1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পচা পেঁয়াজের প্যাঁচে ভারত

স্যমন্তক ঘোষ নতুন দিল্লি
১৬ জানুয়ারি ২০২০

পেঁয়াজ নিয়ে মহা সমস্যায় ভারত। বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে না। অগত্যা তা গছানোর চেষ্টা বাংলাদেশকে।

https://p.dw.com/p/3WH27
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

যে পেঁয়াজ নিয়ে দু'দিন আগেও দেশ জুড়ে চরম সংকট তৈরি হয়েছিল, এখন সেই পেঁয়াজ নিয়েই অস্বস্তিতে ভারত সরকার৷ বিদেশ থেকে প্রায় ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যগুলো সে পেঁয়াজ কিনতে চাইছে না৷ অগত্যা বাংলাদেশকে সেই পেঁয়াজ বিক্রি করে ক্ষতি বাঁচানোর চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি এক কর্মকর্তার বক্তব্য, দিন কয়েক আগে বাংলাদেশের হাই কমিশনার রকিবুল হকের কাছে পেঁয়াজ বিক্রির প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে ভারত সরকার৷ তবে বাংলাদেশ সেই পেঁয়াজ কিনবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ বিষয়টি নিয়ে দরকষাকষি চলছে বলে জানা গেছে৷

এ বছর দেশে পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়নি৷ মহারাষ্ট্রে অকাল বৃষ্টি এবং খরার কারণে প্রচুর পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে নভেম্বর মাস থেকে পেঁয়াজের দাম ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ এক সময় তা পৌঁছে যায় ১৫০ টাকায়। পরিস্থিতি বুঝে দু'টি সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার৷ এক, বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি রাতারাতি বন্ধ করা হয় এবং দুই, পার্শ্ববর্তী দেশগুলি থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

বাণিজ্য বিষয়ক প্রবীণ সাংবাদিক জোসেফের বক্তব্য, ‘‘ভারত মূলত আফগানিস্তান, তুরস্ক এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে পেঁয়াজকিনেছিল৷ এই ধরনের পেঁয়াজের দাম বেশ কম৷ মানও খারাপ৷ প্রতি ম্যাট্রিক টন পেঁয়াজ ভারত কিনেছিল ৬০০ থেকে ৭০০ মার্কিন ডলারে৷ কিন্তু ভারতের বাজার সেই পেঁয়াজ নেয়নি৷ ক্রেতাদের বক্তব্য, ওই পেঁয়াজের স্বাদ অত্যন্ত খারাপ৷’’ ফলে রাজ্যগুলো কেন্দ্রের কাছে পেঁয়াজের যে চাহিদা পাঠিয়েছিল, বাজার বুঝে তা ফিরিয়ে নেয়৷ 

দেশের ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, আসাম, হরিয়ানা এবং কর্নাটক কেন্দ্রের কাছে সব মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার ম্যাট্রিক টন পেঁয়াজ চেয়েছিল৷ কিন্তু পরে তা নেয়নি৷ সরকার এই পেঁয়াজ রাজ্য গুলির কাছে প্রতি কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল৷ রাজ্য সরকারগুলি বাজারে তা বিক্রি করছিল ৭০ টাকায়৷ কিন্তু রাজ্যগুলি পিছিয়ে আসায় এখন এই বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ প্রায় ১৮ হাজার ম্যাট্রিক টন পেঁয়াজ পড়ে আছে মুম্বই বন্দরে। খুব দ্রুত তা চালান করতে না পারলে সরকারের বড়সড় ক্ষতি হবে৷ সে জন্যই বাংলাদেশকে প্রতি ম্যাট্রিক টন পেঁয়াজ ৫০০ থেকে ৫৫০ ডলারে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷

সমস্যা হল, বাংলাদেশ বহুদিন ধরেই ভারতের থেকে পেঁয়াজ নেয়৷ এ বছর আচমকা ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন খোদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছিলেন, এভাবে আচমকা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁর দেশ সমস্যায় পড়েছে৷ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের বিষয়টি আগে থেকে বলা উচিত ছিল৷ কিন্তু গত তিন মাসে চীন এবং নেপাল থেকে পেঁয়াজ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ৷ এখন ভারত আচমকা এত পেঁয়াজ রপ্তানি করতে চাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বাংলাদেশ সরকার৷ সবচেয়ে বড় কথা, খারাপ মানের পেঁয়াজ বাংলাদেশ আদৌ নেবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে৷ যদিও সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশ বিষয়টিকে একেবারে ফেলে দেয়নি৷ বরং দরকষাকষির দিকেই তারা এগোচ্ছে৷ পেঁয়াজ বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও ভারতকেই করতে হবে, এমন শর্তও দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানাচ্ছে৷

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ৷
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য