পরিবেশ বাঁচাতে উটের পেছনে ছুটছে অস্ট্রেলিয়া
১০ জুন ২০১১ভাবছেন, ক্যাঙ্গারুর দেশে উট আসলো কীভাবে ? একটা সময় ছিল যখন মোটরগাড়ি আবিষ্কৃত হয়নি, তখন এইসব উটদের দাদা-দাদি মানে তাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে আসা হয়েছিল ভারত থেকে৷ কিন্তু মোটরগাড়ি আসার পর, এসব উটকে আর দরকার হয়নি৷ তারপর থেকে কেবল বংশবৃদ্ধি করে গিয়েছে এসব উট৷ আর সংখ্যায় এখন তারা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখেরও বেশি৷ অসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উটের সংখ্যা প্রতি সাত বছরে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে৷ যদি তাই হয়, তাহলে কয়েক দশক পর দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়াতে মানুষ আর উটের সংখ্যা সমান সমান৷
কিন্তু তাই বলে উট মারতে হবে ? আসলে মাঝে মধ্যেই উটের পাল জনবসতিতে হামলা চালিয়ে বসে৷ এইতো গত বছর, প্রায় ছয় হাজার উটের একটি বিশাল পাল আটকে দিল ডকার নদী৷ সেখানে পানির পাইপ ছিন্নভিন্ন করে দিল তৃষ্ণার্ত উটের দল৷ হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে উট মারতে অসি সরকার তখন অর্থও বরাদ্দ করে৷
অসি সংসদের যুক্তি অবশ্য সেটি নয়৷ তাদের দাবি, পরিবেশ রক্ষার খাতিরে এখন উটের সংখ্যা কমাতে হবে৷ নর্থওয়েস্ট কার্বন কোম্পানির প্রধান টিম মুরে এই সংক্রান্ত উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন৷ এই প্রস্তাবের সমর্থকদের বক্তব্য, উট যে ঢেকুর তোলে তাতে তাদের পেট থেকে মিথেন গ্যাস বের হয়৷ এভাবে প্রতি বছর একটি উট বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দিচ্ছে এক টন কার্বন গ্যাস৷ সংসদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সেক্রেটারি কার্ম ড্রেফুস বলেন, উট হচ্ছে সবচেয়ে বড় বায়ু দূষনকারী৷
তবে এর বিরোধীতাও করছেন অনেকে৷ তাদের যুক্তি, একটি উট আর কতই বা কার্বন ছড়ায়, একটি মোটর গাড়ি তার চেয়েও অনেক বেশি কার্বন ছড়ায়৷ সংসদের বিরোধী দলের কৃষি বিষয়ক মুখপাত্র জন কব জানান, অস্ট্রেলিয়ার সব উট যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে - সেটি রাস্তা থেকে তিন লাখ গাড়ি সরিয়ে নিলেই সমান সমান হয়ে যাবে৷ তবে, পরিবেশ বাঁচাতে লাখ টাকার গাড়ি নষ্ট করার চেয়ে একটি উট মারা বোধহয় অনেক সহজ!
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ