1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই মেরুতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি

৯ অক্টোবর ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আলাদা বৈঠকে সব পক্ষই একমত যে, নির্বাচন হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ৷ তবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে করণীয় নিয়ে এখনও দুই মেরুতে দুই দল৷

https://p.dw.com/p/4XIwN
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে নির্বাচনের আগে বিএনপি শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ চায়৷ অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মত, শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না আর বিএনপির এই দাবির ফলেই সমঝোতা বা আলোচনার আর কোনো জায়গা থাকছে না৷

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে শনিবার ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সাত সদস্য।

দুপুরে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অঙ্গীকারবদ্ধ৷'

কাদের বলেন, 'বিএনপি সভা-সমাবেশে যেভাবে মিথ্যা তথ্য, ভুল তথ্য উপস্থাপন করে। আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে সঠিকতা আমাদের বলতে হয়েছে। আমরা কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু দেশে আজকে এমন এমন গুজব-মিথ্যাচার চলছে, যার জবাব অবশ্যই রাজনৈতিক দল হিসেবে, ক্ষমতাসীন হিসেবে সব অভিযোগ যেহেতু আমাদের বিরুদ্ধে, তার জবাব আমাদের দিতে হবে।'

'তারা বলেছে যে, কম্প্রোমাইজ ও অ্যাডজাস্টমেন্টের কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কি না? তখন আমরা বলেছি, কম্প্রোমাইজ ও অ্যাডজাস্টমেন্টের স্পেস থাকতে হবে। সেই স্পেস বিএনপি রাখেনি। তারা সেই স্পেস ব্লক করে দিয়েছে। তারা (বিএনপি) প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়। আমরা প্রতিনিধি দলকে জিজ্ঞাসা করেছি, প্রধানমন্ত্রী কেন পদত্যাগ করবে? কী কারণ? সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে নাকি রাস্তায় জনগণের উপচে পড়া ঢল! দেশের ৭০ ভাগ ভোটার শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে,' বলেন কাদের।

তিনি বলেন, 'প্রতিনিধি দল বলেছে তারা কোনো বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে আসেনি। তারা এখানে একটা ভালো নির্বাচন দেখতে চায়। আমরাও বলেছি, আমরা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।''

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি৷ দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ।

পরে গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের জানান,

"আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে বলে আসছি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। বিগত দুই-তিনটি নির্বাচনে তারা বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।"

তিনি আরো বলেন , "বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ নয়, আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ যেমন দেখতে চায়, বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোও চায়।" নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছে বিএনপি।

আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই পর্যবেক্ষক দল নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক পর্যবেক্ষক, নারী ও যুব সংগঠন, সুশীল সমাজ, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে।

এমকে/এপিবি (দ্য ডেইলি স্টার)