1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
উদ্ভাবনউগান্ডা

বন্যপ্রাণী আইন কঠোর করায় উগান্ডায় হাতিরা ফিরছে

২৬ এপ্রিল ২০২৩

২০১৯ সালে উগান্ডায় বন্যপ্রাণী রক্ষার আইন কঠোর করা হয়৷ সে কারণে দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়েছে৷ এবার সাদা গন্ডারদেরও বনে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে৷ প্রায় ৪০ বছর আগে শিকারিদের কারণে তারা হারিয়ে গিয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/4QYgW
২০১৯ সালে উগান্ডায় বন্যপ্রাণী রক্ষার আইন কঠোর করা হয়৷ সে কারণে দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়েছে
২০১৯ সালে উগান্ডায় বন্যপ্রাণী রক্ষার আইন কঠোর করা হয়৷ সে কারণে দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়েছেছবি: Jack Losh

বন্যপ্রাণী শিকারিদের হাত থেকে উগান্ডার ন্যাশনাল পার্ক রক্ষায় কাজ করেন মার্গারেট কাসুম্বা৷ কাজটা খুব বিপজ্জনক৷ তিনি বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে আমাদের এমনসব শিকারির সঙ্গে লড়তে হয় যাদের কাছে আমাদের মতোই অস্ত্র থাকে৷ সশস্ত্র বন্যপ্রাণী শিকারি৷ অনেকসময় প্রাণী শিকার করতে তারা অস্ত্র নিয়ে আসে৷ আমাদেরও অস্ত্র রাখতে হয় এবং তাদের সঙ্গে লড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়৷''

রেঞ্জারদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে উগান্ডায় হাতির সংখ্যা বেড়ে এখন পাঁচ হাজার পর্যন্ত হয়েছে৷ তবে যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি৷

২০১৯ সালে কর্তৃপক্ষ রেকর্ড পরিমাণ হাতির দাঁত উদ্ধার করেছিল- ওজনে যা তিন টনের বেশি ছিল৷ দাঁতের এই পরিমাণ থেকে ধারণা করা যায়, শিকারিদের হাতে সাড়ে তিনশ'র বেশি হাতি মারা পড়েছে৷

কাসুম্বা জানান, ‘‘প্রতিবছর গড়ে আমরা প্রায় চারশজনের বিচার করি৷ বন্যপ্রাণী পাচার, শিকার, অবৈধভাবে বনে প্রবেশসহ নানা অপরাধে এসব বিচার হয়ে থাকে৷''

ন্যাশনাল পার্কগুলোর মধ্যে নিয়মিত সশস্ত্র টহল দেয়ার মাধ্যমে শিকারিদের সবসময় চাপে রাখতে হয়৷

উগান্ডার একটি বড় লক্ষ্য আছে: বনে সাদা গন্ডার ফিরিয়ে আনতে চায় দেশটি৷ ৪০ বছর আগে শিকারিদের কারণে তারা হারিয়ে গিয়েছিল৷

বর্তমানে উগান্ডার একমাত্র জিওয়া অভয়ারণ্যে সাদা গন্ডার আছে৷ ৩৩টি গন্ডারকে সারাক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখেন রেঞ্জাররা৷

মার্গারেট কাসুম্বা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়িয়েছি, আরও বাড়াচ্ছি৷ নতুন কয়েকজন এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ শিগগির তা শেষ হবে৷ এরপর তারা দলে যোগ দিয়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ শুরু করবে৷ অপরাধ ধরার কৌশলও আমরা উন্নত করেছি৷ অপরাধ শনাক্ত করতে আমাদের তদন্ত বিভাগকে আধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে৷''

কঠোর আইনে হাতি রক্ষা

তিনি বলছেন, শিকারিদের ধরে বিচার করাও গুরুত্বপূর্ণ৷ ২০১৯ সালে সরকার বন্যপ্রাণী শিকার ও বেচাকেনার অপরাধের শাস্তি বাড়িয়েছে৷ ‘‘নতুন আইনের কারণে আমাদের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে৷ কারণ অপরাধীরা এখন জানেন, অপরাধ করে ধরা পড়লে তাদের কী ধরনের শাস্তি পেতে হবে,'' বলেন কাসুম্বা৷

উগান্ডায় বন্যপ্রাণী শিকার, পাচার ও এসব প্রাণীদের দিয়ে তৈরি পণ্য বিক্রির শাস্তি দিতে বিশেষ আদালত গঠন করা হয়েছে৷ অপরাধের শাস্তিও এখন অনেক বেশি৷

সম্প্রতি হাতির দাঁতের এক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷

কাসুম্বা বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা বড় অর্জন, কারণ আমরা সবাই এটা চেয়েছিলাম৷ বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের জন্য আমাদের একটা আদালত আছে৷ এটা আমার কাছে একটা অনেক বড় অর্জন৷ আগে হত্যা, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো মামলার সঙ্গে আমাদের লড়তে হত৷ রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত মামলার কথা আপনি ভাবতে পারেন? কোন শুনানিতে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে আপনার মনে হয়?''

সাম্প্রতিক সময়ে হাতির সংখ্যা বেড়েছে৷ এছাড়া বিপন্নপ্রায় পাহাড়ি গরিলার সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে৷

মার্গারেট কাসুম্বা এখন আশা করছেন সাদা গন্ডাররাও শিগগির বনে ফিরবে৷

মুগামবওয়া, শ্নাইডার/জেডএইচ