1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাবাংলাদেশ

নির্বাচনের নাট্যাঙ্ক: রাজনীতির বিচার ও বিচারের রাজনীতি

৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি সংবাদ শিরোনাম হলো-মৃত ব্যক্তিকে 'দৌড়ে পালাতে' দেখেছে পুলিশ৷ ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয় প্রতিবেদনটি৷

https://p.dw.com/p/4ZwIP
নির্বাচনি স্বচ্ছ্ব ব্যালট বাক্স
আধুনিক যুগে জনমত যাচাই ও সরকার পরিবর্তনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো নির্বাচন৷ কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance

এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কর্মী গাজীপুরের আমিন উদ্দিন ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি মারা গেলেও গত ২৮ অক্টোবরের নাশকতার এক মামলায় স্থানীয় পুলিশ তাকে আসামী করেছে৷ পুলিশের এক উপপরিদর্শক তাকে ঘটনার সময় দৌড়াতে দেখেছিলেন৷ গত এক বছরে দেশের পত্রপত্রিকায় এমন খবর আরো প্রকাশিত হতে দেখা গেছে৷ যেমন, ‘লন্ডনে থেকেও নাশকতা মামলার আসামি প্রবাসী বিএনপি নেতা' (আজকের পত্রিকা, ৫ জুন, ২০২৩)৷ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে, এমন গায়েবি মামলায় খোদ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বিব্রত (দেশ রূপান্তর, ১০ আগস্ট, ২০২৩)৷ প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশের এমন গায়েবি মামলা, বিরোধী দল ও নির্বাচন বিরোধীদের ধড়পাকড়ের মহড়া আমরা দেখে থাকি৷ এটাকে বঙ্গীয় নির্বাচনের নাটকের অংশবিশেষ বলা যায়৷

বাংলাদেশের নির্বাচন যেমন ‘গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার সূত্র' মতে অনুষ্ঠিত হয়, তেমনি নির্বাচনের আগে কিছু নাটক অবধারিতভাবে মঞ্চস্থ হয়৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রয়াত সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর এক কলামে লিখেছিলেন, ‘বঙ্গীয় নির্বাচন হলো নাটকবিশেষ৷ তবে একাঙ্কিকা নয়, পঞ্চাঙ্ক নাটক'৷ অর্থাৎ বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা অবধারিতভাবে পাঁচ ধরনের নাটক দেখতে পাই৷ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নাট্যাঙ্কের সংখ্যা আরো বেড়েছে৷ কিংস পার্টি গঠন, এক সময়ের মিত্রদের সাথে আসন ভাগাভাগির মতানৈক্য, নিজ দলের নেতাদের ডামি বা উপপ্রার্থী করা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর হিড়িক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নাট্যাভিনয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে৷ বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনে আমরা দেখেছিলাম উপপ্রধান সরকারি দল জাতীয় পার্টি ও সরকারি জোটের বামদলগুলোকে নিয়ে সি-টিম গঠনের নাটক৷ সেখানে এবার দেখলাম 'খেলনা বন্দুক' খ্যাত উপপ্রার্থী দাঁড় করানোর নাটক৷ মনোনয়নপত্র জমাদান, বাতিল, আপীল নিষ্পত্তি, প্রত্যাহার ও নির্বাচনী প্রচারাভিযানে নিয়তই আমরা কিছু নাটক দেখি এবং দেখতে দেখতে অভ্যস্তও হয়ে পড়ছি৷ বঙ্গীয় নির্বাচনে এই নাট্যাভিনয়ের সাথে আইন ও বিচার ব্যবস্থার সংশ্লিষ্টতা আছে, যেখানে দেখা যায়, জোর যার আইন তার৷ কারণ নাট্যাভিনয়ের কিছু মুখ্য চরিত্র, যেমন নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে একপক্ষের দিকে ঝুঁকতে দেখা যায়৷ অথবা তারা 'চোখ থাকিতেও অন্ধের' ভূমিকা পালন করে৷  

বঙ্গীয় নির্বাচনের নাট্যাঙ্কের প্রথম দৃশ্যে দুটি দিক থাকে৷ একটি হলো নির্বাচন বিরোধীদের জ্বালাও পোড়াও ও সহিংস কর্মকাণ্ড, অন্যটি হলো বিরোধী নেতাকর্মীদের ঢালাও গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে মামলা৷ গত কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, নির্বাচনের পরপরই এসব মামলা ডিপফ্রিজে চলে যায়৷ সরকার ও পুলিশ প্রয়োজন মতো সেসব মামলা ফ্রিজ থেকে সময়ে সময়ে বের করে৷ ইতিমধ্যে দেশের পত্রপত্রিকায় এমন মামলার বেশ কয়েকটি খবর প্রকাশিত হয়েছে৷ যেমন, ‘কারও ৪৫০, কারও ৩০০, বিএনপি নেতাদের কার বিরুদ্ধে কত মামলা (প্রথম আলো, ২০ সেপ্টেম্বর), দেড় লাখ মামলা মাথায় ৫০ লাখ নেতাকর্মী, প্রতিদিন আদালতে যেতে হচ্ছে অনেককে (কালবেলা, ২৩ সেপ্টেম্বর)৷ ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪,৫৫১টি মামলা হয়েছিল (যুগান্তর, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)৷ কিন্তু গত ১০ বছরে এসব মামলার বিচার হয়েছে এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ অথচ ২০১৪ সালে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছিল৷ ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসকারীদের যদি যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা যেত তাহলে এখন যে জ্বালাও পোড়া হচ্ছে তা অনেকখানি কমে যেত৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আমরা দেখেছিলাম, ওই নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু পরে সেসব মামলা পুলিশ ও আদালতের নথিতেই সীমিত থেকে ছিল৷

বাংলাদেশের নির্বাচনী নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কটি দেখা যায় মনোনয়নপত্র জমাদান ও বাতিলের প্রক্রিয়ায়৷ মনোনয়নপত্র জমাদানের নামে মনোনয়ন শোভাযাত্রা শবযাত্রার বহরকে ছাড়িয়ে গেলেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার হেডমাস্টার নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা থাকে কৈফিয়ত তলব করা পর্যন্তই৷ আর মনোনয়নপত্র বাতিলের যে হিড়িক সেটা দেখে সত্যিই বিস্ময় জাগে যে, বিশ্বের আর কোনো দেশের নির্বাচনে এত মনোনয়নপত্র বাতিল হয় কীনা৷ যাচাই-বাছাইকালে এবার রিটার্নিং কর্মকর্তারা ২৭১৬ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ৭৩১ জনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন৷গাণিতিক হিসাবে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ হার ছিল ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ আর ২০১৪ সালে ছিল ২১ শতাংশ৷ বরাবরের মত এখানেও নির্বাচন কমিশনের বাছাই প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে৷ রাজনৈতিক মামলাগুলোর মতো রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে- এমন অভিযোগ উঠছে৷ এ ধরনের অভিযোগ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও উঠেছিল৷  

আধুনিক যুগে জনমত যাচাই ও সরকার পরিবর্তনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো নির্বাচন৷ বিশ্বে গণতন্ত্র আছে এমন যে কোনো দেশে অবধারিতভাবে নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ সরকার গঠনের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন হলো রাজনীতির একেবারে শেষ ধাপ৷ কিন্তু বাংলাদেশে সরকার গঠনের চিন্তাই সব রাজনৈতিক দলের মাথায় আগে আসে৷ সরকার গঠনের জন্য যতটুকু দরকার, যে কোনো উপায়ে ততটুকু নির্বাচন করাটাই এখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অর্থাৎ সরকার গঠনই বাংলাদেশে মুখ্য যেখানে নির্বাচন উপলক্ষ হিসেবে কাজ করে৷ এ কারণে বাংলাদেশে রাজনীতি থাকুক আর না থাকুক, গণতন্ত্রের টিকিটি খুঁজে পাওয়া যাক বা না যাক, নির্বাচন নিয়ে ব্যাকুল হওয়ার মতো রাজনীতিকের ঘাটতি নেই৷ এক সময় বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মীয় মতাদর্শের ভিত্তিতে অনেকগুলো ধারা ছিল৷ কিন্তু এখন একটিই ধারা-সেটি হলো ক্ষমতাকেন্দ্রিক ধারা৷ যে কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অনেক আগে থেকেই সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা৷ রক্ত মাংসের মানুষের গণতন্ত্র পরিণত হয়েছে মূর্তিবাদী গণতন্ত্রে৷

বাংলার ভূখণ্ডে প্রথম অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৫৪ সালে৷ চুয়ান্নর নির্বাচনের তাৎপর্য শুধু পাঁচ বছর প্রদেশ শাসনের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না৷ বরং এই নির্বাচন বাঙালি জাতির ভবিষ্যত রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছিল৷ এই নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমিন পরাজিত হলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, সেটি নির্বাচনের প্রশাসনের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ না করার জন্য৷ এরপর আরেকটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছিল সত্তর সালে৷ সেখানেও জেনারেল ইয়াহিয়া হস্তক্ষেপ করেননি৷ আর ৫২ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যে ১১টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে মাত্র চারটি নির্বাচন সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ছিল৷ অন্য নির্বাচনগুলো দেশ ও দেশের বাইরে নানা প্রশ্ন এবং বিতর্ক রয়েছে৷ ১৯৯১ সালের পর থেকে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ছাড়া) সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দিকে আমাদের এক ধরনের ইতিবাচক অভ্যস্ততা তৈরি হচ্ছিল৷ সামরিক সরকার আমলের ‘চর দখলের নির্বাচন' কিংবা ‘ভোট ডাকাতির নির্বাচন' থেকে আমরা সরে আসতে পেরেছিলাম৷ ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ আগ্রহ ভরে ভোট দিত, তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল৷ ভোটের দিন ভোটাররা নিজেদেরকে ক্ষমতাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ মনে করতেন৷ যেমনটা ছিল ১৯৫৪ ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনে৷ কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, মানুষ একইসাথে রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়েছে৷ নির্বাচন এখন মানুষের কাছে একটি সার্কাসের খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মানুষের সর্বজনীন ভোটাধিকার এখন স্বল্পজনীন ভোটাভুটিতে পরিণত হয়েছে৷

মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী
মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী, শিক্ষক, গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: bdnews24.com

অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত কাজ যদি বারবার হতে থাকে, তখন তাতে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যায়৷তা নিয়ে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়াও থাকে না৷ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পালনের নিমিত্ত মাত্র৷ আনুষ্ঠানিকতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখানে অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে৷ নির্বাচনের সবচেয়ে বড় অংশীদার জনগণের সম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে৷ বঙ্গীয় নির্বাচনে একই ধরনের নাট্যাঙ্কগুলো বারবার দৃশ্যায়িত হওয়ায় নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে৷ দেশে যে নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সে কথা কেতাবে থাকলেও বাস্তবে মানুষ এর প্রতিফলন দেখছে না৷ বিচার একটি রাজনীতি-নিরপেক্ষ বিষয় হওয়ায় যে কোনো বিচারকাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের চোখ বন্ধ রেখে ন্যায়দণ্ড নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে হয়৷ রাজনৈতিক অপরাধ ও ঘটনাগুলোর বিচার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলেও কি ধরণের পরিণতি হতে পারে সেটি ভারতীয় লেখক এ জি নূরানী'র ‘ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল ট্রায়ালস: ১৭৫৭-১৯৪৭'-এ আমরা দেখতে পাই৷

বাংলাদেশে নির্বাচনী আওয়াজ উঠলে যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি আনুষ্ঠানিক রূপ পেয়ে যাচ্ছে৷ সাথে খুবই অযাচিতভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অক্ষমতা ও পক্ষপাতিত্ব৷ বঙ্গীয় রাজনীতিতে নির্বাচনী নাট্যাঙ্কগুলো নতুন কিছু মাত্রা যোগ করছে বটে, কিন্তু তা রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে৷মানুষের যেমন চোখ, কান, নাকসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থাকে তেমনি রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগসহ অনেক সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থাকে৷ এগুলো যদি ঠিকমত কাজ করতে না পারে তাহলে রাজনীতিতে নেমে আসে তুষারযুগ, গণতন্ত্র চলে জগাখিচুড়ির মতো৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য