1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যবাংলাদেশ

ধর্মঘটে ঢাকা পড়ে মৃতদেহের সারি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২১ জুলাই ২০২৩

ঢাকার বেসরকারি সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতক এবং প্রসূতির মৃত্যুতে দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট অবশেষে স্থগিত হয়েছে৷ ওই দুই চিকিৎসকের জামিন হওয়ার পর ধর্মঘট স্থগিত করা হয়৷

https://p.dw.com/p/4UExq
Krankenhaus in Bangladesch
ঢাকার একটি হাসপাতারের ছবি৷ ফাইল ফটো৷ছবি: picture-alliance/dpa

তবে এই ঘটনায় আবার স্পষ্ট হলো, চিকিৎসদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া খুব কঠিন৷ বাংলাদেশে চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুলের কারণে প্রতিকার পাওয়ার আলাদা কোনো আইন নেই৷ ক্ষতিপুরণ বা ফৌজদারী মামলা করলে তা থেকে প্রতিকার পাওয়া কঠিন৷ কারণ, চিকিৎসকরা এর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান নেন৷ রোগীদের জিম্মি করে ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি দেন৷ আর বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলেও (বিএমডিসি) অভিযোগ করে তেমন প্রতিকার পাওয়া যায় না৷
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তারা গ্রেপ্তার হলে চিকিৎসকরা মাঠে নেমে যান৷ তারা রোগীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিয়ে, রোগীদের জিম্মি করে তারা যা চান তা আদায় করে নেন৷ এর ফলে পরিস্থিতি এখন চিকিৎসক আর রোগীরা যেন পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন৷ অথচ সম্পর্কটি সেবা দেয়া আর নেয়ার৷ 
যা ঘটেছে সেন্ট্রাল হাসপাতালে
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে গত ৯ জুন ভর্তি হন মাহাবুবা রহমান আঁখি৷ কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই ছিলেন না৷ পরে তার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা আঁখির ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন৷ পরে আঁখির সন্তানের জটিলতা দেখা দেয়ায় তাকে এনআইসিইউতে রাখা হয়৷ একই সঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷গত ১০ জুন বিকেলে আঁখির সন্তানের মৃত্যু হয়৷ এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন ৷ মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকেও আসামি করা হয়৷ ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ এরপর গত ১৮ জুন দুপুরে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহবুবা রহমান আঁখিও মারা যান৷ গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ জুন ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা দায় স্বীকার করে আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন৷ গত ১৬ জুন আদালত সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব ধরনের অপারেশন বন্ধের নির্দেশ দেন৷
গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি৷ এ সময় তার শারীরিক অবস্থা ‘স্বাভাবিক’ ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন৷ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্তও করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা৷৯ জুন দিবাগত রাত একটার দিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হলেও ওই সময় ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না৷ অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানায়, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন৷
এই পরিস্থিতিতে গত ১৭ জুলাই থেকে দুই দিন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখা বন্ধ এবং চেম্বার ও হাসপাতালে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধের কর্মসূচি পালন শুরু করেন গাইনি চিকিৎসকরা৷ এর আগে ১৬ জুলাই তারা সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন৷ তবে ১৮ জুলাই দুপুরের পর দুই চিকিৎসকের জামিন হওয়ায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন৷

এই ধর্মঘট অমানবিক এবং অন্যায়: এস এম নাজের হোসেন

আরো কিছু ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ মৃত্যু ও ধর্মঘট

রোগীদের ‘জিম্মি’ করে দাবি আদায়ের প্রবণতা নতুন নয়৷ ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে ২০ রোগীর চোখের ভুল চিকিৎসার কারণে আদালত ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপুরণের নির্দেশ  দেন৷ তখন আদালত বলেন, ‘‘একজন পুলিশ, অপরজন আইনজীবী এবং ডাক্তার৷ তিনটি পেশার যদি কিছু কিছু দুর্বৃত্তের কারণে ধ্বংস হয়, তবে মানুষ বিপদে পড়বে৷  ডাক্তাররা দেবতা নন৷ আমাদের ভুল হবে বলে আমাদের একটা উচ্চ আদালত রয়েছে৷ ভুলটা অন্যায় নয়৷ কিন্তু ভুলটা জাস্টিফাই করার জন্য যদি  ধর্মঘট ডাকা হয়, তবে তা  অন্যায়৷’’ 
তখন আদালত ভুল চিকিৎসায় চট্টগ্রামে শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনাও উল্লেখ করেন৷ ২০১৮ সালের আগস্টে ওই মৃত্যুর ঘটনায়ও চার চিকিৎসককে আটক করা হয়েছিল৷ কিন্তু চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালের মালিক ও চিকিৎসকদের টানা ধর্মঘটের কারণে তাদের জামিন দেয়া হয়৷
এর আগে ২০১৬ সালেও চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা টানা চারদিন ধর্মঘট করেন৷ ওই বছরের  জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করায় চিকিৎসকরা ধর্মঘট করেন৷
আর এই ভুল চিকিৎসার অভিযোগে প্রায়ই রোগীদের স্বজন এবং চিকিৎসকদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে৷ ২০১৭ সালের মার্চে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করলে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  ইনটার্ন চিকৎসকরা রোগীর এক আত্মীয়কে মারপিট করেন৷ সেই ঘটনায় চারজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে বগুড়ার চিকিৎসকরা ধর্মঘটে যান৷ পরে শাস্তি প্রত্যাহার করলে তারাও ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন৷ ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছিলেন, ‘‘রোগীকে সেবা দেয়ার দায়িত্বে রয়েছেন চিকিৎসকরা৷ রোগীর স্বজনরা যদি আহত হয়, লাঞ্ছিত হয় এবং রোগী  অবহেলায় মুত্যুবরণ করে, এটা তো উপেক্ষা করা সম্ভব না৷ এর প্রতিবাদে যদি চিকিৎসকরা কর্মবিরতি করে, সেটাও তো দুঃখজনক৷ রোগীকে জিম্মি করে তো কোনো চিকিৎসক এভাবে ধর্মঘট করতে পারে না৷ এটা শুধু বেআইনি-ই নয়, অমানবিক৷’’

অভিযোগ আছে, প্রতিকার নেই
বাংলাদেশে চিকিৎসার অবহেলার ব্যাপারে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)-র অভিযোগ করা যায়৷ কিন্তু ওখানে অভিযোগ করলে শক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন নজির নেই৷ যারা ওখানে অভিযোগের নিস্পত্তি করেন তারা সবাই চিকিৎসক৷ ফলে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান৷ বিএমডিসি আইনের ২০১০-এর ধারা-২৩ অনুসারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত চিকিৎসকের নিবন্ধন বাতিল করার ক্ষমতা আছে৷ আরো কিছু আইনে চিকিৎসা ও ওষুধ সংক্রান্ত অপরাধের প্রতিকারের বিধান আছে, যেমন : ড্রাগস অ্যাক্ট, ফার্মেসি অর্ডিন্যান্স, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক প্র্যাকটিশনার্স অর্ডিন্যান্স, মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯, নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন আইন ইত্যাদি৷
তবে ভুল চিকিৎসা বা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং আইনগত প্রতিকারের জন্য দেশে একক কোনো আইন কার্যকর নেই৷ ২০১৬ সালে ‘রোগী এবং স্বাস্থ্যসেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা আইন’ নামে একটি আইন প্রস্তাব করে সরকার৷ কিন্তু এ আইনটি এখনও কার্যকর হয়নি৷ আইনটির খসড়া প্রকাশের পরই সেটা নিয়ে সমালোচনা হয়৷ কারণ, প্রস্তাবিত আইনে রোগী নয়, বরং চিকিৎসকদের সুরক্ষার দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে৷ খসড়ায় বলা হয়েছে চিকিৎসকের ভুলের অভিযোগ উঠলে চিকিৎসক বা অন্য সেবাদানকারীদের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা যাবে না৷ অন্যদিকে কোনো ব্যক্তি স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের প্রতি সহিংস আচরণ করলে এবং প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করলে তা জামিন অযোগ্য অপরাধ হবে বলে গণ্য হবে৷

ফৌজদারী অপরাধ করলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করায় বাধা নেই: অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ

বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নাই৷ এর মধ্যে অন্যতম হলো ভুল চিকিৎসা বা চিকিৎসায় অবহেলা৷ সম্প্রতি ঢাকার একটি ‘স্বনামধন্য’ হাসপাতালে এক রোগীকে তিন মাস ধরে যুক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু পরে দেখা গেছে তার যক্ষ্মাই হয়নি৷ কিন্তু তার অবস্থা এখন গুরুতর৷ আবার অপারেশনের পর পেটে ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেয়ার অভিযোগ আছে৷ আছে ডান পায়ের অপারেশন বাম পায়ে করার অভিযোগ৷ সময় নিয়ে রোগী না দেখা, বেসরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত ফি নেয়া, রোগীর মুত্যুর পরও তার চিকিৎসা চলছে দেখিয়ে বিল আদায়ের মতো অভিযোগও আছে৷ আর কমিশনের  লাভ পেকে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট, পছন্দের ব্র্যান্ডের ওষুধ প্রেসক্রাইব করার অভিযোগ তো আছেই৷ আছে মেডিকেল টেস্টের মান নিয়ে অভিযোগ৷ তিন জায়গায় তিন রকম টেস্টের রেজাল্ট আসার ঘটনাও আছে৷
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে রোগীপ্রতি মাত্র ৪৮ সেকেন্ড সময় দেন চিকিৎসকরা৷ ৬৭টি দেশের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, রোগীপ্রতি সময় দিতে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের অবস্থান সবার নীচে৷
কনজ্যুমারস অ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের দাবি আদায়ে এই ধর্মঘট অমানবিক এবং অন্যায়৷ ধর্মঘটের কারণে চিকিৎসা না পেয়ে কোনো রোগী যদি মারা যান তার দায় কে নেবে? তাদের বুঝতে হবে এটা ট্রাক চালক বা সাধারণ কোনো ব্যবসা নয়৷’’

তার কথা, ‘‘মানুষ যখন প্রতিকার পায় না, তখন ক্ষুব্ধ হয়ে বেআইনি কাজ করে৷ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা করলে তারা রোগীদের জিম্মি করে, ধর্মঘট করে মামলা প্রত্যাহার করায়, কোনো চিকিৎসককে আটক করলে একইভাবে তাকে ছাড়িয়ে নেয়৷ তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিকার চাইতে মানুষ থানায়, আদালতে যেতে পারবেন না? আর বিএমডিসি একটা অকার্যকর প্রতিষ্ঠান৷ তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না৷ তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?’’

সরকারের নতুন আইনের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের সুরক্ষা প্রয়োজন৷ কিন্তু নতুন আইনটি চিকিৎসক সুরক্ষা আইন হচ্ছে৷ যদিও নাম দেয়া হয়েছে রোগী ও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন৷’’

সমাধান কোথায়?
চিকিৎসকদের এমন ধর্মঘটকে বেআইনি ঘোষণার জন্য হাইকোকোর্টে একটি রিট শুনানির অপেক্ষায় আছে৷ ২০১৬ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘আদালত রুলও দিয়েছেন৷ কর্তব্য পালনকালে চিকিৎসক ও নার্সদের ধর্মঘট কেন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হবে না-এই মর্মে রুল দেয়া হয়৷’’
তিনি বলেন, ‘‘রোগী মারা গেলেই যেমন সেটা চিকিৎসকের অবহেলা নয়, আবার চিকিৎসকের অবহেলায়ও রোগী মারা যান৷ ফলে চিকিৎসায় অবহেলা আবার চিকিৎসকের ওপর হামলা দুইটিরই প্রতিকার প্রয়োজন৷ ফৌজদারী আইনে তো মামলা করা যায়৷ কিন্তু রোগীদের জিম্মি করে এর বিরুদ্ধে ধর্মঘট করলে তো আর সেটা এগোয় না৷ বিএমডিসি যদি দায়িত্ব পালন করতো, তাহলেও হতো৷ তারা যদি লাইসেন্স বাতিল করতো, তাহলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসতো৷’’
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)-র স্ট্যান্ডিং রিকগনিশন কমিটির চেয়ারম্যান ও স্বাচিপের সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, ‘‘আমরা তো রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতেই চাই৷ তবে চিকিৎসার পরিবেশ ভালো করতে পারলে রোগীদের সঙ্গে দূরত্ব কমবে৷ কে কেথায় চিকিৎসা নেবেন তার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে৷ এখন আউটডোরে একজন চিকিৎসককে ৫০ জন রোগী দেখতে হয়৷ তখন তিনি হয়তো রোগীদের প্রতি ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারেন না৷ আবার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে যদি পকেট থেকে টাকা দিতে হয়, তাহলে এটাও রোগীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে৷ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকরা একটা অংশ৷ পুরো ব্যবস্থাপনা তাদের হাতে নেই৷ কিন্তু দায় তাদের ওপরই পড়ে৷’’
তার কথা, ‘‘কোনো চিকিৎসক যদি ফৌজদারী অপরাধ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা করায় তো কোনো বাধা নেই৷ প্রতিকার পেতে যে কেউ মামলা করতে পারেন৷ আবার বিএমডিসিতেও অভিযোগ করতে পারেন৷ অভিযোগ প্রমাণ হলে আমরা চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলসহ আরো অনেক ব্যবস্থা নিই৷ আর সরকার নতুন একাটি আইন তৈরির শেষ পর্যায়ে আছে৷ সেটা হলে আমরা মনে হয় সেই আইনেও প্রতিকার পাওয়া যাবে৷’’

চিকিৎসায় অবহেলা, চিকিৎসকের ওপর হামলা- দুইটিরই প্রতিকার প্রয়োজন: অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ

তিনি মনে করেন, ‘‘সবার উপরে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা , হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা উন্নত করা অনেক জরুরি৷ সেটা হলে অনেক জটিলতা কমে যাবে৷ সরকার কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে৷ যেমন: ফি বেঁধে দেয়া, হাসপাতালগুলোর মান অনুযায়ী এ, বি, সি এরকম বিভিন্ন ক্যটাগরি করে দেয়ার কাজ চলছে৷ এগুলো হলে রোগীরা বুঝতে পারবেন যে তিনি কোথায় চিকিৎসা নেবেন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য