বিনিময়টি এমন এক সময়ে বাস্তবায়িত হলো, যখন মার্কিন-তালেবান সম্পর্কে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। কাতারের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার একটি বিরল উদাহরণ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে "দীর্ঘ এবং ফলপ্রসূ আলোচনার" প্রশংসা করেছে তালেবানও। গোষ্ঠীটি বলেছে, "দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং উন্নয়নে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপগুলোকে ইতিবাচকভাবেই দেখছে ইসলামিক আমিরাত।"
মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ, বিশেষ করে নারীদের ওপর বিধিনিষেধের কারণে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এখনও পরিপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি।
এডিকে/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)