প্রাণীরা যখন শিক্ষক
প্রাণীরা শুধু মানুষের বিশ্বাসী বন্ধু নয়, প্রাণীদের কাছ থেকে মানুষের অনেককিছুই শেখার আছে৷ আর সেই শিক্ষা গ্রহণ করলে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ ও সুন্দর হতে পারে৷ প্রাণীদের সেরকমই কিছু আচরণের নমুনা পাবেন এই ছবিঘরে৷
বেড়াল শান্ত রাখে
‘স্ট্রেস’ বা চাপ? না, এই শব্দ বেড়াল একেবারেই চেনে না৷ আর সেটা ওদের চোখের দিকে সরাসরি তাকালেই বোঝা যায়৷ বেড়ালকে শিকারে নিয়ে যান, মেঝেতে পিঁপড়ে ছড়িয়ে দিন কিংবা শুকনো পাতার ওপর হাঁটুন, কিছুতেই বেড়াল উত্তেজিত হবে না বা ওর গায়ের কোনো পেশী ফুলে উঠবে না৷ তাই বর্তমান যান্ত্রিক জীবনে আমরা বেড়ালের কাছ থেকে নিজেকে শান্ত রাখার কৌশল শিখতে পারি৷
মিশুক প্রাণী ডলফিন
পানিতে যাদের বসবাস, তাদের মধ্যে ডলফিন খুবই মিশুক৷ পানিতে খেলার সময় বা ট্রেনিং-এর সময় সহজেই তারা একে-অপরের বন্ধু হয়ে যায়৷ মানুষের সঙ্গেও তাদের সহজেই বন্ধুত্ব হয়৷ তার ওপর স্মরণশক্তিও ওদের খুব ভালো৷ ২০ বছর পরও ডলফিন তার বন্ধুকে চিনতে পেরে কাছে টেনে নেয়৷ যা সত্যিই মানুষের হিংসে করার মতো৷ আহা মানুষ যদি এমন হতো!
কুকুরের কোনো অভিযোগ নেই!
প্রভুভক্ত কুকুরের একাকী সারাদিন কেমন কেটেছে, তা নিয়ে তার কোনো অভিযোগ নেই৷ বরং মনিব বাড়িতে এসে একটু আদর করলেই সে মহাখুশি৷ কুকুরের ক্ষেত্রে যেটা লক্ষ্যণীয় তা হচ্ছে, সে বিনা শর্তে ভালোবাসে, খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বাস অর্জন করে এবং সহজে ক্ষমাও করতে পারে৷
ঘোড়া ভালো নেতৃত্ব দেয়
ঘোড়া একদিকে যেমন ভদ্র, অন্যদিকে সহসী ও নেতৃত্বে পটু৷ সে সহজেই মনিবের ভাষা বোঝে, যা অন্যদের ‘মোটিভেট’ করতে পারে৷ এই সুন্দর, শান্ত প্রাণী যতক্ষণ না কোনো নির্দেশ পায়, ততক্ষণ চুপচাপ থাকে৷ তবে কিছু বললে সাথে সাথে বুঝে তার প্রতিক্রিয়া জানায়৷ অন্যদিকে কেউ ঘোড়াকে ক্ষেপালে সে মুহূর্তেই প্রতিবাদ করে ওঠে৷ অর্থাৎ ভদ্র, সাহসী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ঘোড়া৷
একতাই বল, দলই শক্তি
‘একের বোঝা দশের লাঠি’ বা ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ – এ সব প্রবাদবাক্যের প্রমাণ আমাদের দিয়েছে ‘পরিযায়ী পাখি’৷ এরা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে ‘টিম স্পিরিট’ বা ‘দলীয় শক্তি’ কাকে বলে৷ আজকের যুগে একা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷ শুধুমাত্র দলের সকলে মিলে কাজ করলেই সাফল্য অর্জন সম্ভব, ঠিক এই পাখিদের মতো৷ তবে দলকে একত্রিত করে সফল হতে প্রয়োজন শক্তিশালী গাইড বা দলনেতা৷
ধৈর্য
প্রাণীরা বর্তমান সময়কেই উপভোগ করে৷ মানুষদের মতো আগামীতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করে না৷ কোনো কিছুতে তাড়াহুড়ো নেই তাদের৷ বেড়ালকে দেখুন, কী সুন্দর নিশ্চন্তে বসে থাকে বা কুকরকে নিয়ে বাইরে বের হলেই লক্ষ্য করবেন যে, তারা শীত, গ্রীষ্ম, বৃষ্টির কথা না ভেবে যতক্ষণ দরকার ততটা সময় ব্যয় করে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে৷ আজকের তরুণরা চাইলে প্রাণীদের কাছ থেকে ধৈর্য ধরা শিখতে পারে৷
শোনায় মনোযোগী
প্রাণীরা শোনার ক্ষেত্রে মানুষের চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগী, যা ওদের কান খাড়া করে থাকা দেখেই বোঝা যায়৷ ওরা চুপ করে বসে শোনে এবং সেভাবেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়৷ প্রাণীদের কাছে থেকে মানুষরা এই গুণটি গ্রহণ করলে নিঃসন্দেহে তা মানবজাতির অনেক উপকারে আসতে পারে৷ কারণ মানুষের সাধারণত শোনার চেয়ে বলাই পছন্দ৷ ফলে সৃষ্টি হয় ভুল বোঝবুঝি, আবার অনেক সময় কিছু বিষয় স্পষ্ট হয় না৷