1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেশের ফুটবল পাতালে, সালাউদ্দিনের অহংকার আকাশে

সামীউর রহমান ঢাকা
৪ মে ২০২৩

ফুটবলের বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে৷ ফিফার সদস্য সংখ্যা ২১১, এর ভেতর অনেকগুলোই ঠিক সার্বভৌম দেশ নয় বরং অন্য কোনো দেশের অধীনস্থ দ্বীপ৷ এই ২১১ দলের ভেতর বাংলাদেশের অবস্থান ১৯২ তম৷

https://p.dw.com/p/4QsUS
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনছবি: Mosharraf Hossain Bhuban

বাংলাদেশ ফুটবল দল দেশের মাটিতেও হারে অপেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া সেশেলস দলের কাছে৷ ফুটবল ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তা আবু নাঈম সোহাগ ফিফার তদন্তে দুর্নীতিতে ধরা খেয়ে হয়েছেন নিষিদ্ধ৷ টাকার অভাবে অলিম্পিক বাছাই পর্বে পাঠানো যায় না দল৷ তবুও যেন গর্বের শেষ নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের৷ ক্ষমতার দম্ভে একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করেই চলেছেন সাবেক এই ফুটবল তারকা৷ তার চোখে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা অকার্যকর আর দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকরা সমাজের নিচু স্তর থেকে আসা যে কারণে তিনি তাদের ঢুকতে দিতে চান না বাফুফে ভবনে৷

এক সময়ে সালাউদ্দিন ছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় তারকা খেলোয়াড়৷ দেশজুড়ে লাখো তরুণ ছিল সালাউদ্দিনের ভক্ত৷ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন, ঢাকার ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন বড় দুই দল আবাহনী ও মোহামেডানের হয়ে৷ হংকংয়ের পেশাদার লিগেও খেলেছেন ক্যারোলিন হিল এফসির হয়ে৷ খেলোয়াড়ী জীবনের পর কোচ হিসেবেও সালাউদ্দিন সফল৷ ক্রীড়া প্রশাসনে পা রাখেন ২০০৩ সালে, বাফুফের সহ-সভাপতিই হিসেবে৷ ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল, বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন,টানা চতুর্থ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ৬৮ বছর বয়সী সালাউদ্দিন৷ ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করা সালাউদ্দিন বাফুফেতে প্রশ্রয় দিয়েছেন দুর্নীতিকে আর যারা তার কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সেই গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে করেছেন আপত্তিকর মন্তব্য৷

‘ফিফা আগে যা হচ্ছিল সেটাই অনুসরণ করছে’

১৪, এপ্রিল ২০২৩৷ দিনটি ছিল বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের ছুটির দিন৷ সেদিনই সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলে সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ পায় বাংলাদেশ৷ ফিফার তহবিল থেকে খরচের হিসাব বুঝিয়ে দিতে জাল দলিল ও তথ্য উপাত্ত সরবরাহের অভিযোগে ফিফা দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফের সেসময়কার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে৷ সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানাও করা হয়৷  ফিফার এই ঘোষণার আগে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন সোহাগ সহ বাফুফের আরও তিন কর্মকর্তা; জাবের বিন আনসারী, হাসান মাহমুদ, অনুপম সরকার ও তাদের আইনজীবী৷ এই ব্যপারে সালাউদ্দিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে ‘ আমি জানি না'৷ পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সালাউদ্দিন ব্যখ্যা করেন যে ফিফার গোপনীয়তার নিয়মের কারণেই তিনি সত্যিটা বলতে পারেননি৷ একই ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে সালাউদ্দিন বলে বসেন, ‘এটাই হচ্ছে নতুন ফিফা৷ আমি তিনটা ফিফাতে ( ফিফার নির্বাহী কমিটির অধীনে) কাজ করেছি, এরা (বর্তমান কমিটি) কিন্তু কোন উন্নয়নে নাই৷ তারা আগে যা হচ্ছিল সেটাই অনুসরণ করছে৷ শুধু যোগ করেছে অনুবর্তিতা (কমপ্লায়েন্স)৷ যেসব করা তারা বের করেছিল ব্ল্যাটার আর অন্যদেরএরা চেষ্টা করেছিল দুই বছরে একটা বিশ্বকাপ করতে, তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ তারপর একটা লিগ করতে চেয়েছিল, সেখানেও তারা ব্যর্থ হয়েছে৷ স্পোর্টিং সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এখানে আসছে; কমপ্লায়েন্স,কমপ্লায়েন্স, কমপ্লায়েন্স৷ কথায় কথায় কমপ্লায়েন্স৷ আমি এই ফিফা আর এএফসিতে মজা পাই না৷ আগে গেলে ফুটবলের আলাপ হত, ফুটবলে যাইতাম৷এখন এখানে গেলে খালি কথাবার্তা হয় কথাবার্তা হয় কথাবার্তা হয়৷ এখানে ফুটবলের চেয়ে বেশি এই ধরনের জিনিষগুলো'৷

‘আমাকে ঘাস কাটার মেশিন সম্পর্কে প্রশ্নেেরও উত্তর দিতে হয়েছে’

ব্যক্তি সালাউদ্দিন ছড়ি ঘোরান বাফুফের সব কর্মকাণ্ডে৷ এখানে তার ইচ্ছাই সব৷ কিন্তু ২০২৩ সালে এসে যে স্বেচ্ছাচারিতার এমন সুযোগ নেই, বিশেষ করে জাতিসংঘের চেয়েও সদস্য সংখ্যায় বড় সংগঠন ফিফাতে সেটা সালাউদ্দিনের বোঝার ক্ষমতাই যেন নেই৷ তার দৃষ্টিতে বাফুফের মত ফিফা এএফসি চলবে কোন রকম দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা ছাড়াই৷ একই ব্রিফিংয়ে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগও বিষেদগার করেন ফিফার বিরুদ্ধে, ‘মনে করেন, আমাদের আগের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান একটা ঘাসকাটার মেশিন কিনেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে৷ আমাকে জুরিখে গিয়ে উত্তর দিতে হয়েছে কিভাবে কেনা হয়েছিল, কোটেশন কয়টা নিয়েছিলা এটা অনুমোদন করেছে কে, পেমেন্ট প্রসিডিওর কি৷ সাধারণত পাঁচ বছরের হিসেব চায় তবে সঙ্গে প্যাঁচ লাগানো আছে৷ তারা চাইলে যত ইচ্ছা তত দিনের৷ পাঁচ বছর আগের একটা বিষয়, কি জানি আমি এটা সম্পর্কে৷ জাতীয় দল খেলতে গেসে, জার্সি কেনা হইসে এস্টাবলিশ কর এটা ফেয়ার প্রাইস৷ কি ভাবে করবা জানি না, চার তলা থেকে লাফ দাও দিয়ে জীবিত থাকতে হবে, তুমি কিভাবে জীবিত থাকবা জানি না৷' সালাউদ্দিন এবং আবু নাঈম সোহাগ, দুজনের কথাবার্তাতেই স্পষ্ট ফুটে ওঠে ফিফার কমপ্লায়েন্স নীতিমালা সম্পর্কে তাদের অশ্রদ্ধা৷ যার প্রমাণ মেলে শেষ পর্যন্ত ফিফার তদন্ত প্রতিবেদনে৷

ফিফার কমপ্লায়েন্স উপবিভাগ এর অনুসন্ধানী কক্ষকে  কন্ট্রোল রিস্ক গ্রুপ নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জানায় বাফুফের কাগজপত্র ও হিসেবে অসংগতি আছে৷ ফরেনসিক রিভিউ এর জন্য বিডিও (এলএলপি) নামের একটি নিরীক্ষা সংস্থাকে নিয়োগ দেয়া হয় যারা বাফুফের ১ জানুয়ারি ২০১৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ এই সময়ের ভেতর ফিফার তহবিল থেকে খরচের অনেক অসংগতি পায়৷ এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবু নাঈম সোহাগকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ফিফা৷ তার বিরুদ্ধে ফিফা ফরোয়ার্ড তহবিলের অপব্যবহার ও ফিফার তহবিল থেকে বাফুফের খরচের জাল দলিল দস্তাবেজ প্রমাণ হিসেবে দাখিল করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়াতেই এই শাস্তি৷

‘তার বাপের জুতা পরা ফটো পাঠাতে হবে’

সোহাগের অপরাধের তালিকাটা লম্বা৷ জাতীয় দলের জন্য ৩০ হাজার ২৭ মার্কিন ডলারের ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্রে যে তিন প্রতিষ্ঠানের নাম, তাদের অবস্থান পাশাপাশি এবং সবার দরপত্রেই একই বানান ভুল৷ এসব দেখে ফিফার বিশেষজ্ঞের উপলব্ধি, পরস্পরের যোগসাজশেই দেয়া হয়েছে এই সব দরপত্র৷ এছাড়া মেয়েদের কাপড়ের দোকানের কাছ থেকে ফুটবল কেনা, বেনামি ভুঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দেখানো, আমদানিকারকের লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমদানিকৃত পন্য ক্রয়, বিমান টিকিট ক্রয়ে এমন সব প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দেখানো যারা টিকেটের ব্যবসা করেই না করে মানবসম্পদ রপ্তানির ব্যবসা৷ সেই সঙ্গে ভুয়া দলিল দস্তাবেজ তৈরি, কোচদের বেতন একবার অ্যাকাউন্টে প্রেরণ দেখানো আবার নগদে প্রদান দেখানো সহ সন্দেহজনক অনেক লেনদেনই ফিফার তহবিল থেকে করেছেন সোহাগ৷ তবে এসব যে সোহাগ একা করবার সাহস করেননি সেটা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট৷ বাফুফেতে দুর্নীতিই মূলনীতি এবং কোন কমপ্লায়েন্সের বালাই নেই বলেই যে ফিফার কমপ্লায়েন্স নিয়ে বাফুফের শীর্ষ মহলের এত মাথাব্যথা৷

তাই তো সোহাগের নিষেধাজ্ঞা জারি হবার পরও সালাউদ্দিন ব্যস্ত ছিলেন তাকে বাঁচাতে, বারবার সাংবাদিকদের বলেন যে সোহাগ অন্যায়ের শিকার৷ ১৫ এপ্রিল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বলেন, ‘একটা খারাপ সংবাদের কারণে আজ আমরা সবাই একত্র হয়েছি৷ বাফুফে সাধারণ সম্পাদক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন৷ সোহাগের সঙ্গে রাতে কথা হয়েছে৷ তিনি মনে করেন তার উপর অবিচার হয়েছে, তিনি আদালতে যাবেন৷' দিন তিনেক পর বাফুফের সহসভাপতি ও ফিন্যান্স কমিটির প্রধান সালাম মুর্শেদীও ফিফার অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো দুর্নীতি হয়নি৷ আপনার এই শব্দ প্রত্যাহার করুন৷ ফিফা কোনো দুর্নীতির কথা বলেনি৷' অথচ তার পাশে বসেই সালাউদ্দিন জানান সোহাগকে বাফুফেতে আজীবন নিষিদ্ধ করার কথা৷ ফিফার রায়ে স্পষ্ট উল্লেখ আছে জালিয়াতি, তহবিল তছরূপ ও ক্ষমতার অপব্যবহার এর অপরাধসমূহ৷

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)-এর এক অনুষ্ঠানে কাজী সালাহউদ্দিন (সামনের সারির মাঝখানে)
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)-এর এক অনুষ্ঠানে কাজী সালাহউদ্দিন (ফাইল ফটো)ছবি: Mosharraf Hossain Bhuban

সোহাগের বিদায়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক পদে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাফুফেতে সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী ইমরান হোসেনকে৷ ধারণা করা হচ্ছে সালাউদ্দিনের তল্পিবাহক ইমরান মূলত শিখণ্ডি, অন্তরালে থেকে যাবেন দুর্নীতির কারিগরেরাই৷ বাফুফের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে সাংবাদিকদের লেখায়, প্রতিবেদনে৷ সম্প্রতি মেয়ে ফুটবলারদের অলিম্পিক প্রাক-বাছাই খেলতে মিয়ানমারে না পাঠানোর কারণ হিসেবে অর্থের অভাব উল্লেখ করেছিলেন বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সোহাগ৷ সরকারের কাছে ৯৩ লাখ টাকা চেয়ে আবেদন করেছিল বাফুফে, যেখানে মেয়েদের বাফুফে ভবন থেকে বিমানবন্দরে যাতায়াতের ভাড়া দেখানো হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা! এছাড়াও উচ্চ মূল্যের বিমান টিকিট সহ অনেক খাতেই বেহিসেবি খরচ দেখানো হয়েছিল, তাতেই বোঝা যায় বাফুফে কর্তাদের দুর্নীতির বহর কতটা লম্বা৷

২ মে ২০২৩ তারিখে, ফিফার শাস্তি, বাফুফের নিজস্ব তদন্ত এসব নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের আগে সভাপতি সালাউদ্দিন ও সহ-সভাপতি কাজি নাবিল নিজেদের মধ্যে আলাপে অত্যন্ত অশালীন ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন সাংবাদিকদের নিয়ে৷ সালাউদ্দিন নাবিলকে বলছিলেন, ‘জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে ফটো (ছবি) দিতে হবে, তাদের বাপ-মার৷' এরপর পাশ থেকে সালাম মুর্শেদী ও আতাউর রহমান মানিকের মধ্যে কেউ একজন কিছু বললে, প্রত্ত্যুতরে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাতে হবে জুতা পরা৷ ঠিক আছে (হাসি)! এটা হতে হবে মেন্ডেটরি৷ বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে৷' পাশে বসা নাবিলও কি যেন বলে সায় দিচ্ছিলেন এবং এক পর্যায়ে বলেন, ‘ হু স্টার্টেড ওয়্যারিং আন্ডারওয়্যার অ্যান্ড হু ডিড নট৷' সালাউদ্দিন পরে ক্ষমা চেয়েছেন, বলেছেন তিনি রসিকতা করছিলেন, ‘একটা নিউজ আমি দেখছি, যেখানে সাংবাদিকদের আঘাত করার জন্য একটা কথা বলেছি৷ প্রকৃত কথা হলো, আমি সাংবাদিকদের কষ্ট দেওয়ার জন্য বলিনি৷ আমি নাবিলের (কাজী নাবিল আহমেদ) সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে জোক করছিলাম৷ সেটা যে কেউ টেপ (রেকর্ড) করছিলেন, সেটা আমি জানি না৷ আমি এই কথায় যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, দুঃখ দিয়ে থাকি, তাহলে আমি খুবই দুঃখিত৷' যদিও এই ব্যখ্যা মোটেও সন্তোষজনক মনে হয়নি৷ বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সাংবাদিক সঙ্ঘের এশিয়া অঞ্চলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সনৎ বাবলা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির চেয়ারে বসে ওনার এ রকম কথা শুনে বিস্মিত হয়েছি৷ বাংলাদেশের ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ে ফিফার নিষেধাজ্ঞা এবং বাফুফের নানা জালিয়াতির খবর যখন সংবাদমাধ্যমে আসছে, তখন তিনি এটা নিতে পারছেন না৷ এ কারণে তিনি সাংবাদিকদের মা-বাবা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে শুরু করেছেন৷ এটা খুবই দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়৷‘ এরই মধ্যে বিএসপিএ থেকে সালাউদ্দিনের সম্মানজনক সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে এবং অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনগুলোও সালাউদ্দিনের এমন মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে তার পদত্যাগ দাবি করেছে৷ 

ক্রীড়া লেখক সমিতির অনুষ্ঠানে কাজি সালাহউদ্দিন ও সাকিব আল হাসান (ফাইল (ফাইল ফটো)
ক্রীড়া লেখক সমিতির অনুষ্ঠানে কাজি সালাহউদ্দিন ও সাকিব আল হাসান (ফাইল (ফাইল ফটো)ছবি: Mosharraf Hossain Bhuban

সাফল্য বা সম্পদ সাধারণত ইন্ধন জোগায় অহংকারের৷ সালাউদ্দিনের সাফল্য বা সম্পদ কিছুই নেই৷ তার আমলে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল দলের র‍্যাংকিং নেমেছিল ১৯৬তে, বর্তমানে যা ১৯২৷ কোচের বেতন না দেয়াতে নিয়মিতই দেয়া লাগে জরিমানা৷ দেশের জাতীয় ফুটবল দল নিজের মাঠে হেরে যায় মাঝি বা জেলেদের নিয়ে গড়া সিশেলস দলের কাছে৷ তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর একবারও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ, অথচ বড় বড় বুলি শুনিয়েছিলেন ২০২২ বিশ্বকাপে খেলার৷ প্রকাশ্যে এসেছে তার প্রতিষ্ঠানে দূর্নীতি আর আর্থিক অনিয়মের খবর৷ তহবিলেও নেই পর্যাপ্ত অর্থ, হাত পাততে হচ্ছে বিভিন্ন সংস্থার কাছে আর জমে আছে পুরানো দেনাও৷ তবুও সালাউদ্দিনের গর্বের যেন শেষ নেই৷ ফুটবল গিয়ে ঠেকেছে পাতালে আর অহংকারে সালাউদ্দিনের মাথা যেন ঠেকেছে আকাশে৷