ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি

পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার ডেইলি স্টার বাংলা৷

স্থানীয়দের কাছ থেকে পরশুরামে একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে৷ ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ আছে৷ কয়েকটি ডিঙ্গি নৌকায় পানিবন্দিদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য৷ উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছে ফায়ার সার্ভিস৷ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে৷

জেলা প্রশাসন, পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, তিন উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে ও হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন৷

গত ২ জুলাই থেকে এই অঞ্চলে এবারসহ তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে৷ ২ আগস্ট দ্বিতীয় দফা বন্যায় বেড়িবাঁধের ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল৷ এবার বাঁধের সেই ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে তিন উপজেলায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ অনেক এলাকায় গতরাত থেকে বিদ্যুৎ নেই৷

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘মুহুরি, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুলগাজী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন৷ বহু বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে৷''

মুহুরি ও সিলোনিয়া নদীর বাধে নতুন ফাটল না দেখা দিলেও আগের ফাটল দিয়ে এবং বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ বর্তমানে ফেনী-বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশ প্লাবিত হওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷

ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার বেশীরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে৷ সব ধরনের গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে৷ এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ৷

এদিকে, ফেনী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষদের উদ্ধারে নেমেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি)৷

বিজিবি এক বিবৃতিতে জানায়, গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে মুহুরি নদীর বাঁধ ভেঙে ফেনী জেলার পরশুরাম, ছাগলনাইয়া এবং ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়৷ সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বিজিবি নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷ পাশাপাশি উদ্ধারকৃতদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও জরুরি শুকনা খাবার বিতরণ করছে৷ বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিজিবি উদ্ধার ও অন্যান্য সহায়তামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলেও জানানো হয়েছে৷

এপিবি/এসিবি