1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনের মুখে পদত্যাগ করল প্যালেস্টাইনের নির্বাচন কমিশন

৫ জানুয়ারি ২০০৬

ইজরায়েলের অসুস্থ প্রধানন্ত্রী আরিয়েল শারোণ সরে গেলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করছে প্যালেস্টাইনের জঙ্গী সংগঠন হামাস৷ ওদিকে, আসন্ন নির্বাচনের মুখে একটু বিপাকে পড়ল প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ৷ প্যালেস্টাইনের নির্বাচন কমিশন কয়েকটি দাবীর ভিত্তিতে পদত্যা

https://p.dw.com/p/DPsC
ছবি: AP

�ের সিদ্ধান্ত নেয় গতকাল৷

আরিয়েল শারোণের অসুস্থতা এবং সেইসঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবার বিষয়টি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার সূত্র এনে দিয়েছে প্যালেস্টাইনের জঙ্গী সংগঠন হামাসের কাছে৷ শারোণবিহীন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি অনেক স্বস্তির হয়ে উঠবে বলে মনে করছে তারা৷ গাজা শহরে গতকাল সংবাদংস্থা এ এফ পি কে হামাসের প্রধান মুখপাত্র শামি আবু জুহরি একথা জানান৷ প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষের ওপর শারোণ যে অন্যায় করেছেন, এই অসুস্থতাকে তার সাজা হিসাবে ব্যাখ্যা করেছে হামাস৷ বস্তুত শারোণ জমানায় ২০০১ সাল থেকে যেভাবে ইজরায়েলি বাহিনী প্যালেস্টাইনের জঙ্গী নেতাদের নিধন করেছে, তাতে শারোণের ওপর মোটেও সন্তুষ্ট নয় প্যলেস্টাইনের জঙ্গী সংগঠনগুলি৷ ১৯৮২ সালে লেবাননের প্যালেস্টাইনি শরণার্থী শিবির শাবরা আর শাটিলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে অপর এক প্যালেস্টাইনি জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক জিহাদের নেতা খালেদ আল বাতস জানান, ওই হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়ক যেহেতু শারোণ ছিলেন, অতএব তাঁর বর্তমান অবস্থা ওই ঘটনারই শাস্তি৷ প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে লেবাননের শাবরা এবং শাটিলা শরণার্থী শিবিরে ইজরায়েল ঘনিষ্ঠ একটি ক্রিশ্চান জঙ্গীগোষ্ঠীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ ওই ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৮৩ সালে শারোণকে তাঁর তত্কালীন দায়িত্বভার অর্থাত্ ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয়৷ তবে ইজরায়েলের ইহুদিপন্থী রাজনীতিতে শারোণের থাকা বা না থাকায় তেমন কোনো পরিবর্ত্তন ঘটবে না বলে মন্তব্য করেছে দামাস্কাস ভিত্তিক অপর একটি সংগঠন লিবারেশন ফর প্যলেস্টাইন৷

ওদিকে, আগামী ২৫ জানুয়ারী প্যালেস্টাইনের প্রস্তাবিত নির্বাচনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিল প্যালেস্টাইনের নির্বাচন কমিশন৷ তবে প্রশাসন তাদের দাবী মেনে নিলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে কমিশন সূত্রের খবর৷ রামাল্লায় বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের প্রেসিডেন্ট হান্না নাসের সংবাদসংস্থা রয়টারকে বলেন, প্যালেস্টাইনের ষাট হাজার নিরাপত্তাকর্মীর ভোটদান বিষয়ক নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিপরীতে গেছে প্যালেস্টাইন প্রশাসন৷ কমিশন চেয়েছিল নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের নিজ নিজ জেলায় গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন৷ কিন্তু আহমদ কুরেই এর প্রশাসন সম্প্রতি একটি সরকারী সার্কুলার জারী করে জানায়, ব্যারাকেই ভোট দেবেন নিরাপত্তাকর্মীরা৷ কমিশনের সিদ্ধান্তকে প্রতিপদে এভাবে ব্যাহত করায় অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তবে নির্বাচন কমিশনের এই দাবী মেনে নেওয়া ছাড়া কুরেই প্রশাসনের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই, কারণ প্যালেস্টাইনের নির্বাচন কমিশনই একমাত্র সংগঠন যারা নির্বাচন আয়োজনের যাবতীয় বিষয় দেখভালের অধিকারী৷ তাই, কমিশন দায়িত্বভার না নিলে নির্বাচন ভেস্তে যাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে৷

নির্বাচন ভেস্তে না গেলেও নির্বাচনের দিন নিয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যেভাবে নানারকমের সমস্যার মধ্যে রয়েছেন, তাতে নির্বাচনী নির্ঘন্ট পিছিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা৷ কারণ প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী আহমদ কুরেই এই নির্বাচনের বিরোধীতা করে আগেই প্রার্থী তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছেন৷ এছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন মহল থেকেও চাপ রয়েছে প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ওপর৷ সকলেই চাইছেন নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিতে৷

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়