1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রশান্ত–কৌশলে অশান্ত তৃণমূল

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৩০ নভেম্বর ২০২০

সারা ভারতে যাকে নির্বাচন কৌশল বিশেষজ্ঞ হিসেবে মান্য করা হয়, সেই প্রশান্ত কিশোর–কে মেনে নিতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ৷ একের পর এক বিধায়ক প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3m02I
ভারতের নির্বাচন কৌশল বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর
ভারতের নির্বাচন কৌশল বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোরছবি: Imago Images/Hindustan Times

যার ছকে দেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট জিতবেন বলে মনে করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি, সেই নির্বাচন কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ৷ তাঁদের আপত্তি, প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর জনসংযোগ সংস্থার যারা পেশাদার পরামর্শদাতা, তারা পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব রাজনৈতিক মানসিকতা না বুঝেই তৃণমূল নেতা–কর্মীদের শেখাতে আসছেন, কীভাবে রাজনীতি করতে হয়, কীভাবেই বা ভোটে জিততে হয়৷ হিন্দি বলয়ে বা দক্ষিণ ভারতে যেভাবে ভোট করা হয়, বাংলায় যে একই কায়দা সফল হবে না, সেটা তাঁরা বুঝছেন না৷ এমনকি বিক্ষুব্ধ নেতারা এমন কথাও বলছেন, যে ২০২১ বিধানসভা ভোটে যদি দলের ভরাডুবি হয়, তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী থাকবেন প্রশান্ত কিশোর এবং তার ভুল রণকৌশল৷
এখানে আরও একটি জোরদার আপত্তি কাজ করছে৷ ভোটের প্রচারে প্রশান্ত কিশোরের আধুনিক কৌশলকে প্রয়োগের ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে দায়িত্ব পেয়েছেন দলের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি৷ স্রেফ মমতার ভাইপো হওয়ার সুবাদে দলে যার অবস্থান এবং গুরুত্ব আগে থেকেই প্রশ্নের মুখে৷ একদা মমতার ডান হাত মুকুল রায়ের দল ছেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হালে শুভেন্দু অধিকারীর বিক্ষোভ ও মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়া, সবার পিছনে কারণ নাকি অভিষেকই৷ বয়সে নবীন এবং রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ হওয়া সত্বেও যিনি তৃণমূলে অলিখিত দু নম্বর নেতা৷ ফলে সেই ক্ষোভও যুক্ত হচ্ছে প্রশান্ত–বিরোধী মানসিকতায়৷ যদিও ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত বলছেন, আসলে ঠিক উল্টোটাই ঘটছে৷ প্রশান্ত কিশোরের কারণেই তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভ অভিষেকের ওপর গিয়ে পড়ছে৷ নয়ত তাঁর ওপর, বা ‘দিদিমনি'র ওপর নেতাদের কোনও ক্ষোভ নেই৷

দিদিমনির ওপর বাংলার মানুষের এত ক্ষোভ নেই: শীলভদ্র দত্ত, তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক

কিন্তু দেশের একাধিক নির্বাচনে এর আগে সফল হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা৷ সব রাজনৈতিক হিসেব উল্টে দিয়ে সেই সাফল্য এসেছে৷ বাংলায় সেটা হবে না কেন?শীলভদ্র দত্ত বলছেন, ‘‘উনি ভোটের হিসেব করুন, কোথায় কী দরকার আছে দলকে বলুন, সে ঠিক আছে৷ কিন্তু ওঁর লোকেরা সরাসরি নির্দেশ দিচ্ছে রাজনীতির লোকেদের৷ একটা লোকের ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবন, ওর এমবিএ পাস–করা বা আইআইটি পাস–করা ছেলেরা এসে বলছে, আপনাকে কিছু করতে হবে না৷ ভোটে জেতাব আমরা৷ কারণ আমরা রাজনীতিটা বেশি বুঝি৷ এটা এখানে হবে না, কারণ এটা বাংলা৷ বিহার, উত্তর প্রদেশ বা দিল্লি নয়৷’’

শীলভদ্র দত্ত যে ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেছেন, তা সদ্য ঘটেছে শিবপুরের তৃণমূল বিধায়ক, প্রবীণ নেতা জাটু লাহিড়ির সঙ্গে৷ তার পরেই তিনি বলেছেন, ‘ভাড়াটে লোক দিয়ে ভোটে জেতা যায় না৷’ প্রত্যাশিতভাবেই সেই মন্তব্য নিয়ে এখন তুমুল বিতর্ক ছড়াচ্ছে৷ বিক্ষুব্ধ নেতারা কেউ কেউ দল ছাড়ারও হুমকি দিয়েছেন৷