1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পৃথিবীর সেরা পাঁচ জীবাণুদুষ্ট পর্যটন স্থান

৬ আগস্ট ২০০৯

যদি প্রশ্ন করা হয়, পর্যটকরা পয়সা খরচ করে কোথায় যায় ঘুরতে? কোন ভাবনা চিন্তা ছাড়াই উত্তর দেয়া যায় যেখানে সুন্দর আর ব্যতিক্রমী কিছু আছে সেখানেই পর্যটকদের পা পড়ে৷ কিন্তু এরও ব্যতিক্রম আছে৷

https://p.dw.com/p/J2GG
ভেনিসের মাকর্স স্কয়ারছবি: AP

মানুষ শুধু সুন্দর আর ভালো পৃথিবী দেখতে যায় তা ঠিক নয়, দূষিত এবং জীবাণুদুষ্ট অনেক স্থান দেখতেও ছুটে যান পর্যটকরা৷

ট্রিপ এডভাইজর ডট কম নামে একটি ওয়েব সাইট রয়েছে, যাদের কাজ ভ্রমণ বিষয়ে পরামর্শ দেয়া৷ সেই ওয়েব সাইট জানিয়েছে এক মজার তথ্য৷ আয়ারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইটালি এবং ফ্রান্সে রয়েছে পৃথিবীর পাঁচটি প্রধান জীবাণুদুষ্ট পর্যটন স্থান৷ এই সব জায়গাকে জীবাণুদুষ্ট বলা হচ্ছে এই কারণে যে, এই সব জায়গায় ঠোঁট আর হাতের ব্যবহার খুবই বেশি৷ যে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারেন এখান থেকে সোয়াইন ফ্লু বা এর মতো ভয়াবহ কোন ভাইরাস ছড়াতে পারে৷ সব কিছু জেনেও এ সব জায়গায় প্রতি বছর লাখো লাখো পর্যটক ঘুরতে যান৷ বলা হয় তারা নাকি জীবাণুর টানেই ঘর ছাড়েন৷

সে অনেক অনেক আগের কথা৷ আয়ারল্যান্ডে রাজার প্রবল ভালোবাসা ছিল মানুষের প্রতি৷ সেই দেশে ব্রার্নি নামের একটি লেকে একদিন ঐ রাজা দেখতে পেলো এক মহিলা ডুবে যাচ্ছেন৷ অপেক্ষা করলেন না রাজা৷ প্রায় ডুবন্ত ঐ মহিলাকে উদ্ধার করলেন রাজা৷ মহিলা জীবন ফিরে পেয়ে রাজার সামনে একটি পাথর দিয়ে বললেন, যে এই পাথরকে চুম্বন করবেন, তিনি হতে পারবেন একজন চমৎকার বাকপটু বা বক্তা৷ এরপর থেকে যারা বাকপটু হতে চান তারাই উল্টো হয়ে দড়িতে ঝুলে চুমু খান ঐ পাথরে৷ গত বছরে এমন লোকের সংখ্যা ছিল চার লাখ৷ বড় বিষয় হচ্ছে ঐ পাথরে এত লোক চুমু খাচ্ছেন যে, পাথরটি এখন মানুষের মুখের থুতু আর ময়লায় পুরেপুরি দূষিত৷ সকলে জানেন কিন্তু তারপরও পর্যটকরা পিছপা হননা এই ইতিহাসের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে৷ প্রতি বছর গড়ে চার লাখ মানুষ এই পাথরকে চুমু খান নিজেকে একজন ভালো বক্তা হিসাবে গড়ে তুলতে৷

18.07.2006 projekt zukunft fragezeichen
এই ছবিটিকেই খুঁজছেন আপনি৷ ছবিটির ডেট: 06/08 এবং কোড: 7658 পাঠিয়ে দিন bengali@dw-world.de ঠিকানায় অথবা এসএমএস করুন 0088 0173 030 2205, ভারত: 0091 98309 97232 নম্বরে৷ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিততে পারেন আকর্ষণীয় সারপ্রাইজ গিফট ...ছবি: DW-TV

ওয়াশিংটনের সিয়াটল শহরে মার্কেট থিয়েটার গাম অয়েল নামের একটি পর্যটন কেন্দ্র আছে৷ এটিও তালিকায় স্থান পাওয়া একটি দূষিত পর্যটন কেন্দ্র৷এখানে রয়েছে আর্কষনীয় একটি চাবানো শেষ হয়েছে এমন চুয়িং গামের প্রাচীর৷ উচ্চতা ১৫ফিট, চওড়া ৫০ ফিট৷ ১৯৯৩ সালে ছাত্ররা সেখানে অবস্থিত হল বা থিয়েটারে নাটক দেখার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো৷ সে সময় তো এক পা দু পা করে এগোনো ছাড়া আর কোন কাজ নেই৷ তাই সে সময় চুয়িং গাম খেয়ে পরিত্যক্ত অংশ ওয়ালে সেটে রাখতো৷ এভাবেই আজ সেখানে এই বিশাল চুয়িংগাম ওয়ালের জন্ম৷ প্রতিদিন হাজারো মানুষের আগমন ঘটে ঐ দেয়ালে চুইংগাম আটকানোর জন্য ৷ ফলে পরিত্যক্ত চুয়িং গামের সাথে সেঁটে থাকে জীবাণু৷তারপরও পর্যটকরা হাত দিয়ে ঐ দেয়ালে চুইংগাম দিয়ে নিজের নাম লেখেন বা ছবি আটকান৷

ইটালির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ভেনিসের মাকর্স স্কয়ার বিশ্বের পর্যটকদের কাছে বিখ্যাত যে সব কারণে তাদের মধ্যে অন্যতম এখানে ঘুরে বেড়ানো হাজার হাজার কবুতর৷ পর্যটকরা এই সব কবুতরতকে একদিকে খাবার দিয়ে আর তাদের সঙ্গে ছবি তুলে যেমন মজা পান , তেমনি অন্যদিকে কবুতরগুলোও নির্ভয়ে ছুটে যায় এইসব অপরিচিত পর্যটকদের কাছে৷ কিন্তু কাহিনী এখানেই শেষ নয় ৷ কারণ এইসব কবুতরের সংখ্যা এতোই বেশি যে যদি পাঁচ ভাগ কবুতরও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয় তবে যে কোন পর্যটকের শরীর নোংরা হয়ে যাবে৷ এতো কিছু জেনেও পর্যটকরা ছাতা মাথায় দিয়ে বা রেইন কোট পরে অথবা কোন প্রতিরোধক ছাড়াই এইসব কবুতরের সঙ্গে সময় কাটান৷ চিকিৎসকরা বলে থাকেন, যে কোন পাখিই জীবাণু ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট৷ প্রতিবছর এই একটি স্কয়ারে কমপক্ষে ২০ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটে এই কবুতর এবং তাদের কর্মকান্ড দেখার জন্য৷

হলিউডের গ্রাউমান্স চাইনিজ থিয়েটার বিখ্যাত হাত বা পায়ের ছাপের জন্য৷ বিখ্যাত তারকা যেমন মেরিলিন মনরো বা ক্লিন্ট ইস্ট উড কেউই বাদ যাননি এই তারকার তালিকা থেকে৷ ১৯২৭ সালে নরমা টালমাডযে নামের একজন বিখ্যাত অভিনেতা এই থিয়েটারের সামনে নরম সিমেন্টের ওপর পা দিয়ে ছাপ ফেলেন৷ এইসময় এই থিয়েটারের মালিকের মাথায় চলে আসে এক বাণিজ্যিক বুদ্ধি৷সে তারকাদের হাত বা পায়ের ছাপ সংগ্রহ করতে শুরু করে সিমেন্ট বা মাটিতে৷

এখন তার কাছে আছে ২৪৬ জন পৃথিবী বিখ্যাত তারকার হাত বা পায়ের ছাপ৷ প্রতি বছর ৪৫ লাখ পর্যটক এই হাত বা পায়ের ছাপের উপর নিজের হাত বা পা মেলাতে ছুটে আসেন৷

থিয়েটারের মালিক গ্রাউমান বলছেন, জীবাণু যেনো না ছড়ায় সেজন্য তারা প্রতিদিন এই ছাপগুলো মোছেন এবং সপ্তাহে একবার ধুয়ে দেন৷

প্যারিসের পিয়ার লাথেই সমাধিস্থল বিখ্যাত হয়েছে, লেখক এবং নাট্যকার অস্কার ওয়াইল্ড এর জন্য ৷ কিন্তু কেউ যদি এর সামনে দিয়ে যায় তবে তার মনে হতে পারে এটি কোন সমাধিস্থল নয় , কোন পাথরের উপর যত্ন করে আঁকা রঙধণু ৷ কারণ, যেই এই সমাধিস্থল দেখতে আসেন, সেই এখানে চুমু খান৷ আর এভাবেই হাজার রঙের ঠোঁটে রঙিন হয়ে উঠছে এই বিশ্ব বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র ৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার