নাভালনির বাড়ি-অফিসে তল্লাশি
২৮ জানুয়ারি ২০২১গোটা বিশ্বে যতই প্রতিবাদ হোক। নাভালনির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জার্মানি-অ্যামেরিকা রাশিয়ার উপর যতই চাপ তৈরি করুক, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন নিজের অবস্থানে অনড়। বুধবার তা আরো একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। এদিন রাশিয়ায় নাভালনির যতগুলি বাড়ি আছে এবং তাঁর প্রতিটি অফিস এবং স্টুডিওয় তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে একাজ করেছে পুলিশ।
বুধবার আগাম বার্তা না দিয়েই নাভালনির একাধিক বাড়ি এবং তাঁর আত্মীয়দের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। একটি বাড়িতে নাভালনির ভাই ছিলেন। অন্যটিতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, লাথি মেরে দরজা ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢুকেছে পুলিশ। নাভালনির স্ত্রী উইলিয়া তাঁর আইনজীবীকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবী ডয়চে ভেলের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি। রাশিয়ার আইন অনুযায়ী যা সম্পূর্ণ বেআইনি। নাভালনির ভাই ওলেগও একই অভিযোগ করেছেন।
এদিন নাভালনির বাড়ির পাশাপাশি তাঁর একাধিক অফিসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মূলত কাজ করে তাঁর অফিস। রাশিয়ার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি নিয়ে একাধিক রিপোর্ট তৈরি করেছে নাভালনির দপ্তর। সম্প্রতি তারা প্রেসিডেন্ট পুটিনের একটি প্রাসাদের সন্ধান দিয়েছেন। কৃষ্ণসাগরের ধারের ওই প্রাসাদ দুর্নীতির টাকায় কেনা বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। পুটিন কিংবা তাঁর প্রশাসন অবশ্য সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ায় প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এদিন নাভালনির সেই প্রতিটি অফিসেই তল্লাশি চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য বহু নথি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
গত সপ্তাহে নাভালনির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। রাশিয়ার প্রায় ১০০টি অঞ্চলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সব মিলিয়ে পুলিশ চার হাজারেরও বেশি প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করে। তাতেও প্রতিবাদ থামেনি। মস্কোয় প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে। তারই মধ্যে বুধবার পুলিশের এই কাজে উত্তাপ আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জার্মানি গোড়া থেকেই নাভালনির নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছে। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানিয়েছেন, নাভালনিকে মুক্তি না দিলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার রাস্তায় হাঁটবে জার্মানি। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। কিন্তু রাশিয়া এখনো পর্যন্ত অবস্থান বদল করেনি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)