ফিলিপাইন্স’এ পাওয়া গেল হাসিমুখো পোকা
৯ জুন ২০১১দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইন্স'এর হাজার হাজার দ্বীপের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য৷ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস এবং কিছু স্থানীয় প্রতিষ্ঠান মিলে আবিষ্কার করেছে অদ্ভুত কিছু প্রাণী৷ এর মধ্যে রয়েছে হাসিমুখো ‘সিকাডা' জাতীয় পোকা, বিড়ালের মতো দেখতে হাঙর মাছ ইত্যাদি৷ পাওয়া গেছে একেবারে নতুন ধরণের তারামাছ, ইল মাছ সহ অনেক সামুদ্রিক প্রাণী৷ ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানী রিচার্ড মই জানিয়েছেন, তাঁরা কমপক্ষে ৭৫টি নতুন প্রজাতির প্রাণী আবিষ্কার করেছেন৷ তবে এখনো বিশ্লেষণের কাজ শেষ হয় নি৷ তখন হয়তো তালিকায় আরও নতুন নাম যোগ হবে৷ শুধু তারামাছ ও সি আর্চিন জাতীয় ২০টি প্রাণী আবিষ্কারের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ তাঁর সহকর্মী জন ম্যাককস্কার জানালেন বিড়ালের মতো দেখতে হাঙর মাছের কথা, যাদের পিঠের রঙ খয়েরি, তার উপর ডোরা কাটা দাগ৷ পেটের রঙ সাদা৷ এর আগে অন্য কোনো হাঙরের গায়ে এমন রঙ দেখা যায় নি৷ সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ২,০০০ মিটার গভীরে মাত্র ৬০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ এই হাঙর পাওয়া গেছে৷ তাদের প্রধান খাদ্য চিংড়ি জাতীয় মাছ৷ বিজ্ঞানীদের দলের অপর সদস্য টেরি গসলাইনার সদ্য আবিষ্কৃত ইল মাছের কথাও জানালেন৷
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ প্রাণী বোধহয় হাসিমুখো পোকা৷ শুধু মুখে হাসি লেগে নেই, তার ডাক শুনলে মনে হবে যেন খিলখিল করে হাসছে৷ স্থানীয় মানুষজন এতদিন এই হাসি শুনে ভয় পেত৷ লুজন দ্বীপের মাউন্ট বানা-হ আগ্নেয়গিরির প্রায় ২,১৫৮ মিটার উচ্চতায় এই অদ্ভুত পোকা পাওয়া গেছে৷ এর আগে কেউ এমন পোকা দেখেছে কি না, তা জানতে ফ্রান্সের এক মিউজিয়ামে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে৷ লুজন দ্বীপেই আরও পাওয়া গেছে নতুন প্রজাতির মাকড়শা৷ বিজ্ঞানীদের দলে বড় বড় বিশেষজ্ঞ থাকায় তারা সহজেই এই সব প্রাণীকে একেবারে নতুন বলে চিহ্নিত করতে পেরেছেন৷ তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে গবেষণাগারে কিছু পরীক্ষা চালানো হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে৷
এমন এক ঘটনার পর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আবিষ্কার না হলে এই সব প্রাণী হয়তো সবার অগোচরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারতো৷ কারণ ফিলিপাইন্স'এ দূষণ যে মাত্রায় বাড়ছে, ও উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের উচ্চতা যেভাবে বেড়ে চলেছে, সেকারণে গোটা এলাকায় প্রাণীজগত এমনিতেই বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ এবার সদ্য আবিষ্কৃত এই সব প্রাণীকে বাঁচাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক