ধুম্রজালের মধ্যে সু চি’র মুক্তির প্রতীক্ষায় ভক্তরা
১৩ নভেম্বর ২০১০মিয়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীর জেনারেল অং সানের সুযোগ্য কন্যা সু চি৷ ১৯৯০ সালের নির্বাচনে বিপুল সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু দেশটির সামরিক শক্তি তাঁকে সরকার গঠন করতে না দিয়ে এতোদিন পর্যন্ত নানা অজুহাতে রেখেছে গৃহবন্দি৷ সামরিক জান্তার দেওয়া সর্বশেষ ১৮ মাসের বন্দিদশার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ শনিবার৷ তাই এই শুভলগ্নে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সু চি'কে মুক্ত দেখতে ইয়াঙ্গুনের পানে চেয়ে রয়েছে বিশ্বের গণতন্ত্র প্রেমী মানুষ৷ আর সু চি'র অসংখ্য ভক্ত অধীর আগ্রহে পথ চেয়ে রয়েছে তাদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তির জন্য৷ করছে প্রার্থনা, নিচ্ছে নানা প্রস্তুতি৷ কিন্তু বিশ্লেষকরা এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না যে, আবারো কোন অজুহাতে বন্দিত্ব বাড়ানো হতে পারে সু চি'র৷
এখন পর্যন্ত সু চি'র মুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক আভাস পাওয়া গেছে বিভিন্ন সূত্র থেকে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি'কে জানিয়েছেন যে, ‘‘কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দেবেন৷ এটা নিশ্চিত৷'' অপর কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘‘পরিকল্পনামাফিক তিনি মুক্তি পাবেন৷'' সু চি'র অন্যতম আইনজীবী নাইয়ান উইন বলেছেন, ‘‘আইন অনুযায়ী তাঁর বন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব নয়৷ দেশের স্বার্থেই তাঁকে মুক্তি দিতে হবে৷'' তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, সামরিক শক্তি যে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ভাবছে তাদের জন্য কোন হুমকি ডেকে না আনার শর্ত জুড়ে দেওয়া হতে পারে সু চি'র মুক্তির সাথে৷ অবশ্য, তাঁর আইনজীবী নাইয়ান উইনের মত, এ ধরণের কোন শর্ত মানতে রাজি হবেন না সু চি৷
তবে জল্পনা-কল্পনা যা-ই হোক না কেন, সু চি'র মুক্তির সম্ভাবনার খবরে উল্লসিত তাঁর ভক্তরা৷ শুক্রবার সু চি'র দল জাতীয় গণতান্ত্রিক লিগ - এনএলডি'র প্রধান কার্যালয়ে ভিড় করেছিল ছয় শতাধিক নেতা-কর্মী৷ তাদের হাতে এবং গায়ে ছিল সু চি'র ছবি ও স্লোগান সম্বলিত নানা ব্যানার, ফেস্টুন এবং টি-শার্ট৷ এগুলোর একটিতে দেখা গেছে, ‘‘আমরা অং সান সু চি'র সাথে রয়েছি৷'' একটি ব্যানারে লেখা, ‘‘অং সান সু চি'র মুক্তির এখনই সময়৷'' তাঁর দলের সদস্য মে উইন মিন্ট বললেন, ‘‘তিন-চার দিন ধরে আমি ঘুমাতে পারিনি শুধু এই কথা ভেবে যে, তিনি মুক্তি পেলে আমাদের কী বলা উচিত৷'' এছাড়া ভক্তরা জানালেন যে, প্রিয় নেত্রীর মুক্তির জন্য তারা প্রার্থনা করছেন৷ আবার কেউ কেউ সু চি'র মুক্তির ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে রক্ত দান করবেন৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা