1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রথম হিন্দু নারী সেনেটর পেল পাকিস্তান

৫ মার্চ ২০১৮

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে এসে সেনেটর হলেন কৃষ্ণা কুমারী কোহলি৷ এই প্রথম কোনো দলিতকে রাজনীতিতে পেল পাকিস্তান, যা নিয়ে সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/2thfc
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Masih

ইংরেজিতে একটি বহুল প্রচলিত কথা আছে, ‘‘বেটার লেট দ্যান নেভার৷'' বাংলায় বললে হয়, দেরিতে হলেও বোধের জন্ম হলো৷ স্বাধীনতার ৭০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানে এই প্রথম নিম্নবর্ণ দলিত সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি সেনেটর হলেন৷ আরো গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, নির্বাচিত ব্যক্তি একজন মহিলা৷ পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি'র হয়ে নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি৷ এবং খানিকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই জয় লাভ করেছেন৷ বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে পাকিস্তানের সামাজিক রাজনৈতিক পটভূমিকায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন৷

কৃষ্ণা কুমারী কোহলি৷ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের প্রত্যন্ত থর অঞ্চলের বাসিন্দা৷ ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্য তাঁকে তাড়া করে বেড়িয়েছে৷ সাধারণ কৃষক পরিবারের মেয়ে কৃষ্ণা ১৯৭৯ সালে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় ভূস্বামীর ব্যক্তিগত জেলেও বহুদিন কাটিয়েছেন৷ সম্ভবত খাজনা দিতে না পারার জন্যই তাঁদের আটক করেছিল ওই ভূস্বামীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা৷ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তখন কৃষ্ণা৷ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পড়াশোনা৷ কিন্তু অদম্য জেদকে সঙ্গে নিয়ে এরপরেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন৷ স্কুল ফাইনাল শেষ করতে না করতেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে৷ কিন্তু তারপর পড়াশোনা বন্ধ করেননি৷ সিন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর করে রাজনীতিতে যোগ দেন৷

সংবাদ সংস্থা এএফপি'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণা বলেছেন, তাঁকে রাজনীতিতে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এবং নির্বাচনে প্রার্থী করার জন্য তিনি পিপিপি দলের প্রতি ঋণী৷ এর আগে অবশ্য দীর্ঘদিন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি৷ পাকিস্তানের দরিদ্র্, পিছিয়ে পড়া মানুষ এবং সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কাজ করেছেন৷ রাজনীতি অবশ্য তাঁর পরিবারের ঐতিহ্য৷ তাঁর দাদু ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন ১৮৫৭ সালে৷ ব্রিটিশরা তাঁকে ফাঁসিও দিয়েছিল৷ কৃষ্ণার দাদাও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত৷

এই মুহূর্তে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুর সংখ্যা ২ শতাংশের কিছু বেশি৷ তার মধ্যে নিম্নবর্ণের দলিতের সংখ্যা আরো কম৷ স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের অবস্থা মোটেই ভালো নয়৷ দুঃখজনক সত্য হলো, এতদিন তাঁদের কথা বলার মতো রাজনীতিতে কেউ ছিলেন না৷ পাকিস্তানের বিশিষ্ট মানুষেরা কৃষ্ণার জয়কে তাই অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ সকলেই মনে করছেন, এর ফলে পাকিস্তানের রাজনীতি সমৃদ্ধ হলো৷

তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বিস্ময়ও প্রকাশ করেছেন৷ তাঁদের প্রশ্ন, এতদিন কেন কোনো দলিত মানুষ নির্বাচিত হননি? কেন এতদিন তাঁরা অবহেলিত ছিলেন? কেন কোনো দল এ নিয়ে এতদিন মাথা ঘামায়নি? শুধু তাই নয়, একুশ শতকে দাঁড়িয়েও ‘দলিত' শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে এবং তা নিয়ে উদযাপন করতে হচ্ছে, এই বিষয়টিকেই মেনে নিতে পারছেন না অনেকে৷

এসজি/এসিবি (এএফপি/রয়টার্স/টাইমস অফ ইন্ডিয়া)

এ নিয়ে আপনার মতামত লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷