নারী প্রেসিডেন্ট
২০ ডিসেম্বর ২০১২প্রথমটি প্রয়াত বাবার অপচ্ছায়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার অঙ্গীকার পূরণ করা আর দ্বিতীয়টিতে থাকছে একের ভেতর বহু, অর্থাৎ প্রতিবেশি উত্তর কোরিয়ার কথিত হুমকিকে অগ্রাহ্য বা মোকাবেলা করে দেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা রক্ষা করা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ আগের সব সরকারের রেখে যাওয়া যাবতীয় অসমাপ্ত কাজ শেষ করার পথে এগিয়ে যাওয়া৷
মুন জায় ইন'এর ৪৮ ভাগের বিপরীতে ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, কথা আর কাজে সে পথে যাত্রা শুরুরই ইঙ্গিত দিয়েছেন পাক৷ ৬০ বছর বয়সি এ নেত্রীকে ভোটের জন্য প্রচারকাজ চালানোর সময় সাবেক স্বৈর শাসক বাবার জন্য কম অপমান সহ্য করতে হয়নি৷
১৯৬১ থেকে ১৯৭৯ – ঐ ১৮ বছরে দেশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে নিয়েছিলেন পাক গুন-শিয়ে'র বাবা পাক চুং-হি, উত্তর কোরিয়ার ‘হুমকি' পাত্তা না দিয়েই করেছিলেন সেটা৷ কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের কাছে পাক চুং-হি এখনো শুধুই অত্যাচারী এক সাবেক স্বৈরশাসক৷ তাঁর মেয়ে হিসেবে ভোট চাইতে গিয়ে তাই পাক গুন-শিয়ে'কেও পড়তে হয়েছে রোষানলে৷ অকথ্য গালাগালও হজম করতে হয়েছে কোথাও কোথাও৷ ক্ষুব্ধ হননি৷ বরং বাবার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, বলেছেন, ‘‘আমাকে ভোট দিন, গত ৫০ বছরে যে কঠিন একটা বৃত্ত তৈরি হয়েছে, যা বিভক্ত করে রেখেছে আমাদের, নির্বাচিত হলে আমি সেটা ভেঙে দেবো৷''
নির্বাচিত হবার পর দুটি সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন এবং প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাক গুন-শিয়ে৷ মেয়ে হিসেবে যেমন গিয়েছেন প্রয়াত বাবার সমাধিতে, দেশের সব নাগরিকের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তেমনি তাঁর বাবার সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ, সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম দে জুং'এর সমাধিতে যেতেও ভোলেননি৷
এভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রথম পদক্ষেপ রাখার পাশাপাশি অন্য অঙ্গীকারগুলো পূরণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন নতুন করে, জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া এবং চীন, জাপানসহ অন্যসব প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে তিনি আগ্রহী৷ তবে পাক গুন-শিয়ে'র কাছে দেশের নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)