দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের পুনর্বহালের আবেদন নাকচ
১৯ মে ২০২২কমিশনের মহাপরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মঙ্গলবার শরীফকে জানানো হয়েছে, তার আবেদনটি ‘বিবেচিত হয়নি'৷
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বলেন, ‘‘তার আবেদন গ্রহণ হয়নি, সেটা তাকে কমিশন থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে৷’’
২০০৮ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুযায়ী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক৷ সে সময় বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়৷
শরীফকে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার এবং ৫৪(২) বিধি বাতিলের দাবিতে তার সহকর্মীরা দুদকের প্রধান কার্যালয়সহ কমিশনের অন্যান্য দপ্তরে মানববন্ধন করেন, যা নজিরবিহীন৷
এরপর চাকরি ফেতর চেয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করেন শরীফ৷ দুর্নীতি দমন কমিশন চাকরি বিধিমালা-২০০৮ এর ৪৮ বিধি অনুযায়ী অপসারণের আদেশ পুনঃনিরীক্ষা করে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার করার আর্জি জানানো হয় সেখানে৷
এর জবাবে মঙ্গলবার দুদকের চিঠিতে বলা হয়, শরীফ উদ্দিনের চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার করে পুনর্বহালের আবেদনটি ‘‘পর্যালোচনান্তে কমিশন কর্তৃক বিবেচিত হয়নি৷’’
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে শরীফকে চাকরি থেকে অপসারণের বিষয়ে কমিশনের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন দুদক সচিব৷
সেখানে বলা হয়, শরীফের বিরুদ্ধে ‘শৃঙ্খলা বহির্ভূত' কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও দপ্তর থেকে নানা অভিযোগ পেয়েছে দুদক৷ তিনি দুদকের নির্দেশিকা অনুসরণ না করে ‘নিজের খেয়ালখুশি মতো' কাজ করতেন৷ মানুষকে নোটিস বা টেলিফোনের মাধ্যমে ডেকে এনে তিনি ‘হয়রানি' করতেন৷
দুদক বলছে, অনুসন্ধান ও তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ বা নো ডেবিট' করার প্রয়োজন হলে শরীফ ‘আইন মানতেন না এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতেন না'৷ কক্সবাজারে একজন সার্ভেয়ারের কাছ থেকে ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা জব্দ করে তা কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে এক বছর ৪ মাস তিনি নিজের হেফাজতে রাখেন৷
প্রভাব খাটিয়ে ভাই ও আত্মীয়কে চাকরি দেওয়া এবং চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে পটুয়াখালীতে যাওয়ার পর ‘চাঁদাবাজি' করার অভিযোগের কথাও বলেছে দুদক৷
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গত ২১ ফেব্রুয়ারি শরীফ সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে দাবি করেন, যাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলার সুপারিশ করেছেন, তাদের অভিযোগেই তাকে কমিশন থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে ‘যাচাই-বাছাই না করে'৷ অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ‘আপস' করলে এতকিছু ‘হত না'৷
চাকরি হারানোর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ‘হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি' পেয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন শরীফ উদ্দিন৷
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘‘আমার কাছে কমিশনের ওই চিঠির একটি কপি এসেছে৷ যেহেতু আমার বিষয়টি হাই কোর্টে বিচারাধীন, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করাই সমীচীন৷’’
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)