প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক উসকানি' খুবই দুঃখজনক:শিক্ষামন্ত্রী
৭ নভেম্বর ২০২২ওই প্রশ্ন নিয়ে সমালোচনার মধ্যে সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক যে কোনো একজন প্রশ্নকর্তা হয়ত এই প্রশ্নটি করেছেন এবং যিনি মডারেট করেছেন, সেটি তারও দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে কোনোভাবে৷ আমরা চিহ্নিত করছি, এই প্রশ্ন সেট এবং মডারেট করেছেন কে, সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব৷’’
রোববার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়৷ এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডের সৃজনশীল প্রশ্নের ১১ নম্বর প্রশ্নে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় তুলে ধরা হয়৷
তাতে দেখানো হয়েছে, ছোট ভাই বিরোধের জেরে বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে একজন মুসলিম ব্যক্তির কাছে জমির একাংশ বিক্রি করে দেন৷ জমি কেনা ব্যক্তি সেই জমিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং কোরবানির ঈদে সেখানে গরু কোরবানি দেন৷ এতে জমি বিক্রেতা ভাইয়ের মন ভেঙে যায়, তিনি জমি-জমা সব ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যান৷
বিষয়টি নিয়ে রোববারই আলোচনা শুরু হয়৷ সরকার যেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, এই প্রশ্ন তার সঙ্গে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ, সেই প্রশ্ন ওঠে৷
দীপু মনি বলছেন, কী কী বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্ন করতে হবে, তার স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া থাকে শিক্ষকদের৷ সাম্প্রদায়িকতার কিছু যেন না থাকে, সেটাও সেই নির্দেশিকায় আছে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ৷ এই বাংলাদেশে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির কোনো কিছু থাকলে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক৷ এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷’’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যারা চিহ্নিত হবেন, এবং যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের মনে এই ধরনের বীজ বপন করবেন, তাদের এই ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত রাখার প্রশ্ন আসবে না৷’’
এইচএসসির প্রথম দিন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি'র একাদশ (বিএমটি) বাংলা-১ বিষয়ের পরীক্ষা ভুল প্রশ্নের কারণে স্থগিত করতে হয়৷
নতুন-পুরাতন সিলেবাস গুলিয়ে ফেলায় ওই ভুল হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি৷
‘‘সেটা শিক্ষাবোর্ড করেছে বলে আমাদের এখনও মনে হচ্ছে না৷ আমাদের মনে হচ্ছে যে, প্রশ্ন যখন ছাপা হয়েছে, ছাপা হওয়ার ক্ষেত্রে একটা ত্রুটি থেকে যেতে পারে৷ আরেকটি হচ্ছে ছাপা হওয়ার পরে প্যাকেজিং৷ সেইসব কোনো এক ক্ষেত্রে ত্রুটি ঘটেছে৷’’
প্রশ্নে ভুল ও সাম্প্রদায়িক উসকানির মত বিষয় নজর এড়িয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন দীপু মনি৷
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘মুশকিল হলো, প্রশ্ন সেটিং প্রশ্ন মডারেটিং, এই কাজগুলো এমনভাবে হয় যে, যিনি প্রশ্ন সেট করে যান, তিনি আর প্রশ্ন দেখতে পারেন না৷ তারপর যিনি প্রশ্ন মডারেট করে যান, তিনিও প্রশ্ন দেখতে পারেন না৷
‘‘এই সেটার ও মডারেটর ছাড়া প্রশ্নের একটা অক্ষর কারও দেখবার কোনো সুযোগ থাকে না,’’ যোগ করেন তিনি৷
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)