1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লির তদন্তে কি ভাঙবেন অনুব্রত?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৭ মার্চ ২০২৩

অনুব্রত মণ্ডলকে এবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। কয়লা ও গরু পাচার মামলায় তার একাধিক ঘনিষ্ঠ রাজধানীতে বন্দি। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতের দিল্লি যাত্রা নিয়ে টালবাহানা চলছিল কয়েক সপ্তাহ ধরে।

https://p.dw.com/p/4OM5t
অনুব্রত মণ্ডলের কাটআউট, নীচে লেখা ‘চোর’
অনুব্রত মণ্ডলের কাটআউট, নীচে লেখা ‘চোর’ছবি: Payel Samanta/DW

আইনি জটিলতায় এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। সেই জট কেটে যাওয়ার পর তৃণমূল নেতার রাজধানী সফর নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

মঙ্গলবার নজর ছিল কলকাতার দক্ষিণে জোকা ইএসআই হাসপাতালের দিকে। সেখানেই অনুব্রতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। এখানকার চিকিৎসকেরা তাকে ফিট ঘোষণা করার পরই চূড়ান্ত হয়ে যায়, দোলযাত্রার দিনই তাকে দিল্লি যেতে হবে। সন্ধের বিমানের টিকিট থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি, দিল্লির উড়ানে সব ব্যবস্থাই সেরে রেখেছিল ইডি।

এদিন সকাল পৌনে সাতটায় অনুব্রতকে আসানসোল সংশোধনাগার থেকে সড়কপথে জোকায় নিয়ে আসা হয়। সকাল ১১টার কিছু পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়। ঘণ্টা তিনেক এই পর্ব চলার পর তৃণমূল নেতাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা বিমানবন্দরে। এখানকার ভিআইপি লাউঞ্জে অপেক্ষা করার সময় অসুস্থ বোধ করার কথা বলেন তিনি। শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার নিতে হয়।

আসানসোল থেকে আসার পথে বর্ধমান শহর লাগোয়া শক্তিগড়ে প্রাতরাশ সারেন অনুব্রত। সেখানে বীরভূমের তৃণমূল নেতা কৃপাময় ঘোষ ও অনুব্রত কন্যা সুকন্যার গাড়িচালক তুফান মিদ্দে একই টেবিলে বসে খাওয়াদাওয়া করেন, কথা বলেন। কীভাবে পুলিশের উপস্থিতিতে এক বন্দি এভাবে পরিচিতদের সঙ্গে প্রাতরাশ করলেন তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, "পুলিশমন্ত্রীর গোপন পরামর্শ পৌঁছে দেয়া হয়েছে পুলিশের নজরদারিতে।" রাজ্যের মন্ত্ৰী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের মন্তব্য, "কথা বলতে বাধা নেই বলেই কথা বলেছেন।"

‘দিল্লিতে তিনি সেখানে ভেঙে পড়তে পারেন’

গরু পাচার মামলায় গত ১১ আগস্ট অনুব্রতকে বাড়ি থেকে পাকড়াও করে সিবিআই। তাদের চার্জশিটে নাম আছে নেতার। আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে গত নভেম্বরে ইডি গ্রেপ্তার করে তাকে। কেন্দ্রীয় সংস্থা দাপুটে নেতাকে বার বার জেরা করেছে ইডি। সূত্রের খবর, তদন্তে সহযোগিতা করেছেন না অনুব্রত।

ইতিমধ্যে এই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক ও অনুব্রতের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। গত জুনে সিবিআই পাকড়াও করে সায়গলকে, তার বিপুল সম্পদের হদিস মেলে। সায়গল ও এনামুল এখন রয়েছে দিল্লির তিহার জেলে। এই দুজনের কাছ থেকে তদন্তকারীরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সায়গলের তত্ত্বাবধানে গরু পাচারের টাকা হাতবদল হত। প্রভাবশালীদের কাছেও টাকা পৌঁছত বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে আরো তথ্যের খোঁজে সায়গল ও এনামুলের সঙ্গে কেষ্টকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। তার আগে ১৪ দিনের জন্য তাকে নিজেদের হেফাজতে চাইতে পারে ইডি।

তৃণমূল নেতার দিল্লি যাত্রাকে ইতিবাচক বলে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, "পঞ্চায়েত ভোটের কথা ভেবে তৃণমূল অনুব্রতকে এখানেই রাখতে চেয়েছিল। এবার উনি দিল্লিতে গিয়ে লস্যি খান!" রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, "বিচারে যেটা সত্যি তা বেরিয়ে আসুক। তবে এজেন্সিরাজ শেষ কথা নয়, আসল বিচার করবে মানুষ।"

দিল্লির রাউজ এভিনিউ আদালতে অনুব্রতকে পেশ করতে বিলম্ব হওয়ায় সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন সেখানকার বিচারক। বুধবার তৃণমূল নেতাকে পেশ করবে ইডি। এই পর্বে কি তদন্ত আরো অগ্রসর হবে? সাবেক পুলিশকর্তা নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, "অনুব্রতের সরকারি পদ নেই। তার ক্ষমতার পিছনে কোনো প্রভাবশালী থাকতে পারেন। বাংলার মতো সুরক্ষা কবচ দিল্লিতে থাকবে না। তিনি সেখানে ভেঙে পড়তে পারেন, নতুন নাম পাওয়া যেতে পারে।"