1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পঞ্চায়েতের পুনর্নির্বাচনেও সহিংসতা

১০ জুলাই ২০২৩

সোমবার সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ২২টি জেলায় ৬৯৬টি বুথে পঞ্চায়েতের পুনর্নির্বাচন। সহিংসতা অব্যাহত।

https://p.dw.com/p/4TeCG
পঞ্চায়েত ভোট
ছবি: Prabhakar Mani Tewari/DW

শনিবার রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। ভোটে ভয়াবহ সহিংসতার ছবি ধরা পড়েছে। সব মিলিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত, ভোটের আগে আরো ১৮ জন নিহত হয়েছিলেন রাজনৈতিক লড়াইয়ে। সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত দুইটি মৃত্যুসংবাদ এসেছে। নদিয়ায় সিপিএম প্রার্থীর শ্বশুর এবং মুর্শিদাবাদে এক তৃণমূলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। দুইজনেই শনিবার, ভোটের দিন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এছাড়াও তেহট্টে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে এক ভোটারের। গরমে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।

সোমবার সকাল থেকে ৬৯৬টি বুথে পুনর্নিবাচন শুরু হয়েছে। প্রতিটি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অশান্তি বন্ধ হয়নি। সবংয়ে রোববার রাত থেকে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। দাঁদরায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনায় বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার ফের নির্বাচন শুরু হয়েছে কয়েকটি বুথে।

বাড়ি ভাঙচুর

পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সিপিএমের বিরুদ্ধে। রোববার রাতেই সিপিএমের অন্তত ৫০জন সমর্থক ওই তৃণমূলকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দক্ষিণ দিনাজপুরের দাউদপুরে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে বুথে যান। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।

ক্যামেরা কই

জয়নগরে একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচনে ক্যামেরা না থাকার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি বুথে ক্যামেরা থাকা নিয়ম। কিন্তু জয়নগরে বেশ কয়েকটি বুথে ক্যামেরা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি বুথে ক্যামেরা থাকলেও তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। 

ভোট দিতে এসে জানলেন মৃত

বারুইপুরে সীতাকুণ্ডুতে এক ভোটার ভোট দিতে গিয়ে জানতে পারলেন যে তিনি মৃত। ভোটার লিস্টে তার নাম নেই। মৃত ভোটারের তালিকায় তার নাম উঠে গেছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা জানতে চেয়েছেন ওই ভোটার। তবে এদিন তাকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।

বারুইপুরের ভোট

দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বুথে শনিবার ভোট চলাকালীন বিক্ষোভকারীরা বুথে ঢুকে ব্যালট বাক্স তুলে তা পুকুরে ফেলে দেয়। পরে সেই বাক্স উদ্ধার হলেও পুনর্নিবাচনের কথা বলা হয়। সোমবার সকাল থেকে সেখানে ফের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে অনুব্রত মণ্ডলের প্রভাব কেমন?

উত্তরবঙ্গের ভোট

শনিবার সবচেয়ে বেশি গন্ডগোল হয়েছিল উত্তরবঙ্গে। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুর, কোচবিহার উত্তপ্ত ছিল। সবচেয়ে বেশি বুথে পুনর্নির্বাচন হবচ্ছে মুর্শিদাবাদে। সব মিলিয়ে ১৭৫ টি বুথে সেখানে নতুন করে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।মালদায় ১০৯টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। নদিয়ায় ৮৯টি বুথ, কোচবিহারে ৫৩টি, উত্তর২৪ পরগনায় ৪৬টি এবং উত্তর দিনাজপুরে ৪২টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে।

পুনর্নিবাচনে প্রতিটি বুথে এক সেকশন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। অর্থাৎ, একেকটি বুথে ৮জন করে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান থাকবে।

বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোটের প্রথম দিনেই কেন এমন ব্যবস্থা করা হলো না। প্রশ্ন উঠছে। কেন হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রতিটি বুথে যথেষ্ট পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায়নি। বস্তুত, শনিবারের ভোটে কোনো কোনো বুথে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদেরও দেখা গেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী সব জায়গায় থাকলে এত মৃত্যু দেখতে হতো না। বুথে ঢুকে বোমাবাজির ঘটনা ঘটতো না।

শাসকদল অবশ্য জানিয়েছে, রাজ্যে বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হয়েছে। সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। যেখানে গন্ডগোল হয়েছে, সেখানে বিরোধীদের উপর দোষ চাপানো হয়েছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, নির্বাচন কমিশন)