ফেসবুক : এক ছাত্রাবাস থেকে সারা বিশ্বে
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক যাত্রা শুরু করে৷ বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্ক৷ তবে নানাসময়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগও উঠেছে৷
শুরুর কথা
১৯ বছর বয়সি মার্ক সাকারবার্গ ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে তার রুমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করেন৷ ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিন বন্ধুর সঙ্গে মিলে তিনি thefacebook.com চালু করেন৷ উত্তর অ্যামেরিকার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল৷
প্রথম বিনিয়োগ প্রাপ্তি
পেপল-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা পিটার টিলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছিল সাকারবার্গের কোম্পানি৷ এরপর ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ফেসবুক-এ পরিণত হয়৷
সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা
২০০৮ সালে মাইস্পেসকে সরিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে পরিণত হয় ফেসবুক৷ পরের বছর মোবাইল অ্যাপ চালু হয়৷
টাইম ম্যাগাজিনের স্বীকৃতি
২০১০ সালে টাইম ম্যাগাজিন সাকারবার্গকে ‘পার্সন অফ দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করে৷ ‘আমাদের প্রতিদিনকার জীবনযাপনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনায়’ জাকারবার্গকে বেছে নেওয়া হয়৷
তরুণদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠা
২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় ফেসবুক আরব তরুণদের মতপ্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছিল৷
ইনস্টাগ্রাম কেনা
২০১২ সালে এক বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক৷
১০০ কোটি পেরোনো
২০১২ সালের অক্টোবরে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যায়৷
হোয়াটসঅ্যাপ ক্রয়
২০১৪ সালে ১৯ বিলিয়ন ডলার দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় ফেসবুক৷
অভিযোগ
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া প্রভাব বিস্তার করেছিল বলে অভিযোগ আছে৷ এই কাজে রাশিয়া ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বলে অভিযোগ৷
ফেসবুকের তথ্য চুরি
২০১৮ সালে ব্রিটিশ কনসাল্টিং ফার্ম ‘ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা’ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়৷ মার্কিন কংগ্রেসের মুখোমুখি হয়ে জাকারবার্গ ভুয়া খবর, নির্বাচনে বিদেশি প্রভাব ও হেট স্পিচ বন্ধ এবং ডাটা প্রাইভেসি রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেন৷
নাম পরিবর্তন করে মেটা
২০২১ সালে ফেসবুকের কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে মেটা রাখা হয়৷ সাকারবার্গ মনে করেন ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হবে মেটাভার্স৷ ফেসবুকের নাম মেটা রাখার এটিও একটি কারণ৷
এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয়
তরুণ প্রজন্ম টিকটিক বা স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারে আগ্রহী হলেও ফেসবুক এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্ক৷ কারণ বর্তমানে ফেসবুকের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৯৬ কোটি৷
এক্স-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালে মেটা এক্স-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ‘থ্রেডস’ অ্যাপ চালু করে৷
শিশুদের ক্ষতি করার অভিযোগ
২০২৩ সালের অক্টোবরে কয়েকটি মার্কিন রাজ্য ফেসবুকের বিরুদ্ধে শিশু ও টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করার অভিযোগ আনে৷ এর প্রেক্ষিতে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে মেটা৷