1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতি আর যুদ্ধাপরাধ ডুবিয়েছে চারদলীয় জোটকে

ফাহমিদা সুলতানা৩০ ডিসেম্বর ২০০৮

বাংলাদেশের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট অভাবনীয় বিজয় লাভ করেছে৷ মহাজোট এরকম নিরঙ্কুশ ভাবে বিজয় লাভ করতে পারে, এতোটা বোধহয় মহাজোট প্রার্থীরা নিজেরাও আগে ভাবেন নি৷

https://p.dw.com/p/GP3H
ভোটকেন্দ্রে খালেদা জিয়া, তবে এবার চূড়ান্ত বিজয়ের হাসি হাসতে পারলেন না তিনি ...ছবি: Mustafiz Mamun

অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া জোট সরকারের সব প্রতাপশালী মন্ত্রী-এমপিরাই হেরেছেন৷ জামায়াতের আমীর মাওলানা নিজামীসহ ৩৮ জন প্রার্থীর সবাই হেরেছেন ১ জন ছাড়া৷ এমনকি বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিত জেলাগুলোতেও মহাজোটের প্রর্থীরাই বিজয়ী হয়েছেন৷ ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের বিজয়ের সময়ও এমন অবস্থা দেখা যায়নি৷

Lebensmittel Krise Verteilung von Reis in Bangladesch
যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় খালেদা জিয়ার শ্লোগান ছিল 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও', কিন্তু জোট সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস তুলেছিল৷ছবি: AP

কিন্তু চারদলীয় জোটের এই ভরাডুবির পেছনের কারণ কি ? শুধুই কি দূর্নীতি আর দুঃশাসন ? বাংলাদেশে তো যে সরকার ক্ষমতায় আসে, ধীরে ধীরে সেই সরকারেই বাসা বাঁধে দূর্নীতি৷ সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি৷ পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, যুদ্ধ অপরাধীদের ইস্যুটি এবারের নির্বাচনে অনেক বড় ব্যাপার হয়ে দেখা দিয়েছে৷

প্রথমেই আসা যাক দূর্নীতি আর দুঃশাসন প্রসঙ্গে৷ চারদলীয় জোট বা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে নেতাদের দুঃশাসন নিয়ে এরই মধ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছেন৷ তারা বলছেন, রাজনৈতিক নেতারা দলের স্বার্থে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে যে দুর্ব্যাবহার করেছেন, অবমূল্যায়ন করেছেন, দুঃশাসন চালিয়েছেন, তাতেই সাধারণ মানুষের মনে জন্ম দিয়েছে ক্ষোভ৷ তাদের কথায় মানুষ এবার পরিবর্তন দেখতে চেয়েছে৷

দ্বিতীয় আরেকটি কারণ হচ্ছে এবারের নির্বাচনে নতুন অনেক ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং তাদের অনেকেই প্রথমবারের মত তালিকাভুক্ত হয়ে ভোট দিয়েছেন৷ তারা সত্যিকার অর্থেই দেশে পরিবর্তন দেখতে চেয়েছেন৷

যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় খালেদা জিয়ার শ্লোগান ছিল 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও', কিন্তু জোট সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস তুলেছিল৷

সবচেয়ে বড় ইস্যুটি হচ্ছে, চারদলীয় জোটে যুদ্ধ অপরাধীদের উপস্থিতি৷ এর আগে যুদ্ধ অপরাধীদের নিয়ে বার বারই কথা উঠেছে৷ কিন্তু তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ৩ মাসের মেয়াদকালিন সময়ের মধ্যে৷

যুদ্ধ অপরাধীদের নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবারের মত আলোচনা, নিন্দার ঝড় ছাড়াও শক্তিশালী অবস্থান থেকে শাস্তির দাবী আর কখোনো এভাবে করা হয়নি৷ এই বিষয়গুলো মানুষের সচেতনতাকে নাড়া দিয়েছে৷ মানুষ পরিবর্তন চেয়েছে৷

যে আশায় বাংলাদেশের মানুষ মহাজোটকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে, এখন তা ধরে রাখা এবং ১৪ কোটি মানুষের আকাঙ্খা পূরণের দায়িত্ব মহাজোটের৷