1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছে বিএনপি

সমীর কুমার দে ঢাকা
৪ জানুয়ারি ২০১৯

মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে দেখা করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল৷ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি নির্বাচন নিয়ে কথা বললেও কী কী কথা হয়েছে তা জানা যায়নি৷ 

https://p.dw.com/p/3B2bS
ছবি: bdnews24.com

শুক্রবার সকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় গিয়ে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল৷ এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ছিলেন৷ বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে? ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘অবশ্যই নির্বাচন নিয়ে৷ তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে এটা একটা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক৷ ফলে এই বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু আমরা বলতে চাই না৷ আর যদি এটা আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতো, তাহলে তারাও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতো, আর আমরাও সেখান থেকে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাতাম৷''

তবে বিএনপির অন্য একটি দায়িত্বশীল সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে সদ্য শেষ হওয়া ভোটের অনিয়ম বা কারচুপির কিছু তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গিয়েছিল বিএনপির প্রতিনিধি দল৷ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলা বৈঠকে সেই সব তথ্য-উপাত্ত দেখানো হয়৷ পাশাপাশি এই সরকারকে সমর্থন না দিতেও মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন বিএনপি নেতারা৷

‘এটা একটা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক’

প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে কারচুপির চেয়েও বেশি আলোচনা হওয়ার কথা বিএনপির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন কিনা সেই বিষয়ে৷ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, ‘‘বিএনপির উচিত সংসদে যাওয়া৷'' তবে ডয়চে ভেলেকে তিনি আরো বলেছেন নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি জানা খুব অস্বাভাকিক নয়৷ তাঁর মতে, ‘‘বড় দেশগুলোর একটা ভূমিকা থাকে৷ তাদের সহযোগিতা তো আমাদের পেতে হয়৷ দেখেন অনেকগুলো বড় দেশ ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ এখানে তাদের বৈঠকে এগুলো নিয়ে কথা হওয়ার চেয়ে তারা নিজেরা সংসদে যাচ্ছেন কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ৷ তাদের জোট ঐক্যফ্রন্ট তো ৭টি আসনে জিতেছে৷ তারা এখনও শপথ নেননি, নেবেন না বলছেন৷ সেগুলোই এখন প্রধান আলোচনা বলেই মনে হয়৷''

‘বিএনপির উচিত নিজেদের শক্তির উপর ভরসা রাখা’

গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিএনপি ও তাদের জোট ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা সব মিলিয়ে সাতটি আসন পেয়েছেন, যা দলটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম৷ অন্যদিকে নিরঙ্কুশ জয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ৷ নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যে ২৮৮ জন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের কাছে শপথ নিলেও ভোটের ফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানানো বিএনপির নির্বাচিতরা শপথ নেননি৷

এর মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ শুক্রবার সংবাদপত্রে বিবৃতি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা মন্ত্রীসভায় যোগ দিচ্ছেন না৷ তাঁরা বিরোধী দলে থাকবেন৷ তিনি নিজে হবেন বিরোধী দলীয় নেতা এবং তাঁর ভাই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের হবেন বিরোধী দলীয় উপনেতা৷ কয়েকদিন আগে পৃথক বিবৃতিতে এরশাদ জানিয়েছিলেন, তাঁর অবর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন তাঁর ভাই জিএম কাদের৷ সবাইকে সহযোগিতার অনুরোধও করেছেন তিনি৷''

‘বিএনপির উচিত সংসদে যাওয়া’

ইতিমধ্যে নির্বাচন সফল করার জন্য বাংলাদেশি জনগণের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে নির্বাচন নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি৷ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে এখন অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত কতটা গুরুত্ব বহন করে? সাবেক রাষ্ট্রদূত এম জমির মনে করেন, ‘‘দেখেন, বিএনপির উচিত নিজেদের শক্তির উপর ভরসা রাখা৷ তারা যেটা বলতে চায় সেটা তাদের সংসদে গিয়ে বলা উচিত৷ সেটা সংখ্যায় যতই কম হোক, তারা নিজেদের কথাগুলো তো বলতে পারবে৷''

জনাব জমির বলেন, ‘‘এখন বিএনপি নেতারা এর বাসায় ওর বাসায় ধর্ণা দিয়ে কী করবেন? তাই তাঁদের প্রতি আমার পরামর্শ– এমপিরা শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দিন, সেখানে কথা বলুন৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘তাদের ওখানেও (যুক্তরাষ্ট্র) ভোট হয়, বহু বিদেশি অনেক কথা বলেন, সেটা কতটা তারা গুরুত্ব দেয়? এগুলো নিয়ে না ভেবে আমি সবাইকে বলব, ইতিবাচকভাবে সবকিছু দেখতে৷''