আসাদের সৈন্যদের হাতে পূর্ব আলেপ্পো
১৩ ডিসেম্বর ২০১৬সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলি ২০১২ সাল থেকে বিদ্রোহীদের হাতে৷ কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনী গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে যে অভিযান চালিয়েছে, তা এবার দৃশ্যত সফল হতে চলেছে৷ ইরান ও বিশেষ করে রাশিয়ার সাহায্য ছাড়া এই পরিস্থিতি সম্ভব হত না৷
১৩ই ডিসেম্বর ২০১৬, অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে সরকারি সৈন্যরা আলেপ্পোর প্রাচীন অংশে তল্লাসি চালাচ্ছে, বলে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস৷ অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদেল রহমান এএফপি সংবাদ সংস্থাকে জানান যে, মঙ্গলবার সকালে সরকারি সৈন্যরা সদ্য দখল করা এলাকাগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করছে৷ পশ্চিম আলেপ্পো থেকে এএফপি-র আরেক সংবাদদাতা সারা রাত ধরে গোলাবর্ষণের আওয়াজ শুনেছেন, কিন্তু সকালে তা প্রায় থেমে আসে, বলে তিনি জানান৷
গত জুলাই মাস থেকেই আলেপ্পোর অবরোধ চলেছে৷ সর্বাধুনিক অভিযান শুরু হয় নভেম্বরের ১৫ তারিখে, যখন সিরিয়ার সরকারি সেনাবাহিনী ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির সাহায্য নিয়ে আলেপ্পো আক্রমণ করে৷ আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করে রুশি জঙ্গিবিমান৷ সোমবার সরকারি সৈন্যরা আলেপ্পোর দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে শেখ সইদ এলাকাটি জয় করে, যা কৌশলগতভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ বিদ্রোহীরা কাছের মাশাদ ও সুক্কারি এলাকায় হটে যেতে বাধ্য হয়৷
আলেপ্পোয় যা ঘটছে, তা নিয়ে জাতিসংঘের বিদায়ী মহাসচিব বান কি-মুনও উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের উপর নিপীড়নের খবর নিয়ে – যদিও জাতিসংঘের পক্ষে এ খবরের সত্যতা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, তাঁর মুখপাত্র স্টেফান জুরিচ যোগ করেছেন৷ বিরোধীপক্ষের মূল আশঙ্কা হল, সরকারি সৈন্যরা এবার পূর্ব আলেপ্পোয় আটকে পড়া মানুষদের উপর প্রতিশোধ নেবে৷ এমনকি অস্ত্রহীন সমর্থক ও হোয়াইট হেল্মস-এর মতো মেডিক্যাল পার্সোনেলও দৃশ্যত ভয়ে আছেন৷
সিরিয়ার সরকারি সেনাবাহিনী যখন আলেপ্পো জয় করতে ব্যস্ত, তার সুযোগ নিয়ে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর যোদ্ধারা সুপ্রাচীন পালমিরা শহরটি আবার দখল করে নিয়েছে৷ রাশিয়ার সাহায্যে মাত্র গত মার্চ মাসে পালমিরা থেকে আইসিস-কে বিতাড়ন করা সম্ভব হয়েছিল৷
অপরদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গের বৈঠকের পর ইইউ-এর বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোঘেরিনি বলেছেন যে, আলেপ্পোর ব্যাপারে সিরীয় ও রুশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপের বিশেষ সম্ভাবনা নেই৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)