1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশজুড়ে অভিনব প্রতিবাদ

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
২৭ জানুয়ারি ২০২০

একই সঙ্গে বিপুল উৎসাহে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন, আবার তার সঙ্গে চলল প্রতিবাদও৷ গেরুয়া, সাদা, সবুজ পোশাক পরে, জাতীয় পতাকা তুলে, তিনরঙা বেলুন ওড়ানোর পাশাপাশি পোস্টারও থাকল, 'সিএএ, এনআরসি নয়৷'

https://p.dw.com/p/3Wqzq
ছবি: picture-alliance/AA/J. Sultan

যতদূর চোখে পড়ছে শুধু মানুষ৷ প্রজাতন্ত্র দিবসে এ হেন লোকের ঢল তো দেখা যায় রাজপথের প্যারেড দেখার সময়৷ সেই প্যারেড যখন চলছে, তখন সেখান থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরের শাহিনবাগের রাস্তা জুড়ে শুধু লোক আর লোক৷ আর তাদের অধিকাংশের হাতে জাতীয় পতাকা৷ বারবার আন্দোলিত হচ্ছে সেই পতাকা৷ রাস্তার শুরুতে বিশাল একটা পোল লাগানো হয়েছে৷ সেখানে রোহিত ভেমুলার মা রাধিকা ভেমুলা জাতীয় পতাকা তুলতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল শাহিনবাগ৷ আর জাতীয় পতাকা, আন্দোলিত হাতের মধ্যে দিয়ে উঁকি মারছিল পোস্টারগুলি৷ সেখানেও তিন রঙে আঁকা ভারতের ম্যাপ৷ তার সঙ্গে লেখা 'নো সিএএ, নো এনআরসি৷'

প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করে এ হেন প্রতিবাদ কমই দেখেছে দিল্লি৷ শুধু শাহিনবাগ নয়, দিল্লির খুরেজিতেও একইভাবে প্রতিবাদ হয়েছে৷ মুম্বইয়ের নাগপাড়া এলাকায় প্রজাতন্ত্র দিবসের রাত থেকে শুরু হয়েছে অবস্থান প্রতিবাদ৷ মুম্বইয়ের শাহিনবাগ৷ কলকাতায় দক্ষিণের গোলপার্ক থেকে উত্তরের শ্যামবাজার পর্যন্ত মানব শৃঙ্খল হয়েছে৷ মাঝখানে পার্ক সার্কাসও ছুঁয়ে গিয়েছে সেই মানব শৃঙ্খল৷ পার্ক সার্কাসকে বলা হচ্ছে কলকাতার শাহিনবাগ৷ কেরলে তো ৬২০ কিলোমিটার জুড়ে মানব শৃঙ্খল করেছে ক্ষমতাসীন সিপিএম কর্মী ও সমর্থকরা৷ এমনকী অ্যামেরিকার ৩০টি শহরে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ হয়েছে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে৷

ঐতিহাসিক এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু মনে করেন, এই প্রতিবাদ অভিনব৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''আমার যেটা সব চেয়ে ভালো লাগছে, তা হল, আমাদের সংবিধানের স্পিরিট সাধারণ মানুষ তুলে ধরছেন৷ আমাদের সংবিধানের কিছু অনুচ্ছেদ ইংরেজ আমল থেকে নেওয়া৷ তার অপব্যবহার করে সরকার আসল নীতিবোধকে ধ্বংস করতে চাইছে৷ এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে৷ জরুরি অবস্থা, কেন্দ্র কী করে রাজ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে, তা নিয়ে সাবধান থাকা দরকার৷ সামনের দিনে এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে ও সুযোগ এলে পরিবর্তন করতে হবে৷ যে ভাবে বিশেষ করে যুব সমাজ সংবিধানের আসল কথা বুঝে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ৷'' তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরীর৷  ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''প্রতিবাদ করা যেতেই পারে। প্রজাতন্দ্র দিবস পালন করে প্রতিবাদ একটা বাড়তি প্রতীকী গুরুত্ব পায়৷ কিন্তু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদ এতদিন ধরে করা নিয়ে আমার আপত্তি আছে৷ আমার মনে হয়, তাতে ভবিষ্যতে আসল কারণটা লঘু হয়ে যেতে পারে৷ কারণ, যখন বছর দেড়েক পরে এনআরসিহবে, তখন প্রতিবাদ করতে গেলে মনে হবে, এই ধরনের বিক্ষোভ তো দেখানোই হয়৷ প্রতিবাদকারীদের এই কথাটা ভেবে দেখা উচিত৷''

সরকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, তারা শাহিনবাগের দাবি মানবে না৷ তারপরেও প্রতিবাদ কমছে না৷ বরং তা দিনে দিনে তীব্র ও অভিনব রূপ নিচ্ছে৷