দিল্লিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ ও বিজেপির জবাব
মোদী সরকারের ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদে অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখালো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস৷ সংবাদ সম্মেলন করে এর জবাব দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী৷
যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ
দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো এবং তৃণমূলের অঘোষিত দুই নম্বর নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্ষোভে পশ্চিমবঙ্গ থেকে 'বঞ্চিত' মানুষদের নিয়ে এসেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে এই মানুষরা একশ দিনের কাজ, বাড়ি-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বঞ্চিতদের যাবতীয় লিখিত অভিযোগও মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে জমা দিতে চায় তৃণমূল।
ইডি-র সমন অগ্রাহ্য
এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডি মঙ্গলবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। কিন্তু অভিষেক তা অগ্রাহ্য করে দিল্লি এসে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন। কলকাতা হাইকোর্টে বিষয়টি উঠেছিল। ইডির আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিষেক বুধবার এলেও চলবে কিন্তু অভিষেকের আইনজীবী জানিয়েছেন, ইডি ১০ বছরের পুরনো হিসাব চাইছে। তা দিতে গেলে কিছুটা সময় লাগবে। গত পাঁচ মাসে অভিষেককে চারবার ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। দুইবার তিনি গেছেন। দুইবার যাননি।
পিঠে পোস্টার
যন্তর মন্তরে তৃণমূলের বিক্ষোভে প্রচুর মানুষ পিঠে পোস্টার লাগিয়ে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্র অর্থ দেয়া বন্ধ করায় তারা কাজ পাচ্ছেন না। অনেক সুবিধা পাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
ছিলেন প্রচুর নারীও
তৃণমূলের বিক্ষোভে প্রচুর নারীকেও দেখা গেছে। তারা স্লোগান দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন এবং পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
অভিষেক যা বললেন
অভিষেক বলেছেন, ''দিল্লিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ আটকাতে এত নিরাপত্তা রক্ষীকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ মণিপুর জ্বলছে। সেখানে কেন্দ্রের নজর নেই। মানুষ ওদের ক্ষমতায় এনেছে। ওরা আপনাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। এবার ইভিএমের বোতাম টিপে আপনারা তার জবাব দিন।'' অভিষেক দাবি করেছেন, ''আড়াই হাজার জব কার্ড হোল্ডারের প্রাপ্য টাকা তারা নিজেদের বেতন থেকে মেটাবেন।''
বিক্ষোভস্থলে আধা সামরিক বাহিনী
তৃণমূলের বিক্ষোভস্থলে প্রচুর আধা সামরিক বাহিনী ও দাঙ্গারোধী পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছিল। ছিল চারদিকে পুলিশের ব্যারিকেড।
ছিল প্রচুর পুলিশও
ছিল দিল্লি পুলিশের প্রচুর কনস্টেবল এবং অফিসার। জলকামানও রাখা হয়েছিল কিছুটা দূরে। একবার সভাস্থল থেকে বাইরে গেলে আর কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছিল না। তৃণমূলের এই বিক্ষোভ শুরু হয় বেলা একটায়। শেষ হয় পাঁচটায়।
বিজেপি-র জবাব
তৃণমূলের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আগে বিজেপি সদরদফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকা পাঠায়, তা দিয়ে তৃণমূল ব্যাপক দুর্নীতি করে।
ভোটের আগে
আর কয়েক মাস পরেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে দুই পক্ষই এখন প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। অভিষেকের দিল্লি এসে এই যে আন্দোলন এবং বিজেপি যেভাবে তার মোকাবিলা করছে, তার পিছনেও একই নির্বাচনী রাজনীতি আছে বলে মনে করে হাচ্ছে।