1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজবসনিয়া ও হ্যারৎসেগোভিনা

পেন্সিলের সীসের উপর অভিনব ভাস্কর্য

৩১ মার্চ ২০২২

ছোটবেলায় পেন্সিল দিয়ে লেখার সময় কখনো মনে হয়েছে কি যে, সেটির সীস শিল্পের ক্যানভাস হয়ে উঠতে পারে? বসনিয়ার এক শিল্পী সেই ক্ষুদ্র গ্রাফাইটের উপর মিনিয়েচার ভাস্কর্য সৃষ্টি করে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করছেন৷

https://p.dw.com/p/49Fzt
DW Sendung Euromaxx | Bleistift
ছবি: DW

পেন্সিল মোটেই শুধু লেখার উপকরণ নয়৷ বসনিয়ার শিল্পী ইয়াসেনকো জর্জেভিচ পেন্সিল খোদাই করে অতি সূক্ষ্ম শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘শিল্পের সব শাখার মধ্যে ভাস্কর্য আমার সবচেয়ে পছন্দ, কারণ, সেটি ত্রিমাত্রিক৷ পেন্সিলের সীসার উপর এমন সৃষ্টি অবশ্যই অত্যন্ত জটিল৷ কিন্তু এমন কাজ শিল্পকে অন্য মাত্রা দেয়৷ সে কারণেই এমন ধরনের শিল্প আমাকে মুগ্ধ করে৷''

মিনিয়েচার আর্টিস্ট হিসেবে তিনি দুইশরও বেশি পেন্সিলের উপর ভাস্কর্য সৃষ্টি করেছেন৷ মোটিফের মধ্যে দুবাই শহরের বুর্জ খলিফা টাওয়ার রয়েছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভবন৷ এডভার্ড মুংকের বিখ্যাত ‘স্ক্রিম' ছবির নিজস্ব সংস্করণও তৈরি করেছেন তিনি৷ তিনি গোটা পেন্সিলেরও রূপান্তর ঘটান৷ যেমন, পেন্সিলকে চলমান দ্রুতগামী ট্রেনের রূপ দিয়েছেন ইয়াসেনকো৷ নিজের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত আমি আশেপেশের জিনিসই বেছে নেই৷ কখনো আবার পপ কালচারের কোনো বস্তু নিয়ে কাজ করি৷ তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার চারিপাশের মোটিফই প্রাধান্য পায়৷''

নিজের শহর টুজলার অসংখ্য দ্রষ্টব্যকে তিনি মিনিয়েচার গ্রাফাইট সৃষ্টির জন্য বেছে নিয়েছেন৷ যেমন, বসনিয়ার রাজা প্রথম টোয়ার্টকো, সপ্তদশ শতাব্দীর মাদ্রাসার তোরণ অথবা শহরের মুরিশ শৈলির ফোয়ারা৷ পরের মোটিফও তিনি ইতোমধ্যে খুঁজে পেয়েছেন৷ সে বিষয়ে ইয়াসেনকো বলেন, ‘‘অতীতে লবণাক্ত পানি রাখার জন্য যেমন টাওয়ার ছিল, আমাদের পেছনে তেমনই একটি স্থাপনার নকল শোভা পাচ্ছে৷ লবণের খনির জন্য টুজলা বিখ্যাত৷ টুজলা শব্দটিও তুর্কি ভাষার ‘টুজ' থেকে এসেছে, যার অর্থ লবণ৷''

পেন্সিলের সীসে বুর্জ খলিফারও ভাস্কর্য!

অতি ক্ষুদ্র ভাস্কর্যের দৌলতে ইয়াসেনকো প্রায় এক দশক ধরে যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করছেন৷ গোটা বিশ্বে ৩০টিরও বেশি প্রদর্শনীতে তিনি নিজের মিনিয়েচার শিল্প তুলে ধরেছেন৷ সম্প্রতি প্যারিসের এক আর্ট গ্যালারিতেও তাঁর সৃষ্টিকর্ম স্থান পেয়েছিল৷ ইয়াসেনকো জর্জেভিচ পেশাদার শিল্পী হিসেবে যথেষ্ট উপার্জন করছেন৷ তার সৃষ্টিকর্মের মূল্য ৪০০ ইউরো থেকে শুরু৷

খসড়ার জন্য তার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে৷ কিন্তু ‘ফিনিশিং টাচ' দিতে বেশ কয়েকদিন লেগে যায়৷ মিনেয়েচার সল্ট টাওয়ার তৈরি করতে তার নানা ধরনের স্ক্যালপেল ও সূঁচের প্রয়োজন হয়েছে৷ ইয়াসেনকো বলেন, ‘‘মানুষের শরীরের মতো মোটিফ নিয়ে কাজ করা অনেক সহজ, যেখানে খোদাইয়ের সময় অনেক অংশ পরেও সংশোধন করা যায়৷ ভবনের জ্যামিতি সরল রেখায় ভরা, যা পুরোপুরি মেনে চলতে হয়৷''

সরাসরি মোটিফের সামনে গিয়ে ইয়াসেনকো খুঁটিনাটী বিষয়গুলি চূড়ান্ত করেন৷ যেমন, টাওয়ারের গায়ে আড়াআড়ি নক্সা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলতে হয়৷ পূর্ণ মনযোগ ও সংবেদনশীলতা অত্যন্ত জরুরি৷ তা না থাকলে কাজের শেষে পেন্সিলেল সীস ভেঙে যাবার আশঙ্কা থাকে৷ ইয়াসেনকো জর্জেভিচ মনে করেন, ‘‘টুজলা শহরের অনেক দ্রষ্টব্য আগেই ফটো ও তৈলচিত্রের মাধ্যমে অমর করে রাখা হয়েছে৷ আমি নিজের দক্ষতা ও এমন ধরনের শিল্প কাজে লাগিয়ে নতুন ভাবে সেই মোটিফগুলি তুলে ধরতে চাই৷''

কয়েক ঘণ্টা পর তার সৃষ্টির কাজ শেষ হলো৷ টুজলা শহরের লবণাক্ত ফোয়ারা পেন্সিলের সীসের মধ্যে অমর হয়ে রইলো৷

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেসান/এসবি