নায়াগ্রা জলপ্রপাতের আকর্ষণে ছুটছেন পর্যটকরা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন নায়াগ্রা জলপ্রপাত৷ প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডার সীমান্তে অবস্থিত নায়াগ্রা জলপ্রপাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছোটেন লাখ লাখ মানুষ৷
প্রকৃতির গর্জন
আইস এজ এর শেষদিকে অর্থাৎ আনুমানিক ১২ হাজার পূর্বে নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি গঠিত হয়েছিল৷ বরফের পর্বত থেকে নিঃসৃত পানিতেই তৈরি হয়েছিল গ্রেট লেক এবং নায়াগ্রা নদী৷ তীব্র পানির স্রোতেই এখানকার স্থলভাগ দ্বিখণ্ডিত হয় এবং জলপ্রপাতটি গঠিত হয়৷ উনিশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলে নায়াগ্রা জলপ্রপাত পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়৷
তিনটি জলপ্রপাত, ২টি দেশ
অনেক দর্শনার্থীই আসলে বুঝতে পারেন না যে নায়াগ্রা জলপ্রপাত আসলে তিনটি ভিন্ন জলপ্রপাতের সমন্বয়ে গঠিত৷ এই ছবির ডানদিকের হর্সশু জলপ্রপাতটির অবস্থান ক্যানাডাতে, বামদিকেরটি অ্যামেরিকান জলপ্রপাত এবং মাঝের ছোট্ট ব্রাইডাল জলপ্রপাতের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রে৷
ভয়ংকর যাত্রা
দর্শনার্থীদের একদম কাছ থেকে জলপ্রপাতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ১৮৪৬ সালে সর্ব প্রথম ‘মেইড অফ দ্য মিস্ট’ নামের নৌযাত্রার সূচনা হয়৷ ইঞ্জিনচালিত ছোট্ট জাহাজটি অ্যামেরিকার দিক থেকে ছাড়লেও একই ধরনের জাহাজ ক্যানাডা সীমান্ত থেকেও ছেড়ে আসে৷ তীব্র স্রোত আর ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে এই নৌভ্রমণ ছাড়া নায়াগ্রা দর্শন পরিপূর্ণ হয় না বলে মনে করেন সবাই৷
প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত
সীমান্তের দু’পাড় থেকেই দর্শনার্থীরা চাইলে বিভিন্ন দিক থেকে নায়াগ্রার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন৷ আবহাওয়া ভালো থাকলে তারা রংধনুও দেখতে পারেন সেখানে৷ পাশেই রয়েছে রেইনবো ব্রিজ যেখান থেকে ভিন্ন আরেক সৌন্দর্য দেখা যায় নায়গ্রার৷
সাহসী যাত্রা
রোমাঞ্চপ্রেমীদের জন্য সবসময় নায়গ্রা জলপ্রপাত একটি আকর্ষণীয় জায়গা ছিল৷ ১৯০১ সালে সর্বপ্রথম অ্যামেরিকান শিক্ষক অ্যানি এডসন টেইলর ছোট্ট একটি কাঠের নৌকা ক্রে হর্সশু জলপ্রপাতটি পাড়ি দেন৷ যদিও বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারেননি তিনি৷
বিদ্যুতের প্রধান উৎস
শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয়, নায়াগ্রা জলপ্রপাত জলবিদ্যুতের অন্যতম প্রধান উৎস৷ ৬৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হওয়া পানি থেকে সর্বপ্রথম ১৮৯৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়৷ জলপ্রপাতটি দিয়ে প্রবাহিত অন্তত ৫০ শতাংশ পানি বিদ্যুৎ উদপাদনে ব্যবহৃত হয়৷