1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৌরবিদ্যুতের গ্রিড?

৬ ডিসেম্বর ২০১৭

স্ট্যানফোর্ড থেকে জার্মানি হয়ে ঢাকায় এসেছেন সেবাস্টিয়ান গ্রো সলশেয়ার নামের একটি স্টার্টআপ শুরু করার জন্য৷ উদ্দেশ্য: প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপারীদের একক সোলার প্যানেলগুলোকে জুড়ে সৌরবিদ্যুতের গ্রিড সৃষ্টি করা৷

https://p.dw.com/p/2opj5
ছবি: ME SOLshare Ltd.

দক্ষিণ বাংলাদেশের রাঙ্গাবালী দ্বীপ৷ এখানে বিদ্যুতের তারের চাহিদা খুব বেশি, কেননা সরকারি বিদ্যুৎ এখনও এখানে এসে পৌঁছয়নি৷ অপরদিকে বাজারের বহু ব্যাপারী দোকানের মাথায় সোলার প্যানেল বসিয়েছেন৷ সলশেয়ার কোম্পানি সেই একক প্যানেলগুলোকে জুড়ে গোটা মোল্লার বাজার এলাকার জন্য একটি গ্রিড সৃষ্টি করতে চায়৷

সলশেয়ার-এর হেড অফ অপারেশনস আজিজা সুলতানা বলেন, ‘‘আমাদের দেখতে হবে, কোথায় সোলার হোম সিস্টেমগুলির সংখ্যা বেশি৷ শুধুমাত্র সেখানেই গ্রিড সৃষ্টি করা সম্ভব৷ প্রযুক্তিগত পরিস্থিতি জানার পরেই আমরা অগ্রণী হতে পারবো৷’’

ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে সৌরবিদ্যুৎ

একটি স্থানীয় গ্রিড থেকে ব্যাপারীদের অনেক সুবিধা হবে৷ তারা তাদের সোলার প্যানেলগুলো একসঙ্গে চালু করে বিদ্যুৎ কেনাবেচা করতে পারবেন, প্রতিবেশীর কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারবেন ও সেই বিদ্যুৎ দিয়ে আরো বেশি যন্ত্র চালাতে পারবেন৷ সলশেয়ার কোম্পানি সেজন্য একটি বিশেষ পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউটর বার করেছে, যা বিদ্যুৎ দেওয়া বা নেওয়ার বিশদ হিসেব রাখতে পারে৷ এই ডিস্ট্রিবিউটরগুলোর নাম রাখা হয়েছে সলবক্স৷

বাজারের ব্যাপারী ও সৌরশক্তি

মোল্লার বাজারের ১৫০ জন ব্যাপারী শিগগিরই একটি গ্রিডে একত্রিত হবেন৷ গোটা বাংলাদেশে এ ধরনের গ্রিডের ব্যাপক সুযোগ আছে, কেননা সারা বিশ্বে এদেশেই বেসরকারি মালিকানার একক সোলার প্ল্যান্টের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি: সব মিলিয়ে ৪০ লাখের বেশি৷

সলবক্স বাংলাদেশেই তৈরি করা হয়৷ স্টার্টআপটি এখনও মুনাফা করতে পারছে না বটে, কিন্তু তাদের এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কিংবা জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড-এর মতো পৃষ্ঠপোষক আছে৷ সলবক্সের প্রধান এককালে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ছিলেন৷

সলশেয়ার-এর  সিইও সেবাস্টিয়ান গ্রো জানালেন, ‘‘আমরা চিরকাল এখানে উৎপাদন করিনি৷ গোড়ায় আমরা স্ট্যানফোর্ড থেকেই আমাদের পণ্যটির বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি, পরে সে কাজে বার্লিনে বাসা গেড়েছি৷ কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি৷ আমরা প্রথম সাফল্য পেয়েছি এখানে উৎপাদন শুরু করার পর৷ এখানে তৈরি করে তারপর দেখা, পণ্যটা কীভাবে বাস্তবে কাজে লাগানো হচ্ছে – সত্যিই দারুণ৷’’

তাঁর কোম্পানির জন্য গ্রো জার্মানি থেকে বাস উঠিয়ে ঢাকায় এসেছেন, এদেশে ব্যবসা করার ধরণ-ধারণ শিখেছেন ও কাজ চালানোর মতো বাংলাও শিখেছেন৷

‘বাংলাদেশ ই-মোবিলিটির পক্ষে আদর্শ’

গ্রো-র সমস্যা হল, সরকারি গ্রিডে বিদ্যুৎ দিয়ে কোনো দাম পাওয়া যায় না৷ আগামী বছরের শেষে নির্বাচন, কাজেই তার আগে এক্ষেত্রে কিছু বদলাবে বলেও মনে হয় না৷ ওদিকে সরকার আণবিক চুল্লি তৈরির সপক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে সচেষ্ট৷ অথচ গ্রো দেখছেন, বাংলাদেশে ‘‘অবিশ্বাস্য রকমের ঘন জনবসতি৷ আবার দূরত্বগুলোও খুব বেশি নয়৷ ইলেক্ট্রোমোবিলিটি বা ব্যাটারি-চালিত গাড়ির জন্য এর চাইতে ভালো পরিস্থিতি হতে পারে না৷’’

পরিবহণের ক্ষেত্রে সারা দেশে ইতিমধ্যেই প্রায় আট লাখ ইলেক্ট্রো রিকশা চলেছে, যেগুলো চার্জ করার কাজে সলশেয়ার সংশ্লিষ্ট হতে চায়৷ সলশেয়ার পরীক্ষা করে দেখছে, স্থানীয় সৌরশক্তির গ্রিড থেকে এই রিকশাগুলির ব্যাটারি রি-চার্জ করা যায় কিনা৷ গ্রো জানালেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল যে, গ্রামগুলির বিকাশ ঘটবে৷ বর্তমানে ওরা সৌরশক্তি থেকে পাওয়া বিদ্যুতের আদানপ্রদান করছেন, ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার আরো কার্যকর হচ্ছে৷ কিন্তু গ্রামের আমদানি বাড়ানোর জন্য বাইরে থেকে টাকা আসা প্রয়োজন৷ রিকশা চালকরা যদি ব্যাটারি চার্জ করার জন্য বাইরে থেকে গ্রামে আসেন, তাহলে উন্নয়নের আরো একটা রাস্তা খুলে যাবে৷’’

মারিয়ন হ্যুটার/এসি