1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ, পিছনে হুজি নেতা

এম আবুল কালাম আজাদ
১৪ অক্টোবর ২০২২

সম্প্রতি র‍্যাব দাবি করেছে, নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া বান্দরবানের পাহাড়ে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ক্যাম্প ব্যবহার করে তরুণদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4IDPF
Bangladesch   Jhum Kultur
ছবি: DW/M. Mamun

পলাতক অনেকে ঐ ক্যাম্পে আছে বলেও র‍্যাবের বরাতে প্রকাশ করা খবরে দাবি করা হয়৷

তবে প্রশ্ন উঠেছে কেএনএফ কেন জঙ্গিদের তাদের প্রশিক্ষণ শিবির ব্যবহার করতে দেবে? কেননা, দুটি সংগঠন বিপরীতধর্মী আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে৷ স্বাভাবিকভাবেই তারা একে অপরকে সাহায্য করার কথা না৷

পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন হিসাবে কেএনএফ-এর আত্মপ্রকাশ বেশি দিন হয়নি৷ তবে এর মধ্যেই তারা তাদের ‘সামর্থ্য' দেখিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংঘতি সমিতি (জেএসএস) উপর হামলা চালিয়ে৷ বলা হচ্ছে, এরা জেএসএস-এর প্রতিপক্ষ একটি দল৷ সম্প্রতি হামলা চালিয়ে জেএসএস-এর নেতাকে হত্যার পর পাহাড়ে কেএনএফ-কে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷

পিছনে শামীম মাহফুজ

গাইবান্ধার শামীম মাহফুয হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের একজন প্রবীণ পৃষ্ঠপোষক৷ কেএনএফ শিবিরে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের সাথে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে৷

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শামীম ৯০ দশকের শেষে পার্বত্য অঞ্চলে চলে যান৷ গত ২০ বছরে অনেক জঙ্গিকে পাহাড়ে নিয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি৷ চাষবাসের কাজে লাগানোর নামে দেশের বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করার নামে জঙ্গিদের সেখানে নিয়ে যান৷ বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে একটি গ্লোবাল ভিলেজ বা ছোট একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঘাঁটি গাড়েন তিনি৷

শামীম বিভিন্ন নামে তার কাজ চালিয়ে আসছিলেন৷ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকবার তাকে ও তার গ্রুপের সদস্যদের আটক করেছে৷ কিন্তু জামিনে বেরিয়ে তিনি আবার তার তৎপরতা শুরু করেন৷ এ পর্যন্ত তাকে ৪ বার আটক করা হয়েছে বলে জানা যায়৷

বাধা পেলেও শামীম থেমে থাকেনি৷ নতুনভাবে, নুতন কোনো নামে জঙ্গিদের সংগঠিত করে আবার তৎপরতা শুরু করে৷

নতুন একটি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে কেএনএফ-এর সাথে সে যোগাযোগ করে আসছিল৷ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক না হলেও প্রশিক্ষনের ব্যাপারে তারা সম্মত হয় বলে জানা যায়৷

পুলিশের বেশ কয়েকটি সুত্র জানিয়েছে, কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সাথে তার এক ধরনের বোঝাপড়ার ফলস্রুতিতে পাহাড়ে ক্যাম্প স্থাপন করে কয়েকজন যুবককে সেখানে প্রশিক্ষনের জন্য নেয়া হয়৷

জামাতুল আনসার কতটা ভয়ংকর?

জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া বান্দরবানের সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য কোথাও নেই৷ তবে এটা শামীম মাহফুজের ‘ব্রেইনচাইল্ড’ হতে পারে বলে অনেকের ধারণা৷

তার সাথে আছে মূলত হুজিবির লোকজন৷ তবে অন্য জঙ্গি সংগঠনের দলছুট অনেকে এই গ্রুপে যুক্ত হতে পারে৷ এটি অনেকটা নতুন বোতলে পুরান মদের মতো৷ লোক সব পুরান, তবে নামটা নতুন৷

দীর্ঘদিন জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে  এমন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গিরা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ সেখানে ভিন্ন ভিন্ন জঙ্গি মতাদর্শের লোক থাকে৷ অনেক সময় এরা নতুন কোনো নাম ধারণ করে৷ তবে তারা কেউই ভয়ংকর কিছু হয়ে উঠতে পারেনি৷

ঐ কর্মকর্তা মনে করেন, কিছু জঙ্গি ধরে বা নতুন কোনো জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পেলেই সেটা বড় কিছু হয়ে যাবে ব্যাপারটা সেরকম না৷ এছাড়াও আটককৃত জঙ্গিরা সব সময় যে সত্য কথা বলবে সেটাও ঠিক না৷ বরং জঙ্গিরা সঠিক তথ্য না দেয়ারই কথা৷ কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে জড়িত কেউ ধরা পড়লে স্বাভাবিকভাবেই তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে৷ ধৃত জঙ্গিদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য৷ তাই জঙ্গিদের দেয়া তথ্য যাচাই না করে সেটা সংবাদ মাধ্যমের সাথেও শেয়ার করা উচিত হবে না বলে তিনি মনে করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য