বাঁশদ্রোণীর বেহাল রাস্তায় পেলোডারের ধাক্কায় ছাত্রের মৃত্যু, বিক্ষোভ, ওসি ঘেরাও
বুধবার সকালে বাঁশদ্রোণীতে পেলোডারের ধাক্কায় ১৫ বছর বয়সী এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। তারপর শুরু প্রবল বিক্ষোভ।
ভাঙা রাস্তায় পেলোডারের ধাক্কা
বাঁশদ্রোণীর দীনেশনগরে রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। বিশাল বিশাল গর্ত। সেগুলি জলে ভর্তি। বছরের পর বছর তা সারানো হয় না। বুধবার সেই রাস্তা দিয়ে সাইকেল করে পড়তে যাচ্ছিল সৌম্য শীল। আর পেলোডার পিছনের দিকে আসছিল। সৌম্য তা দেখে রাস্তার একপাশে দাঁড়ায়। গর্তে বেসামাল হয়ে পেলোডারের সামনের ঝুলন্ত অংশ ঘুরে গিয়ে সৌম্যকে আঘাত করে, তার মাথা ভয়ংকরভাবে ফেটে যায় ও তার মৃত্যু হয়।
চালক পলাতক
ঘটনার প্রায় দেড়ঘণ্টা পরে পুলিশ আসে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ততক্ষণে পেলোডারের চালক পালিয়েছে। মানুষের রাগ গিয়ে পড়ে পেলোডারের উপর। কিছু মানুষ তাতে ভাঙচুর চালায়। বাকিরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রশ্ন করেন, কেন বছরের পর বছর রাস্তা এরকম অবস্থায় থাকবে? তাদের দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলারকে এসে জবাবদিহি করতে হবে।
ফলবিক্রেতার ছেলে
মৃত সৌম্যর বাবা ফল বিক্রি করেন। সম্প্রতি তিনি একটি টোটো কিনেছেন। মা বাড়িতে ব্যাগ সেলাই করেন। এভাবেই তারা দুই ছেলেকে পড়াচ্ছেন। সৌম্য ছিল বাড়ির বড় ছেলে। সে সাইকেলে করে প্রাইভেট শিক্ষকের বাড়িতে পড়তে যাচ্ছিল। তখন এই ঘটনা ঘটে।
উত্তেজনা ছড়ায়
বাঁশদ্রেোণীতে এই রাস্তার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। সাত বছর ধরে এখানে ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। বারবার বলা সত্ত্বেও রাস্তা ঠিক হয় না। রাস্তায় বিশাল বিশাল গর্ত। সেগুলি জলে ভরা ছিল। ঘটনার পর উত্তেজিত মানুষ পেলোডার ভাঙচুর করে। তারা কাউন্সিলারকে এলাকায় আসার দাবি জানায়। তিনি যাননি।
পুলিশের ওসি ঘেরাও
উত্তেজনা বাড়ছে দেখে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। তাদের দেখে মানুষ আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা পাটুলি থানার ওসি এবং অন্য কর্মীদের ঘেরাও করে রাখে। জলের মধ্যে ওসিকে ঘণ্টাকয়েক দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাকে ঘিরে রাখেন নারীরা। তাদের দাবি, কাউন্সিলারকে আসতেই হবে। এই সময় কিছু মানুষ নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে।
উত্তেজনা আরো বাড়ে
এরপর উত্তেজনা আরো বাড়ে। স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা দেয়, বহিরাগতরা তাড়া খেয়ে টিভির ক্যামেরা ও বুমে ধাক্কা মেরে পালাতে থাকে। পরে পুলিশ এসে ওসিকে উদ্ধার করে। এসিপি বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু বিজেপি-র এক নেতাকে গ্রেপ্তার করার পর বিজেপি কর্মীরা থানা ঘেরাও করে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় সারারাত থানায় বসে আছেন।
রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায় গ্রেপ্তার
বিজেপি নেত্রী ও সাবেক সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বাঁশদ্রোণী-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সারারাত থানায় অবস্থান করেন। সকালেও তিনি থানাতেই ছিলেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।