দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভ
৩১ ডিসেম্বর ২০১২লড়াই শেষ করে দিল্লির বাসে ধর্ষিতা তরণীর মৃত্যু গোটা দেশের বিবেককে কাঁপিয়ে দিয়ে গেল৷ বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বাতিল করলো প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷ কংগ্রেস মুখপাত্র জানালেন, নতুন বছরের শুভেচ্ছা সোনিয়া গান্ধী নেবেন না এবং জানাবেন না৷ এমনকি, প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন শাখাও নতুন বছরের সব অনুষ্ঠান বাতিল করেছে৷
সর্বত্র চলেছে শোকসভা৷ এমন একটি শোকসভায় আবেগ মথিত কণ্ঠে বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ বললেন, শোক আছে, রোষ আছে৷ বেদনা আছে, আক্রোশ আছে৷ এ জিনিস চলতে পারে না৷ ধর্ষণ ও নারী নিগ্রহ রোধে কী কী করণীয় – তা নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানান তিনি৷
এই দাবি সমর্থন করে বামদল বলেছে, দেশে বিচারকের অভাব আছে৷ পুলিশ, বিশেষ করে মহিলা পুলিশের সংখ্যা কম আছে৷ দিল্লির পাবলিক বাসে নিরাপত্তা বাড়ানো ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতে সরকার সংসদের অধিবেশন ডাকলে বামদল তা সমর্থন করবে৷
পাশাপাশি চলেছে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ, অগ্নি শপথ দিল্লি ও অন্যত্র৷ কিন্তু তবুও দিল্লির পাবলিক বাসে রাতের সফরের চেহারাটা বদলায়নি৷ দু'দিন আগেই দিল্লির এক সরকারি বাসে এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়৷ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গেও৷
ধর্ষণ রোধে আইন সংশোধনের এক খসড়া তৈরি করেছে কংগ্রেস৷ তাতে অপরাধির ৩০ বছর জেল, ক্ষেত্র বিশেষে অপরাধির যৌনক্ষমতা রাসায়নিক প্রয়োগে নষ্ট করে দেয়া রয়েছে৷ খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে তা পাঠানো হবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে.এস ভার্মা কমিটির কাছে৷
এদিকে, বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন মন্তব্যে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে৷ এক বিজেপি বিধায়ক কিশোরীদের স্কার্ট না পরার কথা বলায় উত্তেজিত এক তরুণীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মেয়েরা কী পোষাক পরবে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা! সেটা ছেলেদের ক্ষেত্রে নয় কেন?''
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া করার পাশাপাশি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন জরুরি৷ তা না হলে ফাঁসির ভয়ও শেষ পর্যন্ত ধর্ষণ বন্ধ করতে পারবে না৷