নেপালী ভাষী শরণার্থীদের আবার যেতে দেয়া হবে ভুটানে
২৯ জুলাই ২০১০হিমালয় পাদদেশের পাহাড়ি দেশ ভুটানে রয়েছে ২০টি ভাষা৷ এই ভাষাভাষীদের সংখ্যা একেবারে কম নয়, আটষট্টি লাখ৷ শত বছর ধরে বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোকেরা ভুটানি ভাষী জনগণের সঙ্গে দারুণ এক সৌহার্দ্য নিয়েই বাস করে আসছিলেন৷ কিন্তু সমস্যাটি বাঁধলো ১৯৮৮ সালে৷ সে সময়ে করা জরিপে সে দেশের সরকার দেখতে পেলো, দেশের দক্ষিণ প্রান্তের দুই জেলায় নেপালী ভাষী মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে৷ এই নেপালী ভাষীরা মূলত নেপাল থেকে নানা কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ভুটানে এসে বসবাস করছেন৷ এরা মূলত শরণার্থী হিসাবেই চিহ্নিত৷
তখন এই ভাষাভাষী মানুষকে নিয়েই শংকায় পড়ে গেল সেখানের সরকার৷ তারা মনে করছে, এর ফলে ভুটানীদের আত্মপরিচয় এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখোমুখি হবে৷ আর তাই সরকার লক্ষাধিক নেপালী শরণার্থিকে বহিষ্কার করে পাঠিয়ে দেয় নিজ দেশ নেপালে৷ নেপাল সেই শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদেরকে নিজ দেশের নাগরিক হিসাবে মেনে নেয়নি৷ কিন্তু এভাবে তো আর চলতে পারে না৷ তাই এগিয়ে এসেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন বা ইউএনএইচসিআর৷ তারা এদের জন্য তৈরি করে দিয়েছে বাস্তু৷ দিচ্ছে রেশনও৷
ভুটান সরকারের কাছ থেকে বিতাড়িত হওয়া অনেক নেপালী শরণার্থী ইতিমধ্যে পাড়ি জমিয়েছে তৃতীয় দেশে৷ এদের সংখ্যা একেবারে কম নয়৷ ৩৩ হাজার৷ এদের বেশীরভাগ অংশই আশ্রয় নিয়েছেন মার্কিন মুল্লুকে৷ আর এ কাজে সহায়তা করেছে খোদ ইউএনএইসসিআর৷ নেপালে এই অফিসের মুখপাত্র নিনি গুরুং জানালেন, ‘‘তারা আমাদেরকে এখন ই-মেল লেখে, সময় পেলে টেলিফোন করে৷ তারা তাদের জীবনের কথা আমাদের জানায়৷ আমরা জেনে খুবই খুশি হয়েছি, যে তৃতীয় দেশের মূল ধারার সঙ্গে যেন কোন সমস্যা না হয় তাই, তারা সেখানকার ভাষা শিখছেন৷ এদের অনেকেই নানা চাকরিও পেয়ে গেছেন৷''
তবে এরই মধ্যে ইউএনএইচসিআর একটি উদ্যোগ নিয়েছে ভুটান সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর৷ তারা নেপালে অবস্থান করা সেই শরনার্থীদের প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, ‘‘আপনারা যদি আবার ভুটান আসতে চান, তাহলে কোন সমস্যা নয়৷ আবার সেখানে আসতে পারেন৷'' এতে তরুণ শরনার্থীরা খুশি না হলেও বয়োজ্যেষ্ঠরা বেশ খুশি৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন